ঢাকা: শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পরই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে চালানো হয়েছিল হামলা। সেদিনই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল সঙ্গীতশিল্পী রাহুল আনন্দের বাড়ি।

লুটপাট করা হয় শিল্পীর বাড়িতেও। দেশে শিল্প, সংস্কৃতি এগুলো ইসলামী মৌলবাদীদের চোখের বিষ। বাংলাদেশকে মূর্তি, ভাস্কর্য, হিন্দু, শিল্প বিহীন করে তালিবান বানানোর প্রস্তুতি চলছে।

তবে একটি বিষয় হচ্ছে কোটা আন্দোলন নিয়ে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়ে ঢাকার রবীন্দ্রসরোবরে গান গেয়েছিলেন রাহুল।

এভাবে বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন না জেনেই যে এই আন্দোলন কারা পরিচালিত করছে!

তিনিও জানতেন না সেই আন্দোলনের জয়ের পরেই সর্বহারা হবেন রাহুল। পুড়ে ছাই হয়ে যাবে সবকিছু, বউ-ছেলে নিয়ে কার্যত পথে বসেন রাহুল আনন্দ।

অবশেষে একবুক হতাশা নিয়ে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় গানের দল জলের গান-এর ভোকাল রাহুল আনন্দ দেশ ছেড়েছেন।

৩০ জুন ছিল তাঁর জন্মদিন।

ফেসবুকে তিনি লিখেছেন:

“বছর ঘুরে জন্মদিনে মাকে মনে পড়ে…গত বছর জন্মদিনে দেশ থেকে দূরে ছিলাম… এবারও…!

তাই মাতৃভূমি-কে মনে পড়ে…

আমি বাংলা মায়ের ছেলে – বাংলায় গান গাই… কথা কই… স্বপ্ন দেখি বাংলায়…

সকলের ভালোবাসা-আদর-দয়া ও দোয়া- আশীর্বাদ ও শুভকামনা মাথা পেতে নিলাম।

আমি অত্যন্ত ক্ষুদ্র এক মানুষ – স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা, সবার এই ভালোবাসার মান যেনো রাখতে পারি।

সবার ভালো হোক… পৃথিবীতে শান্তি নামুক…যুদ্ধ গুলো থেমে যাক… আমরা সবাই একে অন্যের হাত ধরে আরো সুন্দরের পথে হাঁটি…

ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা…”

শিল্প, শিল্পীদের থাকতে দেয়া হবে না এই দেশে। মু্ক্ত চিন্তা করলেই তাদের খেদানো হবে। কারণ এখন জঙ্গী শাসন চলছে।

যে দেশে রাহুল আনন্দের মত আপাদমস্তক শিল্পীকে পালিয়ে যেতে হয়, প্রাণরক্ষায় আশ্রয় নিতে হয় সুদূর ফ্রান্সে, বিষয়টা গভীরভাবে চিন্তা করার মতো।

রাহুল আনন্দ চোখের সামনে সারাজীবন ধরে তিলেতিলে গড়া সবকিছুকে পুড়তে দেখেছেন। কেমন করে তিনি সহ্য করবেন এমন তাণ্ডব?

এভাবে বহু মানুষের ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে ছাত্র আন্দোলনের নামে। সব ষড়যন্ত্র।

শুধু কী রাহুলের সংগীত উপকরণগুলো পুড়েছে? পুড়েছে বাংলাদেশ ও বাঙালির সহস্র বছরের সাংস্কৃতিক সত্তা।

সব বড় বড় মেধা, কবি, সাহিত্যিক, মুক্ত চিন্তার মানুষ, সনাতনীরা পালাতে বাধ্য হচ্ছে। বাংলাদেশে শুধু পড়ে থাকবে ক্যাকটাস।

বাড়িটিকে স্টুডিও হিসেবেও ব্যবহার করতেন তারা। ঢাকায় এসে বাড়িটিতে ঘুরতে গিয়েছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *