ঢাকা: গুপ্তবাহিনী গুপ্ত থেকে পুরোপুরি প্রকাশ্যে আসলে যা হবে তার একটু টিজার দেখালো।
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে জয়েন উদ্দিন নামের ঢাবির শিবিরছানাটি শ্রদ্ধা জানিয়েছে রশিদ মিনহাজকে৷
কে এই রশিদ মিনহাজ? সেদিন বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সাথে ধ্বস্তাধস্তি করে প্লেন ক্রাশ করায় যে পাকিস্তানি পাইলট তার নাম রশিদ মিনহাজ। পাকিস্তান বিমান বাহিনী আজও তাঁকে স্মরণ করে জাতীয় বীর হিসেবে৷
খুব স্বাভাবিকভাবে শিবির ছানা জয়েন উদ্দিন তাঁর পাকিস্তানি আব্বুকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে ভোলেনি। শিবির ছানাটি মুক্তিযুদ্ধে শহীদের রক্তস্নাত ঢাবির ডাকসু নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে৷
জঙ্গী শাসনে জঙ্গী উত্থান হবে এটাই স্বাভাবিক।
উল্লেখযোগ্য যে, স্বাধীন বাংলাদেশে এই প্রথমবার প্রকাশ্যে প্যানেল ঘোষণা দিয়ে ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদে নির্বাচন করতে যাচ্ছে।
এর আগে বিভিন্ন সময়ের নির্বাচনে শিবিরের পক্ষ থেকে গোপনে প্যানেল দেওয়া হলেও প্রকাশ্যে প্রচারণা করতে দেখা যায়নি বলে সেই সময়ের ছাত্রনেতারা জানিয়েছেন।
তবে ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, অন্তত ১৯৭৯, ১৯৮০, ১৯৮২, ১৯৮৯, ১৯৯০ সালের ডাকসু নির্বাচনে ছাত্র শিবির প্রকাশ্যে প্রার্থী কিংবা প্যানেল ঘোষণা করেছে এবং নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খুব দ্রুত রাজনীতি ফিরে আসে। সক্রিয় হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সবগুলো ছাত্রসংগঠন।
এমনকি দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্য রাজনীতিতে না থাকা ইসলামী ছাত্রশিবিরও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ্যে এসেছে।
এরা এতদিন গোপনে ছিঁড়েছে দেশকে এখন ছিঁড়বে প্রকাশ্যে।
এসব সংগঠনের সঙ্গে বিভিন্ন সময় বৈঠকে অংশ নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
ছাত্রশিবিরের ৪৮ বছরের ইতিহাসে প্রকাশ্যে, অবাধে, এত চনমনা হয়ে নির্বাচনকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ড চালানোর সুযোগ জামায়াতে ইসলামীর এ ছাত্র সংগঠন আর কখনো পায়নি।
সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিচ্ছে ইউনূসের জমানায়।
আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি চালানোর সুযোগ ছিল না।
তবে শিবির তো শিবিরই হয়।
ওই সময়ও ক্ষমতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ করে এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠনে সক্রিয় থেকে শিবির কর্মীরা যে গোপনে নিজেদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে গেছে, সেই সত্য প্রকাশিত হয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানের পর।
জুলাই ষড়যন্ত্রে জল্পাই বাহিনীও যুক্ত ছিল, তাদেরই কারণে হাজার হাজার দেশপ্রেমিক পুলিশদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে বিএনপি জামাত শিবির আর জঙ্গিরা । এই সব কিছুর মাস্টারমাইন্ড ইউনুস এবং তাঁর বিদেশীচররা !
জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির রাজপথে থাকা, পরামর্শ দেওয়া ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে সহযোদ্ধার মতো ভূমিকা পালন করেছিল স্বীকার করে নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
জুলাই অভ্যুত্থানের শুরু থেকে শিবিরের কর্মীদের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, কেউ কোনো দিন কোনো সত্যকে চেপে রাখতে পারে না। সত্য প্রকাশিত হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।
এই ছাত্রশিবিরকর্মীরা এবার নিজেদের সাংগঠনিক পরিচয় নিয়েই অবাধে ডাকসু নির্বাচনে নিজেদের হাজির করেছে।