ঢাকা: শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর থেকেই বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক একদম তলানিতে ঠেকেছে। তবে এমনি এমনি টেকেনি। তার কারণ অন্তর্বর্তী সরকারের কাজকর্ম। মুহাম্মদ ইউনূসের কথাবার্তা। সব মিলিয়ে ভারত তিতিবিরক্ত বাংলাদেশের প্রতি। ব্যবসা বাণিজ্য প্রায় বন্ধ বাংলাদেশের সাথে এখন।
এদিকে, মঙ্গলবার সকালে পাঞ্জাবের লুধিয়ানার হোসিয়ারি এবং টেক্সটাইল শিল্পপতিরা একটি প্রতীকী প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের সময় দেশীয় শিল্পের উপর ক্রমবর্ধমান হুমকি এবং এই দেশগুলির সংহতির অভাবের প্রতি তাদের হতাশা প্রকাশ করে তুরস্ক এবং বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পোশাক বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। তুরস্ক ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে একদম ৯০° ঘুরে গিয়েছে। আর বাংলাদেশের সাথে তো সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের দহরম মহরম সম্পর্ক।
সিমেট্রি রোডে নিটওয়্যার ক্লাবের অফিসের বাইরে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভে আমদানি করা পোশাক পুড়িয়ে ফেলা হয়। পোশাক পুড়িয়ে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করা হয়। নিটওয়্যার ক্লাবের চেয়ারম্যান বিনোদ থাপার বলেন, এই প্রতিবাদ জনসাধারণ এবং সরকারকে জাগ্রত করার জন্য একটি প্রতীকী পদক্ষেপ।
“আমরা আমাদের ক্ষোভ প্রকাশ করার জন্য কয়েকটি পোশাক পুড়িয়েছি, কেবল এই আমদানিগুলি যে অর্থনৈতিক হুমকির সৃষ্টি করছে তা নয়, বরং তুরস্ক এবং বাংলাদেশের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তোলার জন্য, যারা পাকিস্তানের সাথে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে ভারতকে সমর্থন করতে ব্যর্থ হয়েছে”।বলেন।
অথচ ভারত ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তুরস্কের ভয়াবহ ভূমিকম্পের সময় মানবিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল, কিন্তু তারা পাকিস্তানের পক্ষে ছিল। ভারতীয় নাগরিকদের বিদেশীদের চেয়ে স্থানীয়দের বেছে নেওয়ার সময় এসেছে, থাপার বলেন।
উল্লেখযোগ্য যে, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে তুরস্কের ভারত-বিরোধী অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে ৷ ভারতের বিরুদ্ধে সংঘাতে পাকিস্তানকে ড্রোন দিয়ে সাহায্য করেছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী এর্দোগান৷ এই অবস্থায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে তুরস্ককে বয়কটের ডাক উঠেছে ৷ বহু ভারতীয় পর্যটক তুরস্কে ঘুরতে যান ৷ তাই তুরস্কের একটা পর্যাপ্ত পরিমাণ রাজস্বের উৎস ভারত ৷ কিন্তু তুরস্কের ভারত বিরোধী অবস্থানের জন্য ভারতীয়রা সেদেশকে বয়কট করতে বাধ্য হয়েছেন ৷ এর ফলে ৭০ শতাংশ মানুষ তুরস্কে ঘুরতে যাওয়া বাতিল করেছে ৷
সালটা ২০২৩ প্রবল ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে তুরস্ক। তখন ভারত প্রথম দেশ যারা ভূমিকম্প পীড়িত দেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল। সেই সময় অপারেশনের নাম রাখা হয়েছিল অপারেশন ‘দোস্ত’। সেই সময় আঙ্কারার পাশে দাঁড়িয়েছিল নয়াদিল্লি।
নিটওয়্যার ক্লাবের সভাপতি দর্শন দাওয়ার বলেন, “ভারতে, তুর্কি এবং বাংলাদেশি পোশাক গর্বের সাথে তাদের দেশের লেবেলে বিক্রি হচ্ছে। এখন আমাদের জায়গা স্পষ্ট করার সময় এসেছে – জাতি, দেশ সবসময় প্রথমে। যদি আমরা ভারতকে সমর্থন না করে এমন দেশগুলির ব্র্যান্ডগুলিকে প্রচার করতে থাকি, তাহলে আমরা অর্থনৈতিক এবং জাতীয় উভয় স্বার্থের ক্ষতির সাথেই আপোস করছি।