ঢাকা: সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন না হওয়া – পুরুষতান্ত্রিক পশ্চাদপদ চিন্তার প্রকাশ। বলেছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম।
জুলাই আগস্ট ষড়যন্ত্রে নারীদের কাজে লাগিয়ে এখন যা ইচ্ছে তাই করা হচ্ছে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ যে এখনো রয়ে গেছে তার প্রমাণ!
১২ আগস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমানে সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন দলীয় অনুপাতে নির্ধারিত হয়। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন পূর্বের এই পদ্ধতি বহাল রেখে প্রতি ৫ বছর অন্তর সাধারণ আসনে মাত্র ৫% নারী মনোনয়ন বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে—যা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ও সমানাধিকারের আন্দোলনের প্রতি চরম অবমাননা। এটি পুরুষতান্ত্রিক, পশ্চাদপদ ও হতাশাজনক সিদ্ধান্ত।
তাঁরা বলেন, রাষ্ট্র, রাজনীতি ও নীতি-নির্ধারণে নারীর অংশগ্রহণ অত্যন্ত সীমিত, যা দীর্ঘদিনের পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির ফল।
কালো টাকা, পেশিশক্তি, অনিরাপদ কর্মপরিবেশ, নারী নির্যাতন ও রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করছে।
সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচন হলে নারীরা জনগণের মধ্য থেকে উঠে এসে প্রকৃত ক্ষমতায়নের সুযোগ পেতেন। কিন্তু বর্তমান পদ্ধতিতে নারীরা ক্ষমতাসীন দলের দয়া-দাক্ষিণ্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন এবং তাদের কোনো নিজস্ব নির্বাচনী এলাকা থাকবে না।
নারীরা কোন নেতৃত্বে কম ছিলো? মুক্তিযুদ্ধ করেনি নারীরা?
নেতৃবৃন্দ এই কথা স্মরণ করিয়ে দেন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত নারীদের অভূতপূর্ব অবদান রয়েছে।
কিন্তু “নতুন বন্দোবস্ত”র নামে পুরনো পদ্ধতি বহাল রেখে নারী প্রতিনিধিত্বকে কেবল ‘শোপিচ’ বানিয়ে রাখা হচ্ছে—যা নারীর প্রতি অবিচার ও অপমান।
দাবি উঠেছে, সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা ১০০তে উন্নীত করতে হবে।সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে, এবংরাষ্ট্র পরিচালনায় নীতি-নির্ধারণে নারীর ন্যায্য অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ স্পষ্ট করেই বলেছেন, “নারীবির্বজিত কমিশন (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) বসে নারীর বিষয় নির্ধারণ করছে। আমি ভীষণভাবে অস্বস্তিতে ভুগছি।”
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন ঐকমত্য কমিশনের সাত সদস্যের মধ্যে কোনা নারী প্রতিনিধি নেই।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই কমিশনের শেষ বৈঠকের দিন ৩১ জুলাই সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে যে ছবি তোলা হয়েছিল, সেখানে ৪৫ জনের মধ্যে নারী ছিলেন মাত্র চারজন।