ঢাকা: নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক প্রেরণা হিসেবে যে সব মূল্যবোধ ও স্বপ্ন যুদ্ধরত বাঙালিকে তাড়িত করেছে ’৭২-এর সংবিধানে তা মূর্ত হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা বাংলাদেশকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত রাখবার জন্য নৃশংসতম গণহত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ, নির্যাতন ও জনপদ ধ্বংসসহ যাবতীয় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে।

তাদের এই নৃশংসতার প্রধান দোসর ছিল জামাতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলাম নামক উগ্র মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের দল।

আর বর্তমান সমাজে বিশৃঙ্খলের পিছনে এই মাজার সাহেবের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তিনি সমন্বয়কদের পিছে কলকাঠি নাড়েন এবং সমন্বয়করা তাঁর প্রেসক্রিপশনে চলে যা দেশের জন্য বিপজ্জনক।

ফরহাদের কথাবার্তার স্টাইল ভিন্ন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কেন নতুন সংবিধান রচনার বদলে সংস্কারের পথে এগোলেন- এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কবি ফরহাদ মজহার।

বাহাত্তরের সংবিধান সংস্কার করে রেখে দেওয়ার কথা যেসব মানুষ বলেন, তাদের চিন্তা ‘অত্যন্ত ক্ষতিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

এই সংবিধান তাঁর পছন্দ নয়।

শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ‘জুলাই নেটওয়ার্ক’ আয়োজিত ‘সংবিধানের ফাঁদ—সংবিধান ও গণসার্বভৌমত্ব নিয়ে জরুরি বয়ান’ শীর্ষক শহীদ আবু সাঈদ-ওয়াসিম স্মারক বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘যারা বলেন ৭২ এর সংবিধান সংস্কার করা যায়, তাদের সঙ্গে আমি একমত নই। তাদের চিন্তা অত্যন্ত ক্ষতিকর। তারা মূলত দিল্লির আধিপত্য ও ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি মানে নতুন করে জনগণের অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করা, যেখানে ফ্যাসিস্ট শক্তি আর টিকতে পারবে না।’

যারা ৭২ সালের সংবিধান লিখেছে, তারা পাকিস্তানি শাসনের জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান থেকে ফিরে এসে তারাই সেই সংবিধান লিখে দিয়েছেন। এটা কেন পবিত্র হবে? কারণ দিল্লি লিখে দিয়েছে? স্বাধীনতার জন্য যে যুদ্ধ হয়েছিল, তা এই সংবিধান প্রণয়নের জন্য হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘৭১ সালে যুদ্ধ হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণার জন্য, যেখানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার ছিল। সেখানে সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা বা বাঙালি জাতীয়তাবাদ ছিল না। অথচ এই সংবিধান চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

গণঅভ্যুত্থানের পরও জনগণকে বাদ দিয়ে পুরনো প্রশাসন, পুলিশ, আদালত ও সেনাবাহিনীকে বহাল রাখা হয়েছে।’
ফরহাদ মাজহার বলেন, ‘ছাত্ররা চেয়েছিল নতুন জুলাই ঘোষণা হোক, সেটাই নতুন গঠনতন্ত্রের ভিত্তি হবে। কিন্তু তারা জনগণের সঙ্গে আলোচনা করেনি। জনগণ বাদ পড়ে গেছে।’

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *