ঢাকা: এনসিপি হাসনাত বনাম দুদক? এনসিপি-র নেতাদের কী তাহলে টেনশনে রাতের ঘুম উড়েছে? অন্তরালে কী?
আসলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন এক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এনসিপির উত্থান- পতনের গল্প।
দুর্নীতি দমন কমিশনের অন্দরে গুঞ্জন উঠেছে, এই দলের অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং সাবেক সমন্বয়কারীদের হঠাৎ শতকোটি টাকার মালিক হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তদন্তের আওতায় আসতে পারে।
ভয় পেলেন নাকি হাসনাত?
এমন তো দেখা গেছে যে, এই পাতি নেতাদের কেউ কেউ সামান্য চাকরি, টিউশনি করে জীবন চালাতো, কেউ কেউ বাসায় ফিরতে রিকশাভাড়ার টাকাও জোগাড় করতে হিমশিম খেত।
অথচ এখন সেইসব নেতারাই দামী গাড়ি ছাড়া রাস্তায় নামেন না। বিষয় কী?
প্রাথমিক পর্যবেক্ষণেও নাকি সন্দেহজনক ব্যাংক হিসাবের বিষয়টি ধরা পড়েছে!
মূলত দুদক যদি নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু করে, তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরও একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় উন্মোচিত হতে পারে।
হাসনাত কী ভয়ে উল্টোপাল্টা বলা শুরু করলেন নাকি?
মূলত দুদক যদি নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু করে, তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরও একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় উন্মোচিত হতে পারে।
এবার শুরু হয়েছে দুদক বনাম এনসিপির যুদ্ধ?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহর মঙ্গলবারের একটি পোস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের চোখে পড়েছে।
পোস্টটিতে যাচাই-বাছাই ছাড়াই কমিশনের মহাপরিচালকসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেছেন বলে দুদক দাবি করেছে।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন : স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা’ শিরোনামে পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ‘আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও সেটার ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে এক লাখ টাকা দিতে হবে।
সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছে থেকে এই টাকা চাওয়া হয়েছে দুদকের ডিজি আকতার আর তার ডিডি পরিচয়ে।
মাহমুদা মিতুকে বলা হয় আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা-পয়সার অভাব থাকার কথা না। আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।’
তিনি লেখেন, ‘দুদকের সর্বনিম্ন রেট নাকি এক লাখ টাকা। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আকতার আবার ফোন দিয়ে জানতে চান টাকা দেবে কি না?
টাকা না দিলে নাকি খবর করে ছেড়ে দেওয়া হবে। রেড ক্রিসেন্টে মাহমুদা মিতু যোগ দিয়েছেন ৫ আগস্টের পরে। দুদক এখন তদন্ত করছে আওয়ামী লীগের সময়ের দুর্নীতি নিয়ে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘অথচ হাস্যকরভাবে আওয়ামী আমলের কর্মকর্তাদের নাম না দিয়ে তখনকার দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এখনকার লোকজনের ওপর।
এখানে বড় অঙ্কের টাকার লেনদেনের সমূহ সম্ভাবনা আছে। কিছু না করাদের কাছে থেকেই যদি এক লাখ করে নেয়, আওয়ামী লীগ আমলের কর্মকর্তাদের থেকে তাহলে কত করে নিয়েছে?’
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘দুদকের এসব কাজকারবার এই প্রথম না। শেখ হাসিনার আমলে খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের বহু নেতাকে এরা হয়রানি করেছে।
অথচ আওয়ামী লীগের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে এরা কিছুই বলেনি। আমরা আশা করেছিলাম, ৫ আগস্টের পর এদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে।
কিন্তু আসেনি। বরং এরা এখন চা খাওয়ার জন্য এক লাখ করে টাকা চাওয়া শুরু করেছে। মাহমুদা মিতু সাহস করে ভিডিও করে রেখেছেন, অন্যায় ঘুস দেন নাই। কিন্তু কত সাধারণ মানুষ এদের এই চায়ের বিল দিতে বাধ্য হয়েছে জানা নেই।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার- মাহমুদা মিতু কেন, যদি আমার নামেও এক পয়সা দুর্নীতির অভিযোগ আসে, সেটা মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিন।
কাউকে ফোন করারও দরকার নেই, দুর্নীতি পেলেই সেগুলো প্রকাশ করে মামলা করে দেন। আইনের হাতে তুলে দেন। তা না করে নিরীহ লোকজনের ওপরে এই চাঁদাবাজি কেন করছেন?
কেন চা খাওয়ার বিল চান, কেন টাকা না দিলে হুমকি দেন? ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ চাই।’
হাসনাত বলেন, ‘শেখ হাসিনার করে যাওয়া দুর্নীতির পথে যেন আর কেউ না যেতে পারে সেজন্য দুদককেও আমরা নতুন রূপে দেখতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু নতুন বাংলাদেশেও দুদক সেই পুরোনো পথেই হাঁটা শুরু করেছে। আমলাতন্ত্র আবারও বিষদাঁত নিয়ে কামড় বসাতে হাজির হয়েছে।
এই বিষদাঁত ভাঙতে না পারলে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন হেরে যাবে, আমরাও হেরে যাবো। আমরা দুদকের এই দুর্নীতির বিচার চাই। আমলাদের এক লাখ টাকার চা খাওয়ানোর জন্যই কি জুলাইতে বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল?’