সিলেট: ৭০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মবের ভয়ে সিলেটের হযরত শাহপরান (রহ.) মাজারের পবিত্র বাৎসরিক ওরসে শিরনি বিতরণ বন্ধ রাখা হলো।

এর আগে কেবল করোনাকালে একবার এই কার্যক্রম স্থগিত হয়েছিল, কিন্তু কখনো মারামারি বা মবের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

কিন্তু এইবার মবের ভয়ে প্রশাসনের নির্দেশে এই ঐতিহ্য ভেঙে দেওয়া হলো।

মব ভয় পায় সরকার, প্রশাসনও। জঙ্গীরা যা বলবে, যেভাবে বলবে সেভাবেই চলে ইউনূস সরকার। জঙ্গীদের তাবেদারি