আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। কিংস পার্টি হিসেবে পরিচিত জঙ্গী টোকাইদের নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দল এনসিপিকে সরকারি সবধরনের পৃষ্ঠপোষকতায় দেয়া হচ্ছে।

এমনকি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী অর্থাৎ সেনাবাহিনীর বহরকে নির্লজ্জভাবে এনসিপি’র আজ্ঞাবহ হিসেবে কাজে লাগানোতে চরম সমালোচনার মুখে পড়েছে ইউনুস সরকার।

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির হতাহত নিষ্পাপ শিশু-শিক্ষকসহ কয়েকজন অভিভাবকের ব্যাপারে সরকারের চরম অবহেলা বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ দেশের সাধারণ নাগরিকদের।

এর মধ্যে কথিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ( পরবর্তীতে এনসিপি) ৫ ক্যাডার চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাদের নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছে সারাদেশ।

আপাতত: বৈছাআ’র সারাদেশে কমিটি স্থগিত করা হলেও মূল রাজনৈতিক দল এনসিপি নিষিদ্ধের দাবি উঠছে সারা বাংলায়।

তার উপর বিএনপি দলীয় নেতা ও বিএনপি’র কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচক হয়ে উঠেছে এই টোকাই জঙ্গী পার্টি এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী। অর্থাৎ চব্বিশের কথিত জুলাই অভ্যুত্থানের স্টেক হোল্ডার হিসেবে পরিচিত কথিত বৈষম্যবিরোধী, জামায়াত ও বিএনপি এখন নিজেদেও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত।

একে অপরকে দোষারোপে ব্যস্ত। বিষয়টি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে এরা যেন একই মায়ের পেটের সৎভাই (!) হিসেবে অন্তর্কোন্দলে জড়িয়ে আছে। যাতে করে একদিকে যেমন সরকারের পক্ষে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা চরম কষ্টের হয়ে পড়েছে তেমনি বিব্রতকর অবস্থাতে পড়ছে এসব দলগুলো।

অবশ্য সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি চায়না বলেই সবকিছু বিবেচনায় সেটাই মনে হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বলতে তারা শুধু বোঝে বর্তমানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলন, শিক্ষকদের আন্দোলন, চিকিৎসকদের আন্দোলনসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নাগরিকদের যৌক্তিক আন্দোলনকে।

এসব ক্ষেত্রে তারা শুধু আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগ ও তাদের সহযোগীদের ষড়যন্ত্র দেখে। সুতরাং তাদেরকেই দমন করার ক্ষেত্রে পুলিশ-বিজিবি-র‌্যাব-সেনাবাহিনী দিয়ে নির্মমভাবে অত্যাচার নির্যাতন-খুন করা হচ্ছে।

গোপালগঞ্জে সেই ১৬ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত যে অত্যাচার নির্যাতন চলছে তা বন্ধ হয়নি। সেখানে এনসিপি’র ‘ মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ নিয়ে পুলিশ-সেনাবাহিনী যেভাবে নিরীহ-নিরস্ত্র জনগণের ওপর যেভাবে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, অত্যাচার নির্যাতন করেছে তা নিঃসন্দেহে একাত্তরে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকেও হার মানিয়েছে।

সেখানকার খুন-খারাবি-অত্যাচার-নির্যাতন নিয়ে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন, দোষীদের শনাক্ত, পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ করার জন্য একটি স্বাধীন-নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করার ব্যাপারে ব্যবস্থা না নিয়ে করা হরেঅ এনসিপি’র সমাবেশে হামলাকারিদের বিরুদ্ধে একটি কথিত বিচার বিভাগীয় কমিশন যে কমিশনকে আগেভাগেই দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে তারা কি কি বিষয়ে তদন্ত করবেন। এই হলো ইউনুস সরকারের ন্যায় পরায়ণতা !

এই গোপালগঞ্জ হত্যাকান্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে নানা অভিযোগ জমা হয়েছে। গোপালগঞ্জ হত্যাকাণ্ড হয়ে উঠছে এদেশের সাধারণ মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর একটি প্রক্রিয়া।

** চাঁদাবাজি শুধু বিএনপি নয় বৈষম্যবিরোধীরাই বেশি করছে।

গত চব্বিশের ৫ আগষ্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর থেকে কথিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা দেশের সবজায়গাতেই নানাভাবে কোটি কোটি টাকার চাঁদা বাণিজ্য করেছে। যার ফলে যেসব কথিত ছাত্রনেতাদের অবস্থা ছিল অনেকটা ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ অবস্থা তারা পরবর্তীতে বিলাসবহুল গাড়িতেতো চড়ছেই তারা কোথাও গেলে বিশাল গাড়ির বহর নিয়ে যান।

অনেক বড় ব্যবসায়ী, শিল্পপতি এসব ছাত্রনেতাদেরকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে কোনভাবে তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রেখেছেন। এসব ব্যবসায়ী না পারছেন কিছু বলতে না পারছেন সইতে। সেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারা পরবর্তীতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে তুলেছেন ‘কিংস পার্টি’।

যেটিকে এখন অনেকেই সরকারি দল বলছেন। তারা কোথাও গেলে সেখানে সরকারি সব প্রশাসনযন্ত্রকে অফিসিয়ালি আদেশ দিয়ে এই এনসিপি’র সেবাযত্নে খাটানো হচ্ছে। এতে ত্যক্ত-বিরক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। কিন্তু তারাও নিরুপায়।

চাকরি রাখাই এখন দায়। তাই সব মুখ বুজে সহ্য করছেন তারা। একটু সুযোগ পেলেই তারা সবাই ফুঁসে উঠে উল্টো এসব নেতাদের পিঠে ঘা বসিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র দেরি করবে না।

এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমে খবর বের হয়েছে–‘চাঁদা নিতে গিয়ে’ গুলশানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাসহ গ্রেপ্তার ৫। চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়ার পর গুলশান ২ নম্বরের একটি বাসার সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

রাজধানীর গুলশান থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যাদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতা রয়েছেন।

শনিবার সন্ধ্যার পর গুলশান ২ নম্বরে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তারের বাসার সামনে থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছেন গুলশান থানার ওসি হাফিজুর রহমান।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. সাকাদাউন সিয়াম (২২), সাদমান সাদার (২১), মো. ইব্রাহিম হোসেন (২৪) ও আব্দুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান রিয়াদ (২৫)। অপরজন শিশু হওয়ায় তার নাম, পরিচয় ও গ্রেপ্তারের ছবি দেয়নি পুলিশ।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিয়াদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম আহ্বায়কদের একজন।

পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আল আমিন হোসাইন বলেন, “চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়ার পর গুলশান ২ নম্বরের একটি বাসার সামনে থেকে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করি। “এখনো আমরা লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।”

গুলশান থানার ওসি হাফিজুর বলেন, “সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তার বাসায় নেই। কিন্তু তার বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।

আগে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিলেও আজ বাসায় গিয়ে বাকি টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দাবি করা হয়। পরে পুলিশকে খবর দিলে আমরা গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে ধরে এনেছি।”

এই চাঁদাবাজদের ভিডিও ফুটেজসহ নানা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। একটিতে দেখা গেছে এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ( যিনি কিছুদিন আগেও সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন) অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে রিয়াদের কাঁধে হাত রেখে হাস্যোজ্জল মুখে রয়েছেন।

এমনকি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথেও ঘনিষ্ঠভাবে ছবি রয়েছে এই চাঁদাবাজ নেতা রিয়াদের। চট্টগ্রামে রাফি নামে যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা রয়েছে তার নামেও কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার নামে বিপুল পরিমান টাকার হিসেবও রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার কাছে।

এই হলো বৈষম্যবিরোধী তথা জঙ্গী টোকাইদেও অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এনসিপি’র নেতাকর্মীদের অবস্থা। এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতারাই কিন্তু নোবেল লরিয়েট ড. ইউনুসের নিয়োগকর্তা যা ইউনুস সাহেব গত বছর ৮ আগষ্ট শপথ নেয়ার দিনে সাংবাদিকদের কাছে অকপটে বলেছেন।

তিনি এসব ছাত্র নেতাদের দেখিয়ে বলেছিলেন এমনটা- “এরাই আমাকে অনুরোধ করে এই পদে দায়িত্ব নিতে বলেছে, আমাকে নিয়োগ দিয়েছে ইত্যাদি।”

তাহলে বুঝুন আমাদের শান্তির পতাকাবাহি সর্বক্ষেত্রে উচ্চহারে সুদ আদায়কারি ড. ইউনুস এ জাতিকে কত শান্তিতে রেখেছেন !

একদল জঙ্গী-সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ-প্রতারক হচ্ছে তার( ইউনুসের) নিয়োগকর্তা। আবার তিনি প্রধান উপদেষ্টা হয়ে এই জঙ্গী-সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ-প্রতারক-মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দল এনসিপিকে ‘ কিংস পার্টি’ হিসেবে গড়ে তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ সুবিধা দিয়ে। কি অপরূপ দৃশ্য একবার কল্পনা করুনতো পাঠক ।

** চরম নতজানু ইউনুস মার্কিনীদের কাছে গদি ও প্রাণ টিকিয়ে রাখতে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে বাংলাদেশের সব ধরনের স্বার্থ-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রকাশ্যে মার্কিন প্রশাসনের অন্যায় আবদার-হুমকি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

চাইলে তিনি তাঁর ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য মার্কিনীদের অন্যায় আবদারের কাছে মাথা নত করতে পারতেন। কিন্তু বাঙ্গালির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা কিন্তু তা করেননি।

যার ফলশ্রুতিতে তাঁকে মার্কিন ‘ডিপ ষ্টেট’ ও ‘ মেটিকুলাম ডিজাইন’ এর ষড়যন্ত্রের কাছে চরমভাবে পরাজিত হতে হয়েছে গত বছরের ৫ আগষ্ট।

কিন্তু সেখানেই শান্তিতে নোবেল পাওয়া ড. ইউনুস পুরো দেশকেই শেষ করে দিয়ে বাংলাদেশের উপর, শেখ হাসিনার উপর চরম প্রতিশোধ নিয়েছেন। ফলে মার্কিনীরা যা বলছে তিনি তাই করতে বাধ্য হচ্ছেন।

এ যেন দেহপসারকে স্মরণ করিয়ে দেয় ( দুঃখিত পাঠক এ ধরনের শব্দ ব্যবহারের জন্য)। মার্কিনীদের চাহিদামতো চট্টগ্রাম বন্দরে একাংশের পন্য ওঠানামার কাজ মার্কিন সংস্থাকে দেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে মিয়ানমারে ‘ মানবিক করিডোর ’ এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এজন্য সেনা-নৌসহ সব ধরনের রাষ্ট্রীয় প্রশাসনযন্ত্রকে কাজে লাগাচ্ছে এই দেশদ্রোহী ইউনুসগং।

সর্বশেষ যেটি প্রকাশ পেলো সংবাদমাধ্যমে তা হলো-

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বড় অংকের শুল্ক কমানোর জন্য আলোচনার মধ্যেই মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম, সয়াবিন তেলা ও তুলা কেনার পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা, যাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই ৩৫ শতাংশ শুল্কের বোঝা থেকে বাংলাদেশকে রেহাই দেয়।

এসব তথ্য জানিয়েছেন বর্তমান বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

রোববার ( ২৭ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমাদের ইমিডিয়েট কিছু এয়ারক্রাফট দরকার, আমাদের দুয়েক বছরের মধ্যে দরকার, হয়ত আমরা দুয়েক বছরের মধ্যে কিছু পাব। আমাদের বিমানের তো বহর বাড়াতে হবে। সেই পরিকল্পনা সরকারের বেশ আগে থেকেই ছিল।

“আমরা এ বছরে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ ইস্যুতে আবার নতুন করে এই আদেশগুলো দিয়েছি, আগে ১৪টা ছিল, পরে ২৫টা করেছি।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নে এই সচিব বলেন, “বোয়িংয়ের ব্যবসাটা কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকার করে না। বোয়িং কোম্পানি করে। আমরা ২৫টি বোয়িং কেনার জন্য অর্ডার দিয়েছি। এরকম অর্ডার ভারত দিয়েছে ১০০টা। ভিয়েতনাম দিয়েছে ১০০টা, ইন্দোনেশিয়া দিয়েছে ৫০টা। এরকম বিভিন্ন দেশ দিয়েছে।

“বোয়িং কোম্পানির ক্যাপাসিটি অনুযায়ী এগুলো সরবরাহ করবে। সুতরাং এগুলো সরবরাহ করতে তারা অনেক সময় নেবে।”

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে থাকা বেশিরভাগ উড়োজাহাজই মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ফ্রান্সের কোম্পানি এয়ারবাস থেকে ১০টি বড় উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাংলাদেশ।

তবে সরকার বদলের পর সে উদ্যোগে তেমন কোনো গতি দেখা যায়নি। আগের সিদ্ধান্ত পাল্টে বাংলাদেশ যে ফের বোয়িং কেনার ক্রয়াদেশ দিয়ে ফেলেছে, সেকথা বাণিজ্য সচিবই প্রথম জানালেন।

ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর গত ২ এপ্রিল শতাধিক দেশের ওপর চড়া হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশের ওপর তখন বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা আসে।

এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিবেচনা করতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হয় সেখানে। তাতে রাজি হয়েছিলেন ট্রাম্প।

এই তিন মাস সময় ট্রাম্প মূলত দিয়েছিলেন আলোচনার জন্য। বাংলাদেশের তরফ থেকেও সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ৬২৬টি পণ্যে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল বাজেটে।

কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। ৩৭ শতাংশের বদলে ট্রাম্প ৩৫ শতাংশ শুল্কের খড়্গ নামিয়েছেন বাংলাদেশের ওপর। ১ অগাস্ট থেকেই তা কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক খাত, কারণ যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার।

সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, শুল্কের বিষয়ে বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আসার চেষ্টা করছে। সেজন্য আলোচনাও চলছে। সেই দর কষাকষির অংশ হিসেবে পরবর্তী বৈঠক হবে আগামী ২৯ ও ৩০ জুলাই।

বাণিজ্য সচিব জানিয়েছেন, ওই বৈঠকে অংশ নিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সোমবার ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।

ইউএসটিআরের কার্যালয়ে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানও উপস্থিত থাকবেন। সচিব বলেন, এ বিষয়ে ৩১ জুলাই আরেকটি বৈঠক হতে পারে এবং ১ অগাস্টের মধ্যেই তার ফলাফল আসতে পারে।

প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে- সবকিছুই তো জনাব ইউনুস দিলেন, তো নিজের দেশের আর রইলো কি ইউনুসের জমানায় ? শুধু এদেশের প্রতারিত জনগণ ছাড়া আর কিছুই কি থাকবেনা ইউনুসীয় শাষণ-শোষণে ?

** শুধু বৈছাআ কেনো, এনসিপি’র সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ নয় কেন ?

রোববার সন্ধ্যার খবর অনুযায়ী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির’ অভিযোগের ঘটনা ছড়িয়ে পড়ায় প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সংগঠনটির সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা করেছে।

 

শনিবার রাজধানীর শাহবাগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি রিফাত রশিদ।

তিনি বলেন, ”সারাদেশে আমরা দেখতে পাচ্ছি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি বেড়ে গিয়েছে। আমরা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আমরা এগুলো রুখে দেব। কিন্তু এ কমিটিগুলোতে বিভিন্ন সংগঠনের প্রভাবে বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়েছেন।

“এ কমিটিগুলো যখন গঠন করা হয়েছিল, সে কমিটি গঠনের দায়িত্বে যারা ছিলেন তারা যেহেতু বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতের ভেতরে চলে গিয়েছে। তাদের প্রশ্রয় পেয়ে জুলাই যোদ্ধারা বিপথগামী হয়েছে।

এ মুহূর্তে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অর্গানোগ্রামের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতীত সারা দেশের সকল কমিটির কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।”

সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে সারাদেশে নানা অপকর্ম, চাদাবাজি, দুর্নীতিতে লিপ্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। “আমরা এসব বরদাশত করব না। আমরা জুলাই অভ্যুত্থানকে ধারণ করে এ সংগঠন চালিয়েছি।”

প্রসঙ্গত: রাজধানী ঢাকার গুলশানে ’চাঁদা নিতে গিয়ে’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চার নেতাসহ পাঁচজনকে শনিবার গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

শনিবার সন্ধ্যার পর গুলশান ২ নম্বরে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তারের বাসার সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার এদের মধ্যে চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আরো তথ্য জানতে সাত দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

প্রশ্ন হলো- চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের জন্য শুধু বৈছাআ’র কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারা দেশের কার্যক্রম স্থগিত কেন ? কেন্দ্রীয় কমিটি নয় কেন ? এ চাঁদাবাজি- দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা-পুলিশ খুন, থানা জ্বালানো, অস্ত্র গোলাবারুদ লুটপাটের দায়ওতো এই তথাকথিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা বৈছাআ’র।

আর এদের নতুন অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এনসিপি তো মূল সংগঠন। গত বছরের ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার ও শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর যদি নানা অপরাধে অভিযুক্ত করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়, তারপর তাদের মূল সংগঠন আওয়ামীলীগসহ তাদের সব অংগ ও সহযোগী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়। তাহলে বৈছাআ ও তাদের মূল রাজনৈতিক দল এনসিপিকে কেন নিষিদ্ধ করা হবেনা?

এমন প্রশ্ন কিন্তু এখন সারা দেশের নাগরিকরাই করছেন, করবেন। আর এতে করে জঙ্গী-প্রতারক-বাংলাদেশ বিরোধী ইউনুসগংদের পায়ের তলার মাটি সরে যেতে খুব বেশি দেরি হবেনা, যদি মুক্তিকামী বাঙ্গালী আবার রুখে দাঁড়ায় এদেশের বিভিন্ন সময়ের গণ আন্দোলনের মত।

#ইশরাত জাহান। লেখক, প্রাবন্ধিক, নারী অধিকার সংগঠক।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *