ঢাকা: সাবেক এনসিপি নেত্রীর তোপের মুখে পড়লেন বর্তমান এনসিপি নেত্রী তাসনিম জারা। জারাকে নীলা তাঁর অতীতের কথা মনে করিয়ে দিলেন।

নিউইয়র্কে ইউনূসের সফরসঙ্গী হয়ে গিয়ে উল্টো ডিম খেতে খেতে বেঁচে গেছেন জারা। আওয়ামী লীগ নারীর সম্মানার্থে তাসনিম জারাকে ডিম ছুঁড়েনি।

এদিকে ডিম কাণ্ডে তাসনিমকে ধুয়ে ফেললেন নীলা। নিজের জীবনের ঘটনা নিয়ে রীতিমতো তোপ দাগালেন সাবেক এনসিপি নেত্রী নীলা ইস্রাফিল।

তাসনীম জারাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলে নীলা বলেছেন, ‘আপনি যতই আধুনিকতার মুখোশ পরুন, যতই শক্তিশালী ভঙ্গিতে দাঁড়ান, ইতিহাস আপনাকে মনে রাখবে নীরব, সুবিধাবাদী, মুখোশধারী নারী হিসেবে।’

পাঠকদের জন্য নীলার পোস্ট হুবহু তুলে ধরা হলো:

‘তাসনিম জারা,আজ যাঁকে ঘিরে করতালি, আলোচনার ঝড়। তাঁর নিঃস্বার্থ উচ্চারণের জন্য প্রশংসা হচ্ছে, তিনি সাহসী,এ কথা শুনে মানুষের মুখ ভরে যাচ্ছে। আমিও বলি, হ্যাঁ, আপনি সাহসী। তবে সেই সাহস কি নিছক ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে বুলি আওড়ানো পর্যন্ত সীমাবদ্ধ?

কারণ আমি জানি আপনার আরেকটা চেহারা। একদিন নাগরিক কোয়ালিশনের প্রোগ্রামে, ডেইলি স্টার্টার অফিসে আমি ভীষণ অসহায় অবস্থায় তুষারের ভয়ঙ্কর ঘটনার কথা খুলে বলেছিলাম। কান্নাভেজা কণ্ঠে আপনার কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম।

আমি চেয়েছিলাম একজন নারী হিসেবে আপনি অন্তত আমার পাশে দাঁড়ান। কিন্তু কী করলেন আপনি? ঠাণ্ডা নীরবতা। ফাঁপা প্রতিশ্রুতি। চোখ ফেরানো। যেন আমার বেদনা আপনার কানে পৌঁছায়নি, যেন আমার ক্ষত আপনাকে স্পর্শই করেনি।

আজ মানুষ আমাকে প্রশ্ন করে, “কেন আপনি তাঁর পাশে দাঁড়ালেন, অথচ তিনি আপনার পাশে দাঁড়ালেন না?”

এই প্রশ্নের জবাব দেওয়া আমার জন্য যন্ত্রণাদায়ক, কারণ সত্যিই আমি আপনার পাশে দাঁড়িয়েছি, তবুও আপনি আমার জন্য একটিবারও এগিয়ে আসেননি। আমার এই অবস্থান আজ আমাকে মানুষের বকা খাওয়াচ্ছে, সমালোচনার ঝড় বইছে আমার দিকে’

এরপর নীলা লেখেন, ‘তাসনিম জারা, আপনি সাহসী,কিন্তু সেই সাহস আসলেই সাহস? নাকি কেবল প্রদর্শনী সাহস? মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাততালি কুড়ানোর সাহস? জনতার সামনে ইমেজ তৈরির সাহস? অন্যায়ের সময় চুপ থাকার সাহস? এটাই কি আপনার রাজনৈতিক চরিত্র?

যেখানে সত্য চাপা পড়ে সুবিধার নিচে? যেখানে অন্যের কান্না চাপা পড়ে আপনার নির্লিপ্ত নীরবতায়? যেখানে একজন নারী হয়েও নারীর পাশে না দাঁড়ানোই হয় মূল দর্শন?তাসনিম জারা, আপনি মুখে শক্ত, কিন্তু কাজে দুর্বল। আপনি কণ্ঠে সাহসী, কিন্তু হৃদয়ে কাপুরুষ। ইতিহাস এ চেহারাকে চিহ্নিত করবেই, কারণ ইতিহাস ভণ্ডামিকে কখনো ক্ষমা করে না।

আপনার কথিত সাহস যদি সত্যিই সাহস হতো, তবে আপনি আমার পাশে দাঁড়াতেন, নীরবতা নয়,একটি অবস্থান নিতেন। কিন্তু আপনি চুপ ছিলেন।

এ চুপ থাকা শুধু আপনার নয়, সমগ্র রাজনৈতিক চরিত্রের দেউলিয়া হয়ে যাওয়া।আজ মানুষ আপনাকে সাধুবাদ দিচ্ছে, প্রশংসা করছে। কিন্তু একদিন এই প্রশংসাই রূপ নেবে ব্যঙ্গচিত্রে।

একদিন মানুষ বলবে,তাসনিম জারা সাহসী ছিলেন, তবে সেই সাহস ছিল কেবল আলো-ঝলমলে মঞ্চের জন্য অন্যের কান্না, অন্যের বেদনা, অন্যের রক্তক্ষরণ তাঁর কাছে মূল্যহীন ছিল।তাসনিম জারা, আপনার এই নীরবতা আপনারই শিকল। আপনি যতই আধুনিকতার মুখোশ পরুন, যতই শক্তিশালী ভঙ্গিতে দাঁড়ান,ইতিহাস আপনাকে মনে রাখবে নীরব, সুবিধাবাদী, মুখোশধারী নারী হিসেবে।

শুধুমাত্র উচ্চ শিক্ষিত হলেই হয় না সাথে মানবিক হতে হয়। আর আপনি একজন মানবিক নারী নন।’

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *