ঢাকা: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিন্দুদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ।

হিন্দু নির্যাতন, হিন্দু বাড়ি ঘরে আগুন হিন্দুদের মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া, পূজা মন্ডপে প্রকাশ্যে হামলা হুমকি! কোন বিষয়টা আজ অবধি সুরাহা হয়েছে।

মূর্তি ভাঙচুর চলছেই, ইউনূসের পুষে রাখা জঙ্গীরা এসে প্রতিমা ভেঙে রেখে চলে যাচ্ছে। প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।

হিন্দুদের বিচার আদৌ কি হবে বাংলার মাটিতে?

গত ৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন, মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতির সময় হামিন্দপুর গ্রামের কামারপাড়া সর্বজনীন দুর্গা মন্দির চত্বরে পাঁচটি প্রতিমায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা এই সংকটের সর্বশেষ উদাহরণ।

এই ঘটনায় দুর্গা, লক্ষ্মী, কার্তিক, গণেশসহ পাঁচটি প্রতিমা ও বিভিন্ন সরঞ্জাম পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হয়েছে।

হিন্দু ধর্মের উপর আক্রমণ বরাবর হয়ে আসছে, এখন তো বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউনূস বসেছেন হিন্দুদের বিরুদ্ধে দালালি করার জন্যেই।

মাঝে মধ্যে নির্বিকার মুখে সনাতনীদের পাশে থাকার বক্তৃতা দেন, সান্ত্বনা দেন! এইগুলো সব ষড়যন্ত্রের অংশ।

হিন্দুদের বিরুদ্ধে যা ঘটছে সব জঙ্গিবাদী শক্তির উত্থান ও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার ফল।

গত এক বছরে বাংলাদেশে ২ হাজারের বেশি মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ফরিদপুর, লক্ষ্মীপুর, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় এই হামলাগুলো ঘটেছে।

উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:

গত ৩০ জুলাই ফরিদপুরে খাসকান্দি সর্বজনীন কালী ও দুর্গা মন্দিরে কালীমূর্তির হাত, শিবের সাপের লেজসহ বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করা হয়।

মন্দিরটি অরক্ষিত ছিল, এবং কোনো সিসিটিভি না থাকায় দোষীদের শনাক্ত করা কঠিন হয়েছে।

গত ১৪ মার্চ লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মহামায়া মন্দিরে সরস্বতী প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে মুখোশধারী এক যুবককে দেখা গেছে।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ২০০ বছরের পুরোনো মহাশ্মশান ও মন্দির উচ্ছেদের চেষ্টা এবং ভাঙচুরের প্রতিবাদে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মানববন্ধন করেছেন।

তারা অভিযোগ করেন, ইউএনও মো. এরশাদুল আহমেদ মন্দির ভেঙে গরুর হাট নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন।

১৩ অক্টোবর মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ১৪টি পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুর হয়। মাত্র দুটি মামলা রেকর্ড হলেও অধিকাংশ অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়নি।

গত ২৮ জুন ঢাকার খিলক্ষেতে শ্রীশ্রী সর্বজনীন দুর্গা মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ মানববন্ধন করে।

বিশ্লেষকদের মতে, ৫ আগস্ট ২০২৪-এ ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী, বিশেষ করে জামায়াতে ইসলাম ও ছাত্র শিবিরের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত এক বছরে প্রায় ১৫ হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচশতাধিক নারী ও তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এই সহিংসতার পেছনে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *