কুষ্টিয়া: আমরা বলছি না লালন উৎসবে মৌলবাদীদের আঁচড় থাকলে ভালো হতো! কারণ মৌলবাদীহীন একটা দেশ শান্তির আখড়া হয়।
লালন উৎসবেও মৌলবাদীদের কোন বাধা নাই। সোজা চোখে দেখলে ব্যাপারটা বেশ ভালো। তবে বিষয়টি জটিল।
ইউনুস ও জামাতদের ভোট বাক্স ভরার এটা একটা কৌশল হতে পারে। কারণ মাছ খায় না এমন বিড়াল যেমন বিরল তেমন উগ্র মৌলবাদ হঠাৎ লিবারেল হয়ে যাওয়াও বিরল।
দুষ্টের ছলের অভাব নেই। ভোটে জিতে একবার ক্ষমতায় এলে তখন নখ দাঁত বের করতে সময় লাগবে না।
ইউনূস যেমন ম্যাজিক জানেন, তা অবিশ্বাস্য। একটা গোটা দেশ নিয়ে খেলছেন অনায়াসে। বাধা দেয়ার কেউ নেই।
লালন ভক্তদের মেরে, চুল দাড়ি কেটে দিয়ে, নির্যাতন করে এখন লালন উৎসব করানো হচ্ছে।
এটা চূড়ান্ত লোক দেখানো ছিলো। বিগত এক বছর সমস্ত লালনপন্থি ফকির, সাঁইজিদের গান, সাধন থেকে পিটিয়ে বিরত রেখে, আসরের বাদ্যযন্ত্র ভেঙে দিয়ে, চুল দাড়ি জোর করে কাটিয়ে দিয়ে, আখড়া ভেঙে দিয়ে, মাজার ভেঙে, দেশি শিল্পীদের আয়োজিতব্য কনসার্ট বন্ধ করে দিয়ে, পাকিস্তানি শিল্পীদের অবাধে ভিসা দিয়ে কোলে করে নিয়ে এনে কনসার্ট করানো হচ্ছে।
শারদোৎসব বন্ধ করে দিয়ে, স্কুলে গানের শিক্ষক রাখার বিরোধিতা করে এখন বাণিজ্যিকভাবে ঢাকঢোল পিটিয়ে সিলেক্টিভ লোকজনদের এনে লোকদেখানো কোটি টাকা হাতানোর উৎসবে আসল লালনের আদর্শ স্মরণ করা হয়নি। এগুলো শুধু ধান্দাবাজি। টাকার খেলা।
এই ধান্দাবাজি দেশবাসী বোঝে। ইউনূস সরকার এত সরল নয় যে এত সহজে লালন উৎসব করিয়ে নেবে!
লেখক তসলিমা নাসরিন বলেন, ‘কুষ্টিয়ার লালন উৎসব জমজমাট। লালনের মূর্তি ভেঙেও, বাউল গানের উৎসব পণ্ড করেও জিহাদিরা লালন মেলার জনপ্রিয়তা বন্ধ করতে পারেনি। মানুষ এখনও হয়তো ভেতরে ভেতরে অসাম্প্রদায়িক’।
যাই হোক, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’—আধ্যাত্মিক এই বাণীকে সামনে রেখে লালন ভক্ত ও অনুসারীরা কুষ্টিয়ার আখড়াবাড়িতে জড়ো হয়ে নিজেকে ও অজানাকে জানছেন, সাধু-সঙ্গে সহজ মানুষের সন্ধান করছেন।
লালন ফকিরের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে তিন দিনের লালন স্মরণোৎসবের আজ ১৯ অক্টোবর শেষ দিন।
দেখা গেছে, এবার স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভক্তরা ভবের হাটে ভিড় করেছেন।
