মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকে ভূলুন্ঠিত করে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামী ও কট্টরপন্থী ইসলামী দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে একটি ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্ত চলছে।

এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আওয়ামীলীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যেসব রাজনৈতিক শক্তি রয়েছে তাদেরকে বাদ দিয়ে অনির্বাচিত-অসাংবিধানিক ইউনুস সরকার বিএনপিকে তাদের সাথে টেনে নেয়ার কূটকৌশলে নেমেছে।

বাংলাদেশের কথিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. ইউনুস সে মিশন সফল করতেই লন্ডন সফর করছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

কারণ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগকে সরকারি ঘোষণায় নিষিদ্ধ করার পর অপর বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপিকে কাছে টানতে পারলেই বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র ঘোষণা করার পথটি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

আগামী জুলাই মাসে এনসিপি-জামায়াতসহ ইসলামী দলগুলোর সমন্বয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ‘ জুলাই অভ্যূত্থান’ বা জুলাই বিপ্লব’ এর ঘোষণার মধ্য দিয়ে সেটি ষোলোকলায় পূর্ণ করতে চাইছে ইউনুস সরকার।

এর আগে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় কথা বললেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বা দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ‘ বিরোধে না জড়ানোর’ পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

গত ৭ জুন ঈদুল আজহার সন্ধ্যায় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সৌজন্য সাক্ষাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার রাজনৈতিক সহকর্মীদের এই পরামর্শ দেন।

সাক্ষাৎকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কাছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণের বিষয়ে বেগম জিয়া ইতিবাচক অবস্থান ব্যক্ত করেন।

আগামী ১৩ জুন লন্ডনের একটি হোটেলে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের সাক্ষাতের কথা রয়েছে।

অথচ এর আগে তারেক জিয়া নানাভাবেই তীব্র সমালোচনা করেছেন ইউনুস সরকারের।

এবং তিনি কোন ধরনের তালবাহানা না করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানান। পাশাপাশি সে অনুযায়ী দলের নেতাকর্মীদেরকে সর্বাত্বক প্রস্তুতি নিতে বলেন।

কিন্ত ঠিক প্রায় একই সময়ে জাপানে সফররত ড. ইউনুস একটি দল ( বিএনপি) এর সমালোচনা করে ঘোষণা করেন জুনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেয়া হবে।

এমনকি তিনি দেশে ফেরার পরেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠকেও তার সেই ঘোষণাতে অটল থাকেন।

আর তাতে ইন্ধন যোগায় জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনগুলো।

কিন্তু দেশের অন্য রাজনৈতিক দলগুলো আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন ঘোষণার ব্যাপারে তাদের দাবিটি তুলে ধরেন।

এ নিয়ে সরকার-এনসিপি-জামাতসহ অন্য ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে বর্তমানে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি’র বিরোধ চরমে ওঠে।

এমনতরো পরিস্থিতির মধ্যে ইউনুস সরকার আরেকটি দাবার ঘুটি চাল দেয়।

গত ৪ জুন দেশের অভিজাত ও ব্যয়বহুল এলাকা গুলশানে দেড় বিঘার ওপর প্রাসদোপম একটি বাড়ির কাগজপত্র বেগম খালেদা জিয়ার কাছে হস্তান্তর করে বর্তমান সরকার।

এতদিন এই বাড়ির নামজারি সংক্রান্ত দলিলপত্র খালেদা জিয়ার কাছে ছিলনা। এই বাড়িটি নাকি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন সরকার তাঁকে দিয়েছিল।

অপরদিকে সেনানিবাসের মধ্যে মইনুল রোডেও একটি প্রাসাদোপম বাড়ি দেয়া হয়েছিল বেগম জিয়াকে।

সেই বাড়িতে অর্ধাৎ সেনানিবাসের ভেতওে বসেই বেগম জিয়া তার সব রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন।

কিন্তু সেনানিবাসে রাজনৈতিক কর্মকান্ড কঠোরভাবে নিষিদ্ধ বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে।

অথচ সে কাজটিই করে যাচ্ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়া। তবে বিগত আওয়ামীলীগ সরকার সেই বাড়িটির লীজ বাতিল করে সেখানে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের জন্য বহুতল বিশিষ্ট অঅবাসিক ভবন নির্মান কওে তাদেরকে বরাদ্দ দেন।

তবে সাম্প্রতিককালে বিএনপি’র সাথে ড. ইউনুস সরকার ও তার সরকারের অন্যতম সহযোগী জামাতে ইসলামী, কথিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে গঠিত নতুন রাজণৈতিক দল এনসিপি’র বিরোধ চরমে ওঠে।

সাধারণ জনগণও ফুঁসতে থাকে অবৈধ ইউনুস সরকারের নানা অপকর্মে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে থাকে।

অধিকাংশ মানুষ ও রাজনৈতিক দল এমনকি গতবছর জুলাই-আগষ্টে কথিত আন্দোলনে অংশ নেয়া মাঠের নেতাকর্মীরাও বুঝতে পারেন যে তারা চরম ধোঁকাবাজির শিকার হয়েছেন।

কথিত ছাত্র-গণ আন্দোলনের নামে যে দেশি বিদেশী আন্তর্জাতিক চক্রান্তের শিকার হয়ে একটি জঙ্গী ক্যু হয়েছে তা বুঝে সেসব লোকজনই এই সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠছেন।

বিএনপির নেতারাও দেখছেন যে, এই ইউনুস সরকার তাদের মতামতের কোন তোয়াক্কা না করে একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াতে ইসলামীর কথামতো কাজ করছে।

প্রশাসনের বিভিন্ন পদে জামায়াতের নির্দেশমতো লোক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষনাও করা হয়েছে জামায়াতের পরামর্শ অনুযায়ী।

বাংলাদেশে অন্য যেসব ইসলামী দল রয়েছে এরা সবাই মূলত জামায়াতের নেতৃত্বই মেনে চলবে এমন একটি সিদ্ধান্ত গত বছর কথিত আগষ্ট অভ্যুত্থানের পরেই হয়েছিল। যা বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়েছিল।

এমনতরো পরিস্থিতিতে বিএনপি দেখছে যে নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি’র রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়া ক্রমেই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।

তাই তারা সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছিল বার বার। তবে ইউনুস সরকারও ষড়যন্ত্রের খেলায় কম যায়না।

তারা বিএনপিকে বাগে আনতে অন্য পথ ধরেছে। গুলশানের মত অভিজাত জায়গায় খালেদা জিয়াকে তার বাড়িতে গিয়ে দেড় বিঘা জমির ওপর বিশাল প্রাসোদপম বাড়ির নথিপত্র বুঝিয়ে দিয়েছে।

তারপর মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে খালেদা জিয়া বর্তমান ইউনুস সরকারের সাথে বিরোধে না জড়ানোর পরামর্শ দেন।

অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বাংলাট্রিবিউনের সাথে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্তত পাঁচজন সদস্যের সঙ্গে ঈদের দিনের সাক্ষাতের বিষয়ে তাদের কেউ কেউ উদ্ধৃত হতে সরাসরি মানা করেন।

তবে উল্লেখ করেন যে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ পাওয়ার পর তারেক রহমান বিভিন্ন সোর্সে মতামত গ্রহণ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দূরত্ব বা বিরোধে না যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘ম্যাডাম জিয়া প্রধান উপদেষ্টার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে। তার এমন অবস্থান স্বাভাবিক।’ ‘সহনীয় পর্যায়ে তো অবশ্যই আসতে হবে’।

জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আজকে যথারীতি আমাদের মহাসচিব আমাদের দলের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন।

আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির অবস্থান এটাই যে আমরা এই সাক্ষাৎকে পজিটিভভাবে দেখছি।

আমাদের সঙ্গে সরকারের কোনও দ্বন্দ্ব নাই। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাস্তবতার নিরিখে নির্বাচনের বিষয়ে মত দিয়েছেন।’

‘৫৪ বছরে যার ওপর ভিত্তি করে আমাদের দেশ দাঁড়িয়ে আছে, সেই নিরিখে তিনি বলেছেন।

সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশের রাজনৈতিক স্বার্থ, দেশের গণতন্ত্রের, জনগণের স্বার্থের নিরিখে মতামত দিয়েছেন।

