ঢাকা: বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে চরম অপমান করলো ফ্রান্স। এবং এর জেরে বাধ্য হয়ে আগামি মাসে প্যারিস সফর বাতিল করলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস।বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার আগে মুহাম্মদ ইউনূস ফ্রান্সেই থাকতেন। কিন্তু তাতে কী? সেই মহম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানিয়েও ‘অপমান’ করলো ফ্রান্স। এই আবহে ফ্রান্সের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিচ্ছেন মুহাম্মদ ইউনূস।
উল্লেখযোগ্য যে, জুনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বসতে চলেছে রাষ্ট্রসংঘের সমুদ্র বিষয়ক সংগঠনের সম্মেলন। সেই সম্মেলনে যোগদানের ফাঁকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন মুহাম্মদ ইউনূস। প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের তরফে ফ্রান্স প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রধান উপদেষ্টার ইচ্ছার কথা জানানো হয়েছিল।
সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তাবে রাজি হননি। এই খবর পাওয়ার পর মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর প্যারিস সফর বাতিল করেছেন বলে ঢাকার সরকারি সূত্রের খবর।
ফ্রান্সের তরফ থেকে ঢাকাকে জানানো হয়, ফ্রান্সে আমন্ত্রিত বহু রাষ্ট্রপ্রধান দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আবেদন করেছে। এমন অবস্থায় নির্দিষ্ট কোনও ইস্যু থাকলে ইউনূসের সঙ্গে বসতে পারেন ম্যাক্রোঁ। শুধু আনুষ্ঠানিকতার জন্য বৈঠক সম্ভব হবে না।
বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই বড় ধাক্কা। ঢাকার কূটনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র এর যে পরিবেশ ছিলো, সেটি নেই। আওয়ামী লিগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা, তাছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের আরো অনেক হঠকারী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা চলছে বিশ্বে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তে তার প্রতিফলন ঘটেছে।
উল্লেখযোগ্য যে, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ২০২৩-এ ঢাকা সফর করেন। সে বছর সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিয়ে দেশে ফেরার আগে দু’দিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে।
সেই সফরে বাংলাদেশের জনপ্রিয় গানের দল জলের গানের অন্যতম সংঘঠক রাহুল আনন্দের ঢাকার বাড়িতে যান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। গভীর রাত পর্যন্ত রাহুল ও তাঁর দলের গান শোনেন ম্যাক্রোঁ। রাহুল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে একটি একতারা উপহার দেন।
অথচ, হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে কার্যত তাণ্ডব চলেছে। আক্রান্ত হচ্ছে সংখ্যালঘুদের ঘর-বাড়ি সহ সরকারি প্রতিষ্ঠান। শিল্পীরাও আক্রান্ত!
‘জলের গান’-এর প্রতিষ্ঠাতা রাহুল আনন্দের বাড়িও ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় একদল উত্তেজিত জনতা।এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করে রাহুল আনন্দ এবং জলের গানের পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ সহ গোটা বিশ্বের শিল্পী মহল।