ঢাকা: বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যখন স্বপ্ন ছোঁয়ার দ্বারপ্রান্তে, তখনই ষড়যন্ত্রের ছোবলে থমকে দাঁড়িয়েছে সেই অগ্রযাত্রা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে স্বপ্ন বুনছিল—২০২৬ সালের মধ্যে এক কোটি ছাত্রছাত্রীকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর্মসংস্থানের আওতায় আনা, শিল্পকারখানায় ৬০ লাখ দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিকের চাকরি নিশ্চিত করা তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ।
এবার মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ৪১ জন সিনেটর ও এমপি।সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, জুলাইয়ের সহিংস ঘটনার বিচার এবং র্যাব বিলুপ্তির আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ৪১ জন সিনেটর ও এমপি। বুধবার, ২১ মে পাঠানো চিঠিতে প্রথম দাবি হিসেবে তারা শীঘ্রই সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার কথা জানিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার ৪১ এমপি-সিনেটরের চিঠিতে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন যথাযথ গ্রহণযোগ্যতা ও স্বচ্ছতার অভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান সংসদ সদস্যরা বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক বৈধতা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা সংবলিত রোডম্যাপ জরুরি। এটি যেন অবিলম্বে এবং এই ক্যালেন্ডার বছরের মধ্যেই ঘোষণা করা হয়।’তারা বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে সরকারকে আইন ও প্রশাসনিক ক্ষমতা যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে হবে।’
দ্বিতীয় দাবি হিসেবে তারা চিঠিতে জুলাই বিপ্লবে নিহত ও আহতদের জন্য বিচার ও ক্ষতিপূরণের কথা উল্লেখ করেছেন।‘ছাত্র ও সাধারণ জনগণের অসাধারণ সাহসিকতা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে, কিন্তু এই বিপ্লবের পেছনে রয়েছে ভয়াবহ রক্তাক্ত ইতিহাস।’
‘হাজার হাজার মানুষ নিহত ও লক্ষাধিক আহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নির্যাতনের শিকার।’ তাঁরা স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে আহ্বান জানান।
তৃতীয় দাবিতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির কথা বলেছেন। এতে তারা উল্লেখ করেন, র্যাবের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত র্যাব কর্তৃক দুই হাজার ৬৯৯ জন মানুষ বিচারবহির্ভূতভাবে নিহত হয়েছে। র্যাব কার্যত একদল নিরঙ্কুশ ও দমনমূলক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।’
‘যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে র্যাব ও এর নেতৃত্বের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশি কমিউনিটিও এই বাহিনী বিলুপ্তির দাবি তুলেছে।’ সংসদ সদস্যরা সরকারের প্রতি র্যাব বিলুপ্তি এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।
চিঠির শেষাংশে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যেকোনো বিলম্ব বা অস্পষ্টতা জনগণের মধ্যে হতাশা তৈরি করবে এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতকে ঝুঁকিতে ফেলবে।’