ঢাকা: যে ভারতের ৩ হাজার সৈন্য মারা গিয়েছিল পাকিস্তানের হাত থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে গিয়ে, সেই মিত্র-ভারত আজ শত্রু।
যে ভারত এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল, খাইয়েছিল, পরিয়েছিল, সে ভারত আজ শত্রু বাংলাদেশে কাছে। ইউনূস বানিয়েছেন শত্রু।
আর যে পাকিস্তান দেশের ৩০ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছিল, ২ লক্ষ মেয়েকে ধর্ষণ করেছিল, সেই পাকিস্তান আজ বন্ধু।
সেই বন্ধু যে জঙ্গী উৎপাদন করছে, জঙ্গী সাপ্লাই দিচ্ছে, তা নিয়ে তা থৈ নাচছে বাংলাদেশ।
যে পাকিস্তান জঙ্গি উৎপাদনে এক নম্বরে, সেই পাকিস্তান আজ বন্ধু।
যে পাকিস্তান আজ অবধি একাত্তরের নৃশংসতার জন্য বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চায়নি, সেই পাকিস্তান আজ বন্ধু!
ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের বিষয়টি সামনে এনে ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে ২৫ শে মার্চকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে বাঙালি জাতিস্বত্তা এবং বাংলার মানুষের মুক্তির স্পৃহাকে ধ্বংস করতে গণহত্যা শুরু করে পাক হানাদার বাহিনী।
‘পাকিস্তান কখনো বাংলাদেশে গণহত্যায় তাদের দায় স্বীকার করেনি।
ঢাকায় পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
পাকিস্তান হাইকমিশনে হওয়া এই বৈঠকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দক্ষিণ এশিয়ার ভ্রাতৃত্ব এবং একাত্তরের ইস্যু “ডিল” করার কথা উঠেছে।
প্রশ্ন হলো কোন প্রটোকলে একটি ছোট রাজনৈতিক দল বিদেশি মন্ত্রীর সঙ্গে দেশের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কথা বলে?
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো-“একাত্তরের ইস্যু ডিল করা উচিত” বলা।
শহীদদের রক্ত, এত নারীর সম্ভ্রম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, রক্ত কি এত সহজে মীমাংসা হবে? পাকিস্তান কি কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছে?
বরং পাকিস্তান ঝোঁপ বুঝে কোপ বসাচ্ছে বাংলাদেশের ঘাড়ে।
এই দেশটা পৃথিবীর ইতিহাসের নারকীয়তম গণহত্যার জন্য নূন্যতম লজ্জিত বা অনুতপ্ত না হয়ে এটিকে ভারতের চক্রান্ত বলে অভিহিত করে তাদের সাথে ইউনূসের কিসের আলাপ ? তাদের সাথে বাংলাদেশের কিসের চুক্তি?
একাত্তরের ইস্যু “ডিল” নয় শুধু পাকিস্তানের নিঃশর্ত ক্ষমাই হতে পারে একমাত্র সমাধান।
৭১ এর ইতিহাসের কেউ যদি দর-কষাকষির টেবিলে উঠিয়ে বলে, হয়ে গেছে সমাধান, তাহলে সেটি শহীদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
হুমায়ুন আজাদের কথাই ঠিক৷ এরা যদি ফুল নিয়ে আসে এদের বিশ্বাস করা উচিত না। এরা বাংলাদেশর সাথে ভালো সম্পর্ক চায় কিন্তু ক্ষমা চাইবে না।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার দাবি করেছেন, ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং অন্যান্য অমীমাংসিত তিনটি বিষয় এরই মধ্যে দুইবার সমাধান হয়েছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই দাবি করেন তিনি।
অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ইসহাক দার বলেন, ‘১৯৭৪ সালে প্রথমবারের মতো বিষয়টির সমাধান হয়েছে। সেই সময়ের দলিল দুই দেশের জন্য ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে।
এরপর জেনারেল পারভেজ মোশাররফ ২০০০ সালের শুরুতে বাংলাদেশে এসে বিষয়টি প্রকাশ্যে সমাধান করেছেন। তাই এটি দুইবার সমাধান হয়েছে।’