ঢাকা: কণ্ঠরোধের মিশন। দেশের লোকগানের সম্রাজ্ঞীকে, বাংলার ঘরের মেয়ে, মাঠের গানের কণ্ঠস্বর মমতাজ কারাগারে।
মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে ৪ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিন, শনিবার, ১৭ মে বিকেলে রিমান্ড শেষে তাঁকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম।
এই সময় মমতাজের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালত মমতাজকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত , মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়।জেলে গেছেন মমতাজ, জেলে গেছে বাংলার সংস্কৃতি।
তারা এটাকে বলছে গ্রেফতার! কিন্তু সবাই জানে, এটা আয়োজন করে শিকার অভিযানের নতুন নাম! অন্তর্বর্তী সরকার শিল্পীদের ভয় পায়। তাঁর গানে ছিল দেশের ধুলো, মানুষের অভাব, মায়ের মুখ, প্রেম, ক্ষোভ—তারা সেটা সহ্য করতে পারেনি।
এদিন, সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাঁর স্বামী এবং বাবার নাম চাইলে বিচারক তাকে সরাসরি থামিয়ে দেন।মমতাজের পক্ষে তাঁর আইনজীবী মাসুদুর রহমান লিংকন জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানিতে বলেন, “মামলার ঘটনার সাথে তিনি কোনোভাবে জড়িত নন। তিনি এজাহারভুক্ত আসামি। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নাই। শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাঁর জামিনের প্রার্থনা করছি।”
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, “দেশের ইতিহাসে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, এমপি, সাবেক মন্ত্রী, এমপি, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব, প্রধান বিচারপতি, ঢাকা মহানগর পিপি, বাকীগুলো আর নাই বললাম, একযোগে পালিয়ে যায়। এটা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। মমতাজ বেগম গ্রেপ্তারের পর কিছু মানুষের চিত্র দেখেছি, এলাকায় তারা মিষ্টি বিতরণ করেছে। তার দ্বারা মানুষ কীভাবে নির্যাতিত হয়েছে!”
মমতাজ সম্পর্কে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, “সাধারণ রাস্তা থেকে পার্লামেন্টে গিয়ে পৌঁছেছেন। পার্লামেন্টের মত পবিত্র জায়গায় গানের জলসা বসাতেন, বিরোধীদের বিরুদ্ধে অসম্মানজন বক্তব্য দিতেন। সংসদকে কলুষিত, কলঙ্কিত করেছেন। সংসদে যাবে কারা? আইন প্রণেতা, শিক্ষিত, মার্জিত মানুষ। মেম্বার হওয়ার যোগ্যতা রাখে না তারা সংসদ সদস্য হয়েছে ভোট চুরি করে, রাতের ভোটে।
“সংসদে দাঁড়িয়ে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়ার বাপের নাম জানতে চান। বলেন তো, আপনার বাপের নাম কী, স্বামী কয়জন। স্বামীর নাম কী?”এসময় বিচারক তাকে থামিয়ে দেন।