ঢাকা: মুহাম্মদ ইউনূস, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুখে যা বলেন কাজ করেন ঠিক তার উল্টো। অথবা এভাবে বলা যায়, যা কাজ করেন, বলেন উল্টো।
মাইন্ড রিড ক্ষমতা তাঁর অসাধারণ। এই কারণেই দেশটাকে ধ্বংস করে বিদেশে গিয়ে মধুর মধুর কথা শোনান। তবে বিদেশে যে তাঁর কোনো সম্মান নেই তা তো বোঝাই গেলো।
একটার পর একটা মিথ্যা বলে চলেছেন দেশবাসীকে।
দেশবাসীকে জানানো হয়েছে, ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করতে প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন সফর করছেন।
কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। মূলত তিনি কতদিন ক্ষমতায় থাকবেন এবং বিএনপি কতদিন অনুমোদন করবে, এই ফয়সালা করতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডন সফরে গিয়েছেন।
একটি রক্তাক্ত ষড়যন্ত্রের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় বসেছেন ইউনূস।
যুক্তরাজ্য সফরে মুহাম্মদ ইউনূস একেবারে অচ্ছুৎ ছিলেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, স্টারমার তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতে সম্মত হননি।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমার সঙ্গে তার সরাসরি কোনও কথা হয়নি।’
ফিনান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য সরকারের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে স্টারমারের ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের কোনও পরিকল্পনা নেই।
এবং কেন তিনি বৈঠকে রাজি নন, এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তাঁরা ।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, বিগত শাসনামলে ‘চুরি’ হওয়া অর্থ খুঁজে বের করতে বাংলাদেশের নতুন সরকারকে সহায়তা করার বিষয়ে যুক্তরাজ্যের নৈতিকভাবে বাধ্যবাধকতা উপলব্ধি করা উচিত।
তবে স্টারমার পাত্তাই দিলেন না অবৈধ সরকার প্রধানকে।
এই নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রশ্ন করা হয়। তবে তাঁর উত্তর ছিলো ডিপ্লোম্যাটিক। তিনি হার মানবেন না। সরল মুখ করে তিনি বোঝাতে চান প্রশ্নকর্তাকে যে তিনি নার্ভাস নন।
যুক্তরাজ্যে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের চার দিনের সফরকে ‘সরকারি সফর’ বলা হলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার কেন তাঁকে সাক্ষাৎ দিলেন না, এই প্রশ্ন করা হয় বিবিসির তরফ থেকে।
তাঁর সাবলীল উত্তর, ‘ আমরা উনার (কিয়ার স্টারমারের) সঙ্গে দেখা করতে খুবই আগ্রহী ছিলাম। হয়ত তিনি ব্যস্ত ছিলেন বা অন্য কোনো কারণে তা সম্ভব হয়নি।
তবে এতে করে আমার জন্য একটা বড় সুযোগও তৈরি হয়েছে। এখন যেহেতু তিনি ব্যস্ত, আমি তাকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
আমরা একসঙ্গে সময় কাটাতে পারব, যা ঘটছে তা দেখাতে পারব, এবং তিনি পুরো পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পারবেন’।
কী দেখাতে চান ইউনূস? রক্তাক্ত ষড়যন্ত্রের দেশটাকে দেখিয়ে কী বলবেন, যা করেছে এতসব ধ্বংস?
তিনি মনে করছেন তাঁর সাথে দেখা না করে স্টারমার অনেক বড় সুযোগ হারিয়েছেন।
বলেন, ‘কোনো কারণে একটা সুযোগ হারাল, আমি জানি না’।
স্বাভাবিকভাবেই এই প্রসঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকের প্রসঙ্গ আসে। ইউনূস বলেন,
‘না, আমি দেখা করব না। কারণ এটা একটি আইনি প্রক্রিয়া। আমি সেই প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে চাই না। প্রক্রিয়াটা যেন চলতে পারে’।
উল্লেখযোগ্য যে, স্টারমারের সাথে শেখ হাসিনার বোনঝি টিউলিপ সিদ্দিকের বন্ধুত্ব রয়েছে।
স্টার্মারের যখন প্রধানমন্ত্রী হবার কোন সম্ভাবনাই ছিল না, তখন থেকে তিনি টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে একসাথে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন।
ব্রিটিশ রাজনীতিতে স্টার্মার এবং টিউলিপ ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ২০১৬ সালে টিউলিপের অনুরোধে স্টার্মার ঢাকায় আসেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেন, ও সিলেটসহ অনেক জায়গা দেখতে যান।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, ও অপপ্রচার করে ইউনুস, এবং বাকি ষড়যন্ত্রকারীরা ব্রিটিশ সরকারকে রীতিমতো খেপিয়ে দিয়েছে।
আর সে কারণেই স্টার্মার ইউনুসের সাথে দেখা করতে আগ্রহী ছিলেন না।