ঢাকা: মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের বিচার বিভাগে বেকসুর খালাস পেল রংপুরের কুখ্যাত রাজাকার ও জামায়াতে ইসলামের সহ-জেনারেল সেক্রেটারি এটিএম আজহারুল ইসলাম। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের দেশ বড় চড় খেলো গালে।
জামাত নেতা এটিএম আজহার কারামুক্ত হয়ে হাজারো নেতাকর্মীর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বীরদর্পে এগিয়ে চলেন শাহবাগের সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে।
অথচ তার ঠিক পেছনেই শতশত গাড়ি আটকে থাকে আর বারেবারে সাইরেন বাজিয়ে চলে দুটি নিরুপায় এ্যাম্বুলেন্স। এম্বুলেন্সের সাইরেনে কারো ভ্রুক্ষেপ নেই। নেতা দেখাচ্ছেন ‘ভি’, কর্মীরা দিচ্ছেন স্লোগান। আর এম্বুলেন্সে রোগী ছটফট করতে করতে ধিক্কার দিচ্ছেন এই দেশে জন্ম নেয়ার।
মুক্তি পেয়ে জনতার উদ্দেশ্যে এটিএম আজহার- ‘আমি এখন মুক্ত, আমি এখন স্বাধীন’।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পাওয়া জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম কারামুক্ত হয়েছেন। দীর্ঘ ১৪ বছর পর তিনি বুধবার সকালে কারামুক্ত হন। এ সময় তিনি বলেন, আমি এখন মুক্ত, আমি এখন স্বাধীন।
আমি এখন স্বাধীন দেশের একজন স্বাধীন নাগরিক। বুধবার (২৮ মে) কারামুক্তির পর রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর পর আমি আজ ছাড়া পেয়েছি। আমি এখন মুক্ত, স্বাধীন আলহামদুলিল্লাহ। আমি এখন স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। আল্লাহ তৌফিক দিলে অবশ্যই বাকি জীবন আপনাদের সঙ্গেই থাকব। ইনশাল্লাহ।
এটি কেবল আমার মুক্তি নয়, এটি দীর্ঘ লড়াইয়ের ফল। আমাকে একটি অন্যায় ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সত্য চিরকাল গোপন থাকে না। আজ সে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমি দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় আদালতকে ধন্যবাদ দিতে চাই। তবে এটা সত্য যে, দেশে এতদিন ন্যায়বিচার ছিল না।
বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের অনেক ভাইকে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে।
আমার আইনজীবীরা দীর্ঘ সময় ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তারা সঠিক তথ্য-উপাত্ত, দলিল ও যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, এই মামলার কোনো ভিত্তি ছিল না। আল্লাহর রহমতে আমি আজ মুক্ত। কিন্ত যারা নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন তাদের আর ফেরানো যাবে না।
এদিন সকাল সোয়া ৯টার দিকে মুক্তি পেয়ে তিনি শাহবাগে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতারা।