ঢাকা: ডিজিটাল মোবাইল জার্নালিজম নিয়ে আপত্তি তুলেছেন উমামা ফাতেমা। কুকীর্তি প্রকাশ পাবে বলে মোবাইলকে ভয় পাচ্ছেন নাকি তিনি?
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের এই ভিপি প্রার্থী বলেন, বারবার নিষেধ করার পরও সাংবাদিকদের নীতি বহির্ভূত কার্যক্রম থামানো যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এসব কথা লেখেন উমামা ফাতেমা।
উমামা ফাতেমা লিখেছেন, ‘ক্যাম্পাসের ডাকসু নির্বাচনে ডিজিটাল মোবাইল জার্নালিজম পুরো নির্বাচনের পরিবেশকে নষ্ট করছে। প্রার্থীদের সাথে ভোটারদের কথা বলার সহজ স্বাভাবিক প্রসেসকে কঠিন করে দিচ্ছে। প্রার্থীদের পেছনে প্রতিটা পদক্ষেপ ভিডিও করতে থাকা কতটা সমীচীন দেখায় সেটা আমার প্রশ্ন!’
উমামা আরও লেখেন, ‘বারবার নিষেধ করার পরও সাংবাদিকদের এ ধরনের নীতি বহির্ভূত কার্যক্রম থামানো যাচ্ছে না। ব্যক্তির কনসেন্টের বাইরে গিয়ে ভিডিও করা, ক্রপ করে ভিডিও ভিন্ন এঙ্গেলে প্রদর্শন করার কাজ থামানো যায় না।’
সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ করে এই ভিপি প্রার্থী লিখেছেন, সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ থাকবে আপনারা প্রার্থী ও ভোটারের প্রাইভেসি মেনে চলুন। ভোটার ও প্রার্থীর সম্মতির বাইরে অযাচিতভাবে ভিডিও করে ভোটের পরিবেশটা নষ্ট করবেন না।
এদিকে, মোজো সাংবাদিকদের নিয়ে উমামা ফাতেমার মন্তব্যের তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদ জানায় মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এমআরএ)।
উমামা ফাতেমার বক্তব্যে সাংবাদিক সমাজ বিস্মিত। তারা বলে, তিনি ডাকসু ভিপি প্রার্থী হয়েও সাংবাদিকতা পেশাকে, বিশেষ করে মোবাইল জার্নালিজমকে অবমাননাকর ভাষায় তিরস্কার করেছেন, যা শুধু দুঃখজনকই নয়, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্যও হুমকিস্বরূপ।
মোজো জার্নালিজম আজকের যুগে সংবাদপত্রের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। এর মাধ্যমে ঘটনাস্থলেই দ্রুততম সময়ে তথ্য, ভিডিও ও ছবি জনগণের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করবে, পর্যবেক্ষণ করবে এবং ভোটার-প্রার্থীর সম্পর্কের স্বচ্ছতা জনগণের সামনে তুলে ধরবে, এটাই সংবাদকর্মীর দায়িত্ব।
এমআরএ-এর সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, মোজো জার্নালিস্টদের প্রতি তার এ মনোভাব মুক্ত সাংবাদিকতা ও তথ্যের স্বাধীনতার পরিপন্থী।
সাংবাদিকদের কাজ নীতি বহির্ভূত নয়—বরং জনগণের জানার অধিকার নিশ্চিত করাই সাংবাদিকতার মূল নীতি।
স্পষ্টভাবে সাংবাদিকদের হেয় করে প্রার্থীরা গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। মোবাইল জার্নালিজম তথ্যপ্রবাহকে আরও সহজলভ্য করেছে, এবং এটি গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার মাধ্যম। সাংবাদিকদের কাজকে খাটো করা মানে জনগণের জানার অধিকার খাটো করা।
এমআরএ-এর সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বলেন, উমামা ফাতেমা “ব্যক্তিগত প্রাইভেসি”র নামে সংবাদকর্মীদের কাজকে বাঁধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছেন। অথচ ডাকসু নির্বাচন একটি পাবলিক ইভেন্ট, যেখানে প্রার্থী হিসেবে তার প্রতিটি পদক্ষেপ, আচরণ ও বক্তব্য গণমাধ্যমে আসাটাই স্বাভাবিক। এখানে ‘প্রাইভেসি’র অজুহাত তুলে সাংবাদিকদের দায়মুক্তিহীনভাবে অপমান করা আসলে স্বচ্ছ নির্বাচনকে আড়াল করার কৌশল।
অবিলম্বে উমামা ফাতেমার এই বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।