নয়া দিল্লি: ঘরের শত্রু বিভীষণ। একদিকে কন্টেন্ট ক্রিয়েটার, শখ প্রচুর। কিন্তু ভিতরে ভিতরে পাকিস্তানের গুপ্তচর। ভারতের সব গোপন খবর পাকিস্তানকে দিতেন এক মহিলা গুপ্তচর।
সোশাল মিডিয়ার প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে তার অনুরাগীর সংখ্যা বেশ। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমের ইনফ্লুয়েন্সার হয়ে ভিতরে যে পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরের কাজ করতো সেটা কে জানতো! সকলের সামনে এই মধুরাণী নিজের রূপ দেখাতো, ভালো মানুষ সেজে থাকতো।
গুপ্তচর জ্যোতি মালহোত্রাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হরিয়ানা পুলিসের হাতে গ্রেফতার হরিয়ানার বাসিন্দা জ্যোতি মালহোত্রা। সূত্রের খবর, বর্তমানে ৫ দিনের পুলিসি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ধৃত ওই মহিলাকে।
একজন দেশদ্রোহী জ্যোতি মালহোত্রা। যে নিজের দেশের খেয়ে পড়ে পাকিস্তানের সহায়তা করতেন এবং ভিডিওতে বোঝানোর চেষ্টা করতেন পাকিস্তান মন্দ নয়। নিজের দেশের সাথে এমন শত্রুতা করার জাল হয়তো আরো ছড়িয়ে আছে, সব তদন্ত চলছে।
দেশবিরোধী কাজ এবং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার আইএসআই যোগের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ভারতের জনপ্রিয় ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা। তিনি ‘ট্র্যাভেল উইথ জো’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল চালান এবং পাকিস্তান সফরের সময় তিনি দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর এজেন্টদের সংস্পর্শে আসেন। এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা হরিয়ানা এবং পাঞ্জাবের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
তথ্য অনুযায়ী, জ্যোতি মালহোত্রা ২০২৩ সালে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন। এই সময় জ্যোতির সঙ্গে পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মচারী এহসান- উর- রহিম ওরফে দানিশের দেখা হয়, যার সঙ্গে জ্যোতির গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ভিডিও বানানোর নামে বেশ কয়েকবার পাকিস্তান গিয়েছেন তিনি।
দানিশের মাধ্যমে জ্যোতির সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-র অন্যান্য এজেন্টদের পরিচয় হয়ে যায়। যাদের মধ্যে ছিলেন আলি আহসান ও শাকির ওরফে রানা শাহবাজ (যার নাম তিনি তাঁর ফোনে ‘জট রানধাওয়া’ হিসেবে সেভ করেছিলেন)। অন্য নামে সেভ করেছিলেন তিনি। তদন্তকারীদের দাবি, শারীরিক সম্পর্কও ছিলো জ্যোতির সাথে।
এই এজেন্টদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতেন তিনি। এবং সংবেদনশীল তথ্য দিতেন। জ্যোতি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাটের মতো এনক্রিপ্টেড প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এই এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। পাকিস্তান দূতাবাসের সঙ্গে দেখা করে ভারতের বহু তথ্য ফাঁস করেছেন জ্যোতি।
উল্লেখযোগ্য যে, ভারত সরকার ১৩ মে দানিশকে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করে ও তাঁকে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেয়।
জানা যাচ্ছে, জ্যোতি মালহোত্রার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (BNS) ধারা ১৫২ এবং ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ধারা ৩, ৪ এবং ৫ এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁর লিখিত স্বীকারোক্তি রেকর্ড করা হয়েছে।