চট্টগ্রাম: বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য বহু বিদেশি বিনিয়োগকারী তৈরি হয়ে আছেন। এই বিষয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী এই কথা জানান। তবে এটি খুব শীঘ্রই হচ্ছে না সুবিধার অভাবে। সুযোগ হচ্ছে না তাড়াতাড়ি।

এদিন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে দুপুরে নগরীর হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে বিনিয়োগের কথাগুলো বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে যারা ব্যবসা করেন, তারা অনেক চ্যালেঞ্জ ফেস করে ব্যবসা করেন। আমরা প্রবলেমগুলো সলভ করার চেষ্টা করছি। আনফরচুনেটলি গ্যাস একটা বড় সমস্যা। সাপ্লাইয়ে হিউজ প্রবলেম। এই গ্যাস সাপ্লাই নিয়ে অনেক কথাবার্তা চলছে। গতকাল এনার্জি অ্যাডভাইজার বলেছেন, পাওয়ার জেনারেশনে গ্যাস সাপ্লাই কমিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে বাড়াবেন। আমার মনে হয়, এটাই যথেষ্ঠ না, আমাদের আরও অনেককিছু করতে হবে।’

‘আমার কাছে গতকালও চাইনিজ ইনভেস্টর এসেছে। আরও তিনজন চাইনিজ ইনভেস্টর বাংলাদেশে আসার কথা বলেছেন। উনাদের প্রত্যাশা হচ্ছে যে, আমি উনাদের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট সাইন করবো আর ছয় থেকে বারো মাসের মধ্যে উনারা কারখানা চালু করবেন। এখন গ্যাস, ইলেকট্রিসিটি, রাস্তা- এসবের ব্যবস্থা এর মধ্যে করে দেয়ার তো অপরচুনিটি আমার কাছে নাই। আমার কাছে ইনভেস্টর রেডি, কিন্তু আমার অপরচুনিটি রেডি না আনফরচুনেটলি। আমাদের যত দ্রুত সম্ভব, এই প্রবলেমগুলো কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে হবে।’

আশিক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের মূলনীতি হলো, আমাদের দেশে বিশ্বের সেরা পরিচালিত বন্দর থাকতে হবে। আমাদের তো আসলে ৪৪টা বন্দর করার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের হয়তো ৩টা, ৫টা, ৭টা- এ কয়টা পোর্টের মধ্যে আমাদের থাকতে হবে। আমাদের যেহেতু জায়গা কম। তবে আমাদের মাস্টাপ্ল্যান আছে যে, আমরা সেভেন পয়েন্ট এইট মিলিয়ন টিইউসের দিকে চলে যাব, ৫-৭ বছরের মধ্যে, যদি আমাদের সবগুলো প্রজেক্ট সাকসেসফুল হয়, তাহলে আমরা শ্রীলঙ্কার কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছাব। যেহেতু ল্যান্ড লিমিটেড, যেহেতু আমাদের অপশনস লিমিটেড, তাহলে আমাদের বিশ্বের মধ্যে মোর অ্যাফেক্টিভ ও বেস্ট ম্যানেজমেন্ট পোর্ট গড়ে তুলতে হবে। তাহলে আমাদের ঠিকভাবে প্রতিযোগিতা যেন করতে পারি, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’

‘সেজন্য যারা বেস্ট প্র্যাকটিস অন্য জায়গায় করছে, তাদের আমরা নিয়ে আসতে পারি। একইসাথে আমরা আমাদের লোকাল বিজনেসকেও সেই সার্ভিসটা দিতে পারব। অনেকসময় একটা কমপ্লেইন আসে যে, আমাদের পোর্ট থেকে এক্সপোর্টের অর্ডার ক্লায়েন্টকে ডেলিভার করতে যে সময় লাগে, ভিয়েতনাম তার চেয়ে অনেক দ্রুততার সাথে দিয়ে দেয়। সুতরাং আমাদের ভাবতে হবে যে, ফ্যাক্টরির দরজা থেকে বের হয়ে পণ্য আমরা কত তাড়াতাড়ি কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে পারবো। অনেক বিদেশি আছেন, যারা মাল্টিপল পোর্টের সঙ্গে বিজনেস করেন, তারা সবসময় বলেন যে, আমাদের পোর্ট আপ টু দ্যা মার্ক নয়।’

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, বে টার্মিনাল প্রকল্পের দুটি টার্মিনালে বিদেশি দুটি কোম্পানি ২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। বে টার্মিনাল ২০৩০ সালে চালুর আশা করা হচ্ছে। সেখানে ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।

আশিক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের এফডিআই নাম্বারটা কিন্তু খুবই ছোট। আমাদের জেনুইন এফডিআই যেটাকে আমরা বলি যে ইকুইটি, ইকুইটি হিসেবে যে নম্বরটা ঢোকে, সেই নম্বর প্রতিবছরই আমাদের ৪০০, ৫০০, ৬০০, ৭০০ মিলিয়নের বেশি আসে না। তো এই একটা প্রজেক্টে যদি আমাদের ৮০০ মিলিয়ন ডলারের এফডিআই আসে এবং এপিএমের মতো একটা ভালো কোম্পানি থাকে, সেটা আমাদের দেশের ইকোনমির জন্য এবং ওভারঅল আমাদের ফাইনান্সিয়াল হেলথের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সরকার থেকে চেষ্টা করছি যে, আমাদের লং টার্ম ভিশন বা অ্যাম্বিশনের সঙ্গে এটা অ্যালাইনড।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *