ঢাকা: নারীরা যদি ৫ ঘন্টা কাজ করে, আর পুরুষরা সেই ৮ ঘন্টা–কোন কোন প্রতিষ্ঠান তাদের ৮ ঘণ্টার সমপরিমাণ বেতন দিয়ে চাকরিতে নিয়োগ দিতে বা চাকরিতে রাখতে রাজি আছে – তা নিয়ে একটা গণভোট করা হোক।

জামায়াতের ভাঁওতাবাজি তখন উড়ে যাবে। জামায়াতের মিষ্টি মিষ্টি কথায় নারীরা ধরা দিলেই খেল খতম। জামায়াত তো তাই চাইছে।

৫ ঘন্টার কাজে প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক ও কাজের যে ক্ষতি হবে তা কে দেবে? সরকারী ভর্তুকি? সেই ভর্তুকির টাকা কোত্থেকে আসবে? জনগণের ট্যাক্স? জনগণের কোনো দরকার এই বাড়তি টাকা দেয়ার?

আর তখন যেটা হবে, সেটা বুঝতেই পারছেন। এত আরাম আয়েশে নারীদের কেউ নিয়োগ দিতে আগ্রহী হবে না। আর জামায়াত তাই চায়। মানে সোজা করে না খেয়ে উল্টো করে খাচ্ছে আরকি জামায়াতের দল।

অনেকে হয়তো ভাবছেন, জামায়াত নারীদের জন্য কত ভাল ভাল চিন্তা করছে, ইনসাফের কথা বলছে। আদতে তা নয়। মায়েদের কাজের সময় নিয়ে নাহলে জামায়াতের এত তাড়া কেন?

নারীদের সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন হিসেবে দেখাই তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ। দেশের ৫১% জনগোষ্ঠী নারী। তাই টান দেয়ার চেষ্টা আরকি।

তা জামায়াত মূলত কী বলছে, একটু শুনি:

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ক্ষমতায় গেলে মায়েদের কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারও অব্যাহত রাখার কথা বলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি আমেরিকানদের আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন তিনি।

নিউ ইয়র্ক সিটির এস্টোরিয়া ওয়ার্ল্ড মেনারে ‘কোয়ালিশন অব বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন’-এর আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘একজন মা সন্তান জন্ম দিচ্ছেন, লালন-পালন করছেন এবং ক্ষেত্রবিশেষে পেশাজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

পুরুষ ৮ ঘণ্টা কাজ করলে নারীরও সমান সময় দেওয়া কি ন্যায্য? আমরা ক্ষমতায় এলে তাদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে ৫ ঘণ্টা করব, যাতে মা হিসেবে তারা সন্তানের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে পারেন।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা যদি সুযোগ পাই, মায়েদের বাড়তি আরেকটু সম্মান করবো, সেটা হবে তাদের প্রতি ইনসাফ। একজন মা তার সন্তানকে জন্ম দিচ্ছেন, লালন-পালন করছেন; আবার ক্ষেত্র বিশেষে তিনি একজন পেশাজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। আমারও ৮ ঘণ্টা, তারও ৮ ঘণ্টা, এটা কি অবিচার নয়?

আমরা ক্ষমতায় গেলে ইনশাল্লাহ তাদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দেব। মা হিসেবে সন্তানের হক আদায় করার জন্য এবং মা হিসেবে তাকে সম্মান করার জন্য।

আমরা যদি ৮ ঘণ্টার জায়গায় ৫ ঘণ্টা করি, তাহলে মায়েরা এতই কমিটেড যে; তারা চিন্তা করবে সরকার যে সম্মান আমাদের দিয়েছে, আমাদের উচিত ৮ ঘণ্টার কাজ ৫ ঘণ্টায় সেরে ফেলা।’

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *