ঢাকা: বাংলাদেশের পরিস্থিতি আজ খুব খারাপ। যারা যুদ্ধ করে, রক্ত ঝরিয়ে এই দেশটা স্বাধীন করেছেন তাঁদের আজ ধরে, মব করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

বিশিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর আদালতে নীরব অবস্থান ছিল একটি প্রতীকী প্রতিবাদ।

২০২৫ সালের ২৯ আগস্ট, “মঞ্চ ’৭১”-এর একটি গোলটেবিল আলোচনার পর তাঁকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার করা হয়।

আদালতে হাজির হয়ে তিনি জামিনের আবেদন করতে অস্বীকৃতি জানান এবং ওকালতনামায় স্বাক্ষর করতেও রাজি হননি। একেই বলে মেরুদণ্ড।

লতিফ সিদ্দিকীর এই অবস্থান আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ১৯৭১-এর চেতনা শুধু ইতিহাস নয়, এটি আজও জীবন্ত—যেখানে একজন মুক্তিযোদ্ধা তাঁর নীরবতা দিয়ে রাষ্ট্রের ব্যর্থতাকে প্রকাশ করেন।

তিনি কোনো স্লোগান দেননি, কোনো বক্তৃতা দেননি—তবু তাঁর নীরবতার হাসি ছিল বজ্রের মতো।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সিক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিবৃতি দিয়েছে।

অবৈধ দখলদার খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস গং রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর থেকে দেশবাসী প্রত্যক্ষ করছে যে, এরা মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মানিত, অপমানিত ও লাঞ্চিত করে আসছে। যেন তাদের প্রধান টার্গেটই হলো মহান মুক্তিযুদ্ধ।

মহান মুক্তিযুদ্ধের এই স্পিরিটকে এই অবৈধ দখলদার বাহিনী ভয় পায়। তাই তারা নীতিগতভাবেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে।

তারই ধারাবাহিকতায় রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি মবসন্ত্রাস করে বয়োজ্যেষ্ঠ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, সাংবাদিক মঞ্জুর আলম (পান্না), পেশাজীবী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল-সহ বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সিক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হয়।

ডিআরইউ-এর শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ‘মঞ্চ ৭১’।

দল-মতের সব মুক্তিযোদ্ধাদের সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এটা কোনো দলীয় অনুষ্ঠান ছিল না। অথচ সেখানে আলোচনায় অংশগ্রহণ ও শুনতে এসে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষদের মবসন্ত্রাসের শিকার হতে হয়।

এই মবসন্ত্রাসের হাত থেকে শিক্ষক-সাংবাদিক-সহ কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ রেহাই পাচ্ছে না।

কী আজব ঘটনা! কী স্পর্ধা! ত্রিশ লক্ষ শহিদ ও মহান মুক্তিযোদ্ধা সুমহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী রক্তবীজ থেকে জন্ম নেওয়া অশুভ শক্তি আস্ফালন দেখাচ্ছে খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস গংদের প্রত্যক্ষ মদদে।

অবৈধ দখলদার খুনি-ফ্যাসিস্ট ইউনূস গং মহান মুক্তিযুদ্ধে সমগ্র জাতির সুমহান আত্মত্যাগকে ভূ-লুণ্ঠিত করছে।

যাদের বীরত্ব, সাহস ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন দেশ পেলাম, জাতির সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের অসম্মান ও অপমান বাঙালি জাতি মেনে নেবে না, বাংলাদেশ একদিন এর জবাব দেবে, ইনশাল্লাহ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *