সুনামগঞ্জ: টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ার এবং এর আশপাশের এলাকায় পর্যটকবাহী হাউসবোট চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন।
রবিবার সুনামগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকা প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও পরিবেশ-প্রতিবেশের ক্ষতি রোধকল্পে হাওরের ওয়াচ টাওয়ার ও আশপাশের এলাকায় পর্যটকবাহী হাউসবোটের যাতায়াত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হলো।
একই সাথে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর যাবতীয় কার্যকলাপ থেকে সকলকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
“এছাড়া সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্পট ভ্রমণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন, সুনামগঞ্জ থেকে বিভিন্ন সময়ে জারিকৃত নির্দেশনাসমূহ আবশ্যিক প্রতিপালনের জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
উল্লেখযোগ্য যে, ওয়াচ টাওয়ারে ডিরেক্ট হাউসবোট ভিড়বে না এই প্রস্তাব হাউসবোট মালিকরাই গত বছর দিয়েছিল।
এর কারণ হিজল বন যাতে ধ্বংস না হয় এবং লোকাল কমিউনিটির ইনকাম সোর্স যাতে সঠিক থাকে।
আর এতদিন পর এটাকে নির্দেশনা হিসেবে জারি করা হলো।
তবে একটা বিষয় হচ্ছে, নির্দেশনা কার্যকর করতে হলে ওয়াচ টাওয়ার এলাকায় জেলা প্রশাসন তরফ থেকে কর্মী নিয়োগ করতে হবে।
জেলা প্রশাসনের নিদের্শনা রয়েছে:
উচ্চশব্দে গান-বাজনা করা বা শোনা যাবে না।
হাওরের পানিতে অজৈব বা প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য/বর্জ্য ফেলা যাবে না।
মাছ ধরা, শিকার বা পাখির ডিম সংগ্রহ করা যাবে না।
পাখিদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে কোনো ধরনের বিঘ্ন ঘটানো যাবে না।
ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু বা রাসায়নিক ব্যবহার করা যাবে না।
লাইফ জ্যাকেট পরিধান করতে হবে।
প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার থেকে বিরত করতে হবে। ইত্যাদি।
সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গুয়ার হাওর – যা শুধু প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্য্য নয়, বরং দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রও।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে, অনেক পর্যটক সেখানে ঘুরতে গিয়ে নিজেরা সঙ্গে আনা চিপসের প্যাকেটসহ নানা ধরনের ময়লা-আবর্জনা হাওরের জলে ফেলে পরিবেশ দূষণ করছেন।
এভাবে চলতে থাকলে ধ্বংস হয়ে যাবে এই অঞ্চলের পর্যটন সম্ভাবনা।