ঢাকা: বইমেলা নিয়ে সাম্প্রদায়িক সরকারের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এবার নাকি আবার বৈষম্য বিরোধী বইমেলা হবে? নতুন নাম না? হ্যাঁ, এখন দেশে সব বৈষম্য বিরোধী কার্যকলাপ। বইমেলাও বৈষম্য বিরোধী!!
তা বৈষম্য বিরোধী মেলায় কী মুক্ত মানসিকতার যারা বই লেখেন, তাঁদের বই থাকবে? নাহ! তাহলে তা বৈষম্য বিরোধী হয় কী করে?
বইমেলা ফেব্রুয়ারিতেই হতে হবে। বিজয় মেলা মার্চ মাসে যেমন হাস্যকর, বইমেলাও অন্য মাসে হাস্যকর। আর না হওয়া তো চরম নিন্দনীয় কাজ!
নির্বাচনের কারণে ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা অসম্ভব হলে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া হোক বা এগিয়ে আনা হোক। বইমেলার সাথে কম্প্রোমাইজের অজুহাত কেন?
৫২ বাঙালির রক্তে মিশে থাকা এক আবেগের মাস।
জুলাই আন্দোলনের প্রকৃত রূপ ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়ে গেছে। তারা প্রথমে স্লোগান দিয়েছিল— “বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই”, এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে বাংলাদেশে নাটক, ভাস্কর্য, গান, বাউল, সিঁদুর, মন্দির—সব থাকবে। সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
কিন্তু বাস্তবে, এই আন্দোলন ছিল একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আর তার প্রভাব বইমেলায়।
বর্তমানে জঙ্গী গোষ্ঠী কোথাও কোনো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালাতে দিচ্ছে না। ‘তৌহিদার জনতা’ নামে একের পর এক হামলা চলছে—মাজার, বইমেলা, বসন্ত উৎসব, ভালোবাসা দিবস, নাট্যোৎসব—কোনো কিছুই রেহাই পাচ্ছে না। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নের প্রতি প্রকাশ করা হচ্ছে তীব্র ঘৃণা।
দেশের শিল্প-সংস্কৃতি আজ ভয়াবহ সংকটের মুখে।
অবশ্য এইসব কথা ভুলেও স্বীকার করবেন না শফিকুল সাহেব।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, বইমেলা দেরি হলেও হবে। এটা নিশ্চিত। তবে এবারের বইমেলা নির্দিষ্ট কারও বইয়ের হবে না। এবার বৈষম্য বিরোধী মেলাটি হবে সবার।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বৈষম্য বিরোধী সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি আয়োজিত ‘কেমন বই মেলা চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এইসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা এমন একটা বইমেলা চাই, যে বইমেলায় আমাদের সব মানুষের বই থাকবে। আমরা যারা বই লিখি, যে যেইটাই লিখুক কেন, যে কোনো ভিন্ন মতের লেখাই থাকুক না কেন, সবার বই যেন বইমেলায় থাকে। পাঠক বেছে নেবেন—উনি কি যেটা পড়তে চান, যে বই তাকে টানে উনি ওই বইটা কিনবেন।’
তিনি বলেন, আমরা চাই এমন একটা মেলা, অবশ্যই সেটা বৈষম্য বিরোধী। কারও প্রতি যেন বৈষম্য না করা হয়। কেউ যেন এসে না বলেন যে না, আমার প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে। আমি যে বইটা প্রকাশ করতে চাচ্ছি বা বিক্রি করতে চাচ্ছি, এটা এখানে করা যাচ্ছে না। এই কথাটা যেন না শোনা হয়।
প্রেস সচিব বলেন, আমরা অবশ্যই এমন কোনো বইমেলা চাই না যেখানে ৪০% বই হচ্ছে একটা লোকের উপরে। এমন একটা বইমেলার সময় গিয়েছে। আপনি বই দেখবেন, সবই হচ্ছে শেখ পরিবারের বই। উনি টুঙ্গিপাড়ায় পুকুরের পাশে বসে আছেন, সেটা নিয়েও একটা বড় বই কেউ লিখে ফেলেছে। ওই বইগুলো ছিল— কোনোভাবে প্রতারণা করে কিছু টাকা-পয়সা কামানোর জন্য।
