রাঙামাটি: রাঙামাটিতে ভেঙে ফেলা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। কাদের হাতে তুলে দিলেন এই দেশ? প্রশ্ন বারবার। রাঙামাটি শহরের ভেদভেদী সার্ভার স্টেশন এলাকায় অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল থেকে ভাস্কর্যটি ভাঙতে শুরু করে ছাত্র-জনতা রাঙামাটি জেলার সদস্যরা। এর আগে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য অপসারণ চেয়ে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলো বিক্ষোভকারীরা।
জাতীয় নাগরিক পার্টি রাঙামাটি জেলার সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান রোমান বলেন, আমরা ৩ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করার পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাইনি। তাই আমরা এই মূর্তি অপসারণের কাজ শুরু করেছি।
বঙ্গবন্ধুর অপমান ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের অপমান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেললেই তাঁকে বাঙালি জাতির হৃদয় থেকে মুছে ফেলা যায়না। বঙ্গবন্ধু জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি, যতই তাঁকে মুছতে যাবে ততই জ্বলে উঠবে।
বঙ্গবন্ধুর বিশাল ভাস্কর্যটির মাথা আগে থেকেই ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল। এরপর শ্রমিকেরা বেদিতে দাঁড়িয়ে ভাস্কর্যের পায়ের কাছে আঘাত করে। বড় বড় হাতুড়ি দিয়ে ভাঙার চেষ্টার পর আনা হয় ড্রিল মেশিন ও বৈদ্যুতিক কাটার। দুটি যন্ত্রের সাহায্যে চলতে থাকে ভাস্কর্য ধ্বংসের কাজ। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ভাস্কর্যের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ভাঙা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সন্ধ্যা ছয়টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে সদর উপজেলা পরিষদের সামনে অর্ধশত তরুণ ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ১০ থেকে ১৫ জন শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য হাতুড়ি দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করছেন। এই দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করছিলেন শত শত মানুষ। কোনো বাধা ছাড়াই এভাবে ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হচ্ছিল। এর আগে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে প্রস্রাব করে অপমান করা হয়েছিলো।
৫ আগষ্টের এতদিন পর,দৃশ্যত শান্ত,স্থির শহরে ত্রিপল মোড়া একটা পাথুরে ভাস্কর্য ভাঙতে যেভাবে সবাই এক হয়েছেন,তার পেছনের কারণ তো রাজনৈতিক!!
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে জেলা পরিষদের অর্থায়নে রাঙামাটি শহরের সদর উপজেলা পরিষদের সামনে ৩১ ফুট উঁচু ও ১২ ফুট প্রশস্ত ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এটি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল।