চট্টগ্রাম: রাখাইন করিডোর বাংলাদেশের জন্য এক অনিবার্য নিরাপত্তা সংকট। সম্প্রতি বাংলাদেশে একটি প্রশ্নবিদ্ধ, অগণতান্ত্রিক সরকার, কোনো জাতীয় সংলাপ, সাংবিধানিক ম্যান্ডেট ছাড়াই রাখাইন করিডোর ইস্যুতে অগ্রসর হচ্ছে। এমন একটি সিদ্ধান্তের বৈধতা ও রাজনৈতিক স্বচ্ছতা নিয়ে দেশজুড়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে কোনোরূপ আলোচনায় না গিয়ে এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ বলে বিবেচিত হতে পারে।
এদিকে, মানবিক করিডোর’ বিষয়ে সতর্ক পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ।
এই করিডোরের বিষয়ে সব তথ্য স্পষ্ট না হলে এক পা এগিয়ে যাওয়া উচিত হবে না বলে মত দিয়েছেন তিনি। বলেন, করিডোরের পুরো নিয়ন্ত্রণও বাংলাদেশের হাতে থাকা দরকার।
“না হলে কোনো অবস্থায় এটার দিকে যাওয়া উচিত হবে না। এটা একটা ফাঁদ হিসেবে দেখা দেবে, পরে আমাদের গলায় ফাঁস হিসেবে পড়ে যাবে। সুতরাং আমাদের সতর্ক হতে হবে।”
ফয়েজ আহমদ বলেন, “একটা করিডোরের প্রশ্ন চলে এল। এই করিডোরটা হলে আমরা রোহিঙ্গাদের এই করিডোর দিয়ে ফেরত পাঠাতে পারব, এরকম একটা ধারণা মানুষের মনে এল। আমিও মনে করি যে এটা হয়ত হতে পারে। যদি সেরকম কিছু করা যায়, তাহলে তো খারাপ না।”কিন্তু এখানেই তো শেষ নয়। করিডোর নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে, যেগুলোর উত্তরও পাওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।
ফয়েজ আহমদ বলেন, “করিডোরটা কে চালাবে, কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, কী আসা-যাওয়া করবে? বলা হচ্ছে, মানবিক করিডোর, নিশ্চিত করবে কে? সুতরাং এটা নিয়ে যখন কথাবার্তা হচ্ছে, আমি তখন বলছি একটা কথাই যে–পূর্ণ তথ্য আমাদের কাছে থাকবে। কোনো তথ্যই আমাদের কাছে গোপন করা হবে না।”
ফয়েজ আহমদ বলেন, “ত্রাণ কখন যাবে, কখন যাবে না, কে যাবে, কে যাবে না এবং যে কোনো সময় আমরা এটা বন্ধ করে দিতে পারি অস্থায়ীভাবে বা স্থায়ীভাবে, সেটা থাকতে হবে।
“সেই ক্ষমতা আমাদের হাতে পুরোপুরি থাকলে এবং আমরা যদি নিশ্চিত হই যে আমাদের সেই শক্তি আছে, যেই নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে দেওয়া হল, সেটা আমরা ব্যবহার করতে পারব, সেরকম আমাদের নিজেদের উপর আত্মবিশ্বাস থাকে”।
এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। দেশের জনগণকে অন্ধকারে রেখে, কোনো বৈধতা ছাড়া এ ধরনের সিদ্ধান্ত দেশের স্বার্থবিরোধী।
ইতিহাস সাক্ষ্য রাখবে—কে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে আর কে তা বিকিয়ে দিয়েছে। এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হলে আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে। দেশের স্বাধীনতা, ভূখণ্ডিক অখণ্ডতা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তার জন্য সবাইকে সজাগ হয়ে যেতে হবে।