ঢাকা: জামায়াত মিথ্যাবাদী, ধর্মের লেবাসধারীরা যুগ যুগ ধরে এক চরিত্রের রয়ে গেছে।
তবে এখন নির্বাচনের আগে আগে যেভাবে নারীদের কর্মস্থান নিয়ে লেগেছে, এই বিষয়টি আর কৌতুকের পর্যায়ে থাকছে না, নারীদেরকে ঘরে পুরে ফেলার আয়োজন এখন দরজায় কড়া নাড়ছে।
কিছু কিছু নারী তো আর বোঝে না। খেলার ছলে এই বিপদটা দেশের ঘাড়ে টেনে আনবে যারা বোঝে না তারাই।
জামায়াতের লক্ষ্য ঘরবন্দী করা লাখ লাখ কর্মজীবী, শ্রমজীবী নারীকে।
জামায়াত বলছে নারীদের ৮ ঘন্টা কাজ করতে হবে না। তা নারীরা এমনিতেই কাজ পায় না, স্কোপ নেই। তার মধ্যে যদি ৫ ঘন্টা কাজ করে তাহলে তো হয়েই গেছে।
৫ ঘন্টা কাজ মানে ওটা একটা ট্রাপ যেটা আস্তে আস্তে ঘরের কোণে পাঠিয়ে দেবে নারীদের! ওমেন নেভার এভার ট্রাস্ট এনি ট্রাপ!
জামায়াত ইসলাম ক্ষমতায় গেলে নারীরা কিভাবে চাকুরী করবে এমন চিন্তা রয়েছে অনেক নারী সমাজে কিংবা অনেক সুশীল পুরুষ সমাজেও।
কিন্তু জামায়াতের আমীর নারীদের জন্য পাঁচ ঘন্টা কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার নিশ্চিত করবেন বলেছেন।
আবার যে তিন ঘণ্টা করে ক্ষতি হবে কোম্পানির সেই টাকা নাকি সরকার দেবে!? চিন্তা করা যায়? সরকার কী নারীদের জীবনের ঠিকা নিয়ে বসেছে?
এই বিষয়ে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান কি ঐক্যমত হবেন? যেমন ধরুন গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান।
বলা যায় গার্মেন্টসের নারীরাই মালিকদের পকেটে ডলার আনার অন্যতম কারিগর। সকাল ৮ টা থেকে শুরু করে রাত ১২ টা, ১ টা পর্যন্ত নারীরা কাজ করে।
জামাতে ইসলাম যদি ক্ষমতায় এসে নারীদের ৫ ঘন্টা কর্মপরিবেশে নামিয়ে আনেন, সেক্ষেত্রে মালিক পক্ষ বিজিএমইএ এটা মেনে নেবেন?
মানবেন না এটাই নিশ্চিত। শুধু তারাই নয়, কোনো প্রতিষ্ঠান মানবে না। তাই অনুভূতি নিয়ে রাজনীতির মানে নেই।
জামায়েত ইসলামের নেতারা প্রতিটা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নারীদেরকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখাচ্ছে। তারা বলছে নারীদেরকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেবে তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করবে, এ থেকে জেড পর্যন্ত সব কিছু নারীদেরকে দিয়ে দেবে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যদি বাংলাদেশের নারীদের প্রতি এতই ভালোবাসা থাকতো এতই দরদ যদি থাকতো তাহলে আপনি কি কারণে নারীদেরকে পাঁচ ঘন্টা ডিউটি করে দেবেন বলেছেন?
যেখানে প্রাইভেট সেক্টরে কোন নারী যদি গর্ভবতী হয় তাকে ছয় মাসের জন্য ছুটি প্রদান করার কথা ছিল। কিন্তু প্রাইভেট সেক্টাররা ছয় মাসের ছুটি সেটাই মানতে চায় না। এমনকি গর্ভবতী হলে অনেক নারীর চাকরি পর্যন্ত চলে যাচ্ছে।
সেই জায়গায় জামায়েত ইসলামের আমির শফিকুর রহমান গংদের দল নারীদেরকে নাকি পাঁচ ঘন্টা ডিউটি করে দেবে তারা ক্ষমতায় গেলে।
এরা কতটা মিথ্যাবাদী, তা তো আর আলাদাভাবে দেখানোর প্রয়োজন নেই।
এই জামায়েত ইসলামী ৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে বাংলাদেশের নারীদেরকে তুলে দিয়েছিল।
জামায়েত ইসলামের আমির যা বলছেন সম্পূর্ণ মিথ্যা ভন্ডামি এবং বাংলাদেশের নারীদের সাথে ছলচাতুরি করছেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তার দল ক্ষমতায় গেলে কর্মজীবী নারীদের জন্য আট ঘণ্টার পরিবর্তে পাঁচ ঘণ্টা কর্মসময়ের ব্যবস্থা করা হবে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর ঢাকা-১৫ আসনের পূর্ব সেনপাড়ায় আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এই প্রস্তাব তুলে ধরেন।
ডা. শফিকুর রহমান জানান, “নারীদের কর্মঘণ্টা কমানোর বিষয়টি অবাস্তব নয়, বরং এটি বাস্তবায়নযোগ্য উদ্যোগ। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি এতে ক্ষতির মুখে পড়ে, তবে সরকার তাদের জন্য তিন ঘণ্টার সমপরিমাণ ভর্তুকি দেবে।”
তিনি আরও বলেন, “যেসব নারী ঘরে সময় দিতে চান, রাষ্ট্র তাদের অবদানকেও সম্মানের সঙ্গে স্বীকৃতি দেবে।”
সমাজ পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, “আমরা এমন এক সমাজ চাই যেখানে ন্যায়, শুদ্ধতা ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হবে। এই পরিবর্তনের লড়াইয়ে তরুণদেরই নেতৃত্ব দিতে হবে।”
