ঢাকা: মুহাম্মদ ইউনূস জমানায় জানমালের নিরাপত্তা কতটুকু নিশ্চিত? এই দশ মাসে তার প্রত্যেকটি নমুনা পেয়েছে এই বাঙালি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যকলাপ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
নিজেদের কাজ নির্বিঘ্নে করে যেতে পারছে তারা। কোথাও কোন বাধা পাচ্ছে না।
ঠিক যেমন ২০০১ থেকে ২০০৫ এ দেশবাসী দেখেছে। তখনও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে, এখনও তাই পেয়ে যাচ্ছে।
একটা রাষ্ট্রে জঙ্গিবাদের আবাদ তখনই বাড়ে যখন অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক আইনগত, সামাজিক উপাদানগুলো জঙ্গিদের পক্ষে থাকে।
এটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
শেখ হাসিনা জঙ্গি দমন করেছেন, রাষ্ট্রীয় চুরি জোচ্চুরি বন্ধ করেছেন, নিরাপত্তা দিয়েছেন। আর এখন আওয়ামী লীগের ভয়ে তটস্থ মুহাম্মদ ইউনূস ।
উল্লেখ করতেই হয় এখানে যে,
হিযবুত-তাহরির, আনসার-আল-ইসলাম (যা আনসারুল্লাহ বাংলা টিম-এবিটি নামেও পরিচিত), হরকাতুল জিহাদ-আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি-বি), জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকিয়া, আল্লাহর দল, ইমাম মাহমুদ কাফেলা গ্রুপ, হামজা ব্রিগেড ইত্যাদি নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর প্রতি রাষ্ট্রের মনোভাবে বোঝা যায় ইউনূস সরকার জঙ্গিবাদের ওপর ভর করে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ছিল। শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির সফলতা ছিল অসামান্য।
কিন্তু ৫ আগস্টের পরে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। ডাটা উল্টে গেছে।
মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের লুটপাটে নিঃস্ব জাতি
বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত হিসাবে বাংলাদেশে শীর্ষ জঙ্গির সংখ্যা ১১৭ জন।এরমধ্যে ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছে ৪৮ জন। এছাড়া আরও ২৬৪ জঙ্গি জামিনে মুক্তি পেয়েছে। আরো তো আছেই।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের নিরাপত্তা, দেশের রাজনীতির নিরাপত্তার স্বার্থে নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
আসলে কার হাতে দেশ নিরাপদ তা তো দেখছে জনগণ।
বুধবার লন্ডনের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক থিঙ্কট্যাংক চ্যাথাম হাউসে আলাপচারিতায় এক প্রশ্নের জবাবে এই কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, যে জুলাই সনদ হচ্ছে, সমালোচকেরা বলবেন, অনেক রাজনৈতিক দলকে এর বাইরে রাখা হচ্ছে, যারা এর সঙ্গে একমত নয়, যেমন আওয়ামী লীগ; তাদের জন্য কোনো জায়গা রাখছেন না।
সুতরাং, মানুষকে কোনো বিকল্প দেওয়া হচ্ছে না। তারা বলছে, এটা একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়। এটা ঐকমত্য সম্পর্কে অনেক কথায় সুন্দরভাবে মোড়ানো বাংলাদেশের জন্য একটি কর্তৃত্ববাদী পদক্ষেপ।
জবাবে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘হ্যাঁ। ঠিক আছে, এ নিয়েও বিতর্ক আছে। বিতর্ক হলো আওয়ামী লীগ কি রাজনৈতিক দল?
যদি তারা রাস্তায় এভাবে তরুণদের হত্যা করতে পারে, এভাবে মানুষকে গুম করতে পারে, এভাবে টাকা চুরি করতে পারে, আমরা কি তখনো এটিকে রাজনৈতিক দল বলব? সুতরাং এটি একটি বিতর্ক। এটি কোনো সিদ্ধান্ত নয়।’
ইউনূস বলেন, ‘ আমরা নিরাপদ বোধ করি না। দেশের নিরাপত্তা, দেশের রাজনীতির নিরাপত্তার জন্য জাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
এটুকুই আমরা করেছি। আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।’
তবে নির্দিষ্ট সময়টা কতটুকু, তা আর বলতে পারেননি ইউনূস।
রাজাকারদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে কারাগার থেকে। এইভাবে নিরাপত্তা প্রদান করছেন ইউনূস?
মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে আনসার আল ইসলামের শীর্ষ নেতা মুফতি জসিম উদ্দিন রাহমানী, তার সহযোগী মুফতি হারুন ইজহার, আবু হাসান ওসামা ও মাহমুদ হাসান গুনভি এবং জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার নেতা ডা. রাফাত চৌধুরী প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
জামিনে মুক্তির পরে তাদেরকে সেলিব্রিটি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
অথচ বাংলাদেশের গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা, নারীর স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, মাজার, ধর্মীয় সংখ্যালঘু স্বাধীনতা, ভাস্কর্য, সব হুমকিতে পড়ে আছে।
দোষী সাব্যস্ত এবং বিচারাধীন অন্যান্য সন্ত্রাসী সন্দেহভাজনদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। দেশবাসী বলুক নিরাপত্তা কার হাতে সুরক্ষিত?