তিনি ইতোমধ্যে বলেছেন, সবার আগে দেশ।’ ‘বাংলাদেশের স্বার্থের জন্য আমাদের দলের নেতা এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক থেকে সেটাই আশা করছি আমরা।

আমরা মনে করি, দুজনের আলাপের মধ্য দিয়ে ইতিবাচক অবস্থান উঠে আসবে’, উল্লেখ করেন জাহিদ হোসেন।

সোমবার (৯ জুন) রাতে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের অনুষ্ঠিত বৈঠকে সদস্যদের কাছে মতামত জানতে চান তারেক রহমান।

স্থায়ী কমিটির সূত্রগুলো জানায়, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সবার মতামত জানতে চাইলে সদস্যরা মোটামুটি ইতিবাচক মত দেন।

একজন সদস্যের ভাষ্য, ‘মোটামুটি সর্বসম্মতভাবে সাক্ষাতের বিষয়ে মত দেওয়া হয়েছে। কেউ না করে নাই।’

১৩ জুন অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে তারেক রহমানের সাক্ষাতে কেবল নির্বাচনই নয়, দেশের আরও অন্যান্য বিষয়ও থাকবে বলে জানান একজন সদস্য।

গত ১০ জুন গুলশানে সাংবাদিকদের সামনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উল্লেখ করেন, গত সোমবার রাতে আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিংও হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেছেন। ওনাকে (তারেক রহমান) ফরমালি দাওয়াত করা হয়েছে মিটিংয়ের জন্যে।

১৩ তারিখ ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত লন্ডন টাইমে এই সময়টা দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এই মিটিংয়ের জন্য আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটির পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে।

আমরা প্রত্যাশা করছি-এটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট কাটাতে পজিটিভ ভূমিকা রাখতে পারে।’

এদিকে জুলাই ঘোষণাপত্র টার্গেট করে জঙ্গিগোষ্ঠীর ‘বাংলাদেশ দখল’ ষড়যন্ত্র চলছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে কথিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল এমন সদস্যদের দখলে থাকা স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার হচ্ছে।

২০২৪ সালের জুলাই-আগষ্ট মাসে সংঘটিত ভয়াবহ সহিংসতা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

এ সহিংসতা ছিল রাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিপর্যস্তকরণ এবং দেশব্যাপী নিরাপত্তা অস্থিতিশীল করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।

ঘটনার পেছনে ছিল উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্রভিত্তিক প্রস্তুতি, যার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর অস্ত্র হিসেবে উঠে এসেছে স্নাইপার রাইফেল।

বিশ্বস্ত সূত্রগুলো বলছে, ঢাকা শহরেই অন্তত ২০০টি স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করা হয়েছিল জুলাইয়ের ওই পরিকল্পিত সহিংসতায়।

এসব অস্ত্র রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মজুত করে রাখা হয়েছিল এবং এখনো অনেক অস্ত্র গোপনে রয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই অস্ত্রগুলোর সন্ধান ও নিয়ন্ত্রণ এখন সেনাবাহিনীর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিভিন্ন তদন্তে উঠে এসেছে, এই অস্ত্র সরবরাহ ও ব্যবহারের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিল অন্তত পাঁচজন শীর্ষ সংগঠক: -সারজিসআলম,হাসানাত,মাহফুজ,আসিফ মাহমুদ,নাহিদ ও আখতার।

এছাড়া রাজধানী ঢাকা শহরে উত্তর সিটির কথিত প্রশাসক এজাজ এখনো এই গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি বিশাল অস্ত্র ভান্ডারের দেখভাল করছে, এমন তথ্যও মিলেছে একাধিক সূত্র থেকে।

এই সংগঠকেরা জুলাই ঘোষণা বাস্তবায়নে একটি কেন্দ্রীয় ঘোষণার মাধ্যমে রাজধানীসহ সারাদেশ দখলের ছক কষেছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, স্নাইপার ও একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দমন করে রাজধানীর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা।

রাজধানীর যেসব এলাকায় এই ভয়াবহ অস্ত্র মজুত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: রামপুরা মাদ্রাসা, ভাটারা থানার পাশে একটি মাদ্রাসা, যাত্রাবাড়ির হেফাজত-নিয়ন্ত্রিত কয়েকটি মাদ্রাসা।

মোহাম্মদপুর,মিরপুর,পল্টন,উত্তরা এই এলাকাগুলোতে অবস্থিত কয়েকটি কওমী মাদ্রাসা সরাসরি অস্ত্র ভান্ডার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়াও শিবির-নিয়ন্ত্রিত কোচিং সেন্টার যা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের আড়ালে গঠিত গোপন ঘাঁটি।

এসব স্থানেও অস্ত্র গোপন রেখে তা নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

প্রসঙ্গত: স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার একটি বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়াতে বহুল প্রচারিত হয়েছে।

যাতে তিনি বলেছেন- ৫ আগষ্ট যদি সরকার পতন না হতো তাহলে তাদের সশস্ত্র প্রস্তুতি ছিল সরকারের বিরুদ্ধে, প্রশাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আক্রমন করার।

তার মানে দাঁড়াচ্ছে- তাদের কাছে নানা সোর্স থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র গোলাবারুদ ছিল এবং এখনো রয়েছে।

সেই কথিত ছাত্র গণ আন্দোলনের সময়ে সারা বাংলাদেশের কয়েকশো থানার অস্ত্র গোলাবারুদ লুট করেছে তারা। সেগুলোও উদ্ধার হয়নি।

তাছাড়া সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে কন্টেইনারবাহী জাহাজে করে বিপুল পরিমান অস্ত্র, গোলাবারুদ প্রবেশ করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।

কারণ এসব জাহাজে করে কোন কন্টেইনাওে কি আসছে তা কাষ্টমসসহ অন্য কেউ যাতে কোন ধরনের মাথা না ঘামায় সেজন্য সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ থেকে নির্দেশ এসেছে।

অপরদিকে বিএনপি’র তারেক রহমানসহ তার দলের কয়েকজন নেতা ও জামায়াতে ইসলামীর কয়েকজন নেতাতো বিদেশ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র অবৈধভাবে আমদানী, ভারতের সেভেন সিস্টারস এলাকার বিদ্রোহীদের কাছে পৌঁছানোর ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত।

২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এ্যভেনিউতে শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আওয়ামীলীগের সমাবেশে উপর্যুপরি গ্রেনেড শেখ হাসিনার প্রাননাশের জন্য গুলিবর্ষণের পরিকল্পনার মাষ্টারমাইন্ড হিসেবে তারেক রহমান জড়িত ছিলেন বলেও নানা সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। আওয়ামীলীগ নেতাদের অভিযোগও তাই।

ফলে বর্তমান এ পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকা তারেক রহমানকে দেশের ক্ষমতার কোন লোভনীয় টোপ দেয়া হলে তাতে যে তিনি তার আগের কঠোর অবস্থান ( বর্তমান সরকার বিরোধীতা ও ডিসেম্বরেই নির্বাচন দিতে হবে) থেকে সওে আসবেন না তা হলফ করে বলা যায়না।

বরং এমনওতো হতে পারে যে- আওয়ামীলীগ নেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামীলীগের পরিক্ষীত ত্যাগী নেতা কর্মীদেরকে কিভাবে বিনাশ করা যায় সে ষড়যন্ত্রও হতে পারে লন্ডনে ‘তারেক-ইউনুস’ বৈঠকে।

তাতে করে বিএনপি ও ইউনুস গংয়ের কমন শত্রু আওয়ামীলীগকে চরমভাবে শায়েস্তা করা যাবে।

কারণ শান্তিতে নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. ইউনুস তো গত জুলাই-আগষ্ট ইসলামী ক্যু এর প্রধান ‘ মেটিকুলাইস ডিজাইনার’।

অপরদিকে তারেক রহমানও বাংলাদেশ ও ভারত বিরোধী ষড়যন্ত্রের অন্যতম মাষ্টারমাইন্ড। ফলে এই দুই ষড়যন্ত্রকারির বৈঠক থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির বাংলাদেশের জন্য যে কি দূর্ভোগ বয়ে আনছে সেটাই দেখার বিষয়।

# রাকীব হুসেইন, লেখক ও রাজনৈতিক গবেষক।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *