ঢাকা: বাংলাদেশে ন্যায় আজ অস্ত গিয়েছে। ন্যায়বিচারের বদলে প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদকে ঘিরে দুদকের মামলা জাতির সামনে নগ্নভাবে প্রকাশ করেছে অবৈধ ইউনুস সরকারের কৌশল।
এই কৌশল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার।
দুদকের নামে যে প্রতিষ্ঠানকে ন্যায়বিচারের দূর্গ হিসেবে ভাবা হতো, আজ সেটি পরিণত হয়েছে সরকারের হাতের পুতুলে।
কোনো প্রমাণ ছাড়াই, মিথ্যা তথ্য সাজিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত ব্যক্তিত্বকে টার্গেট করা হয়েছে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য। আর ইউনূসের পা চাটা গোলামি করার জন্য।
দুদক অভিযোগ এনেছে সূচনা ফাউন্ডেশন ‘কাগুজে প্রতিষ্ঠান’, অনুদানের নামে ঘুষ গ্রহণ করেছে, কর অব্যাহতি নিয়ে অবৈধ সুবিধা নিয়েছে এবং সন্দেহজনক লেনদেন করেছে।
বাস্তবতা হলো, সূচনা ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার (এনডিডি) নিয়ে জাতীয় কৌশল প্রণয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত সায়মা ওয়াজেদকে ঘুষখোর বানানো জাতির প্রতি চরম অপমান।
যে সূচনা ফাউন্ডেশনের অফিসে ইউনুস-সমর্থিত উচ্ছৃঙ্খল জনতা ২০২৪ সালের আগস্ট ও ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে, আজ সেটিকেই ‘কাগুজে প্রতিষ্ঠান’ বলা হচ্ছে।
এটি শুধু ভণ্ডামি নয়, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে আড়াল দেওয়ার জঘন্য কৌশল।
উল্লেখযোগ্য যে, সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে দানের অর্থ (প্রায় ৪৪৮ কোটি) আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এতে রাজনৈতিক নেতাসহ সাবেক শীর্ষ কর কর্মকর্তারাও আছেন।
১ সেপ্টেম্বর দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, পুতুলসহ অন্য আসামিরা সূচনা ফাউন্ডেশন নামের নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান গঠন করে এনজিওবিষয়ক ব্যুরো ও সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দিয়ে তাদের কাছ থেকে ডোনেশনের নামে অর্থ আদায় করেন।
পরে সেই অর্থ প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে ব্যয় না করে আত্মসাৎ করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন—সূচনা ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি সায়মা ওয়াজেদ, সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক মাজহারুল মান্নান, ট্রাস্টি ও সাবেক বিসিবি সভাপতি এবং সাবেক সংসদ সদস্য মো. নাজমুল হাসান পাপন, ট্রাস্টি সায়ফুল্লাহ আব্দুল্লা সোলেনখী, ট্রেজারার মো. শামসুজ্জামান, ট্রাস্টি জ্যান বারী রিজভী এবং সূচনা ফাউনডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও ট্রাস্টি প্রাণ গোপাল দত্ত।
এদিকে আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির জন্য পদক্ষেপ নিতে পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ৩ সেপ্টেম্বর চিঠিটি পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্লট জালিয়াতির মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা পুলিশ মহাপরিদর্শককে এই চিঠি পাঠিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে পুলিশ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রেড নোটিশ জারির বিষয়ে চিঠি পাঠানো হবে। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি পাঠানো হবে।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, মামলার তদন্তকালে জানা গেছে, এজাহারনামীয় আসামি শেখ হাসিনা বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাঁর অবস্থান শনাক্ত করে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের মুখোমুখি করার জন্য আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।