ঢাকা: জুবিন গার্গ ভারতের একজন সঙ্গীতশিল্পী, মারা গেছেন। তবে তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক হয়নি, এই নিয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে এবং আসামের মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আশ্বাস দিয়েছেন এই বিষয়ে।
অসমের ছেলে জুবিনের শেষযাত্রায় তাঁর সম্মানার্থে একগুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ২২ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর ‘ড্রাই ডে’ ঘোষণা করেছেন। এছাড়াও অসমের সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আগামিকাল মঙ্গলবার তাঁর সৎকার হবে। তবে তাঁর আরেকবার মরণোত্তর পরীক্ষা হবে আরেকবার গুয়াহাটিতে।
এইদিন কামরূপ জেলার সমস্ত সরকারি অফিস ২৩ সেপ্টেম্বর বন্ধ থাকবে।
জুবিনের সম্মানার্থে গুয়াহাটি এবং যোরহাটে সমাধি ক্ষেত্রে নির্মাণ করা হবে।
জুবিন গার্গের মৃত্যুতে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রায় সব রাজ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গুয়াহাটি থেকে আগরতলা, অরুণাচল প্রদেশের ঘরে ঘরে দুই দিন ধরে শোকের মাতম চলছে!
এমনকি বাংলাদেশেও স্মরণ করা হচ্ছে জুবিন গার্গকে।
জুবিনের কফিন যখন গুয়াহাটি বিমানবন্দর থেকে বের করা হয়, এক অভূতপূর্ব দৃশ্য তৈরি হয়। লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে।
সবার চোখে পানি। জুবিন জীবনে অর্জন করেছেন মানুষের ভালোবাসা।
জুবিনের নাম ধরে মানুষ পাগলের মত বিলাপ করছে! কারো হাতে ফুল, কেউ এনেছে বিরাট ছবি। জুবিনের কফিনে আসামের ফুলাম গামোছা বিছিয়ে দিচ্ছে।
গোটা শহর অচল হয়ে গেছে, কফিনের সাথে সাথে লাখ লাখ মানুষ হাঁটছে। হাঁটছে ওখানকার পুলিশ প্রধান, মুখ্যমন্ত্রী।
জুবিনের নশ্বর দেহ আসামের মাটিতে নিয়ে যাবার জন্য মুখ্যমন্ত্রী চলে গিয়েছিলেন দিল্লী। মাটিতে হাঁটু মুড়ে বসে শ্রদ্ধা জানান শিল্পীকে।
মদ খেয়ে চুর হয়ে মঞ্চে গিটারের ঝড় তোলা আইয়ুব বাচ্চুর কফিন চিটাগাংয়ে পৌঁছালে গোটা শহর কেনো রাস্তায় নেমে আসে?
কেনো উত্তম কুমারের কফিনের পেছনে গোটা কলকাতা শহর স্তব্ধ হয়ে হাঁটে? কেনো জুবিনের জন্যে সারা দেশ ভেঙে পড়ে?
এই কি তবে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির শক্তি? “গান বাজনার” শক্তি?
হ্যাঁ এটাই গানের শক্তি। শিল্পীর শক্তি। যেখানে তাহসানরা গান বিসর্জন দিতে চান, সেখানে লতা মঙ্গেশকর, জুবিন গার্গরা সারা পৃথিবীকে মাতিয়ে রাখেন, ভালোবাসা কুড়োন গান দিয়ে।
ভারতের জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক ও গায়ক জিৎ গাঙ্গুলী প্রয়াত সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গ-কে স্মরণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি শেয়ার করেছেন। এরপর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘তিন দশকের বন্ধন—সুর, হাসি আর ভ্রাতৃত্বের… আজ তোমার অনুপস্থিতি মেনে নেওয়া অসহ্য ভারী লাগছে। ভালোবাসি তোমায়, বন্ধু জুবিন।’
জিৎ গাঙ্গুলীর মতো আরও অনেক শিল্পী জুবিনকে স্মরণ করে শোক প্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী পাপন, শান, প্রিতম, আরমান মালিক, বিশাল দাদলানি এবং আরও অনেকে।