চট্টগ্রাম হিল ট্র্যাক্টস-এর আদিবাসী জনগণের আন্তর্জাতিক সংগঠন GAIPCHT দাবি করেছে যে, ১৯ জুন ২০২৫ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামের ৬৮টি গ্রাম এবং ১০টি উপজেলায় ব্যাপক সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে।

এই অভিযান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সহায়তা করার কৌশলের অংশ।

রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ধর্মীয় ভাষা ব্যবহার করে শরণার্থীদের নিয়োগ বৃদ্ধি করছে এবং মূলত বান্দরবান জেলার আরাকান সীমান্তবর্তী এলাকায় সক্রিয় রয়েছে।

GAIPCHT-এর সঞ্চয় চাকমা বলেন, “এই সামরিক অভিযানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি বিদ্রোহমূলক পরিবেশ তৈরি করছে, যাতে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। কিন্তু এর প্রকৃত শিকার হচ্ছে এখানকার আদিবাসী জনগণ।”

এই অভিযানে অন্তত ২৩ জন আদিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়—রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার উত্তর বি ব্লক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং খাগড়াছড়ির জগন্নাথপাড়া UNICEF স্কুল- সেনাবাহিনী দখল করে রেখেছে, যার ফলে আদিবাসী শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এছাড়া যৌন হয়রানির অভিযোগও উঠেছে। ২৭ জুন ভোর ৪টায় খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার সাইংগুলিপাড়ায় ৫৮ বছর বয়সী এক বিধবা নারী চুসেই মারমার বাড়িতে সেনাবাহিনী অভিযান চালায়।

তারা তাঁর ১৪ বছর বয়সী নাতনি কায়ু মারমাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

এই অভিযানে অংশ নেওয়া সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন; বাঘাইছড়ি জোনের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাসুদ রানা, ১৭তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান, রাঙামাটি সদর জোনের ৬০তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনায়েদ হোসেন, দিঘিলানা জোনের মেজর রায়হান এবং খাগড়াছড়ি জোনের মেজর আর্শিন সুমন।

GAIPCHT ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে ভুক্তভোগী আদিবাসীদের কথা শোনেন এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এই চিরুনি অভিযান বন্ধ করতে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে এবং রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন দেওয়ার মাধ্যমে যেন আদিবাসীদের ক্ষতিগ্রস্ত না করা হয়- সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *