ঢাকা: ছাত্র রাজনীতি নেই অথচ গুপ্ত রাজনীতি তথা শিবিরের রাজনীতি ঠিকই আছে।
যখন ছাত্ররাজনীতি বিহীন ক্যাম্পাস “গুপ্ত রাজনীতির” দখলে যায় তখন তো আতংকিত হতেই হয়।
জামাত সরকার, ভিসির কথা হচ্ছে, ছাত্রশিবির ছাড়া অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর রাজনীতি মোটেও সিদ্ধ নয়।
শিবিরের রাজনীতি সরাসরি সাম্প্রদায়িক শক্তি। তারা একটা থিউরি মেনে চলে। তারা প্রগতিশীল না। তারা সবকিছুই করে গোপনে। গুপ্ত রাজনীতি করা তাদের আদর্শ! ক্যাডারভিত্তিক সংগঠন।
গতকাল ঢাবি প্রশাসন হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি এবং গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছে। তার মানে প্রশাসন প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছে যে, একটা গ্রুপ ক্যাম্পাসে গুপ্ত রাজনীতি করে!
প্রশ্ন, প্রশাসন ছাত্ররাজনীতি না হয় নিষিদ্ধ করলো কিন্তু গুপ্ত রাজনীতি কিভাবে নিষিদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করবে?
গুপ্ত রাজনীতি নিষিদ্ধের পর তা নজরদারি করার জন্য কি প্রশাসনের “গোয়েন্দা” বাহিনী আছে? নেই।
আসলে, ঢাবিকে গুপ্ত রাজনীতির উর্বর ক্ষেত্র তৈরি করবে আরো।
এদিকে, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা আব্দুল কাদের কী অভিযোগ করলেন শুনি?
অন্যদের বাধা দিলেও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলোতে ‘দেদারসে’ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা আব্দুল কাদের।
আজ শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, শৃঙ্খলা কমিটি কিংবা ব্যাচ প্রতিনিধির নামে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা হলগুলোতে ছায়া প্রশাসন জারি রেখেছেন।
কাদেরের অভিযোগ, হলের শৃঙ্খলা কমিটির অধিকাংশই ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত। তারা অনলাইন ভোটাভুটিতে কারচুপি করে এসব প্রতিনিধি নির্বাচন করেছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলছেন, এগুলো তাদের ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার একটা রাজনীতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্র রাজনীতি থাকবে কি থাকবে না, সেই বিতর্ক নতুন করে সামনে আসে শুক্রবার। সেদিন ঢাবির ১৮টি হলে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপরই ওই কমিটি নিয়ে শুরু হয় নানা সমালোচনা।
এছাড়া হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন একদল শিক্ষার্থী।
তাদের আন্দোলনের মুখে শুক্রবার গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান।
আব্দুল কাদের মনে করেন, আবাসিক হলগুলোয় গুপ্ত ও প্রকাশ্য রাজনীতি বন্ধের যে ঘোষণা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দিয়েছে, তা খুব একটা ফলপ্রসূ হবে না।
ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘এমন ঘোষণায় কেবল প্রকাশ্য রাজনীতিটা বাধাগ্রস্ত হবে, গুপ্তদের আটকাতে পারবে না। দুদিন পর আবারও পরিস্থিতি বেগতিক হবে। তাছাড়া এর আগেও এমন ঘোষণা বহুবার হয়েছে; সমাধান হয়নি।’
তিনি লিখেছেন, ‘দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজন শিক্ষার্থী, ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একত্রে বসে আলাপ-আলোচনা করে একটা সমন্বিত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির সুস্পষ্ট রূপরেখা হাজির করা। সব পক্ষ একটা চুক্তিতে আসা ব্যতিত এ অবস্থার কোনো দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নাই।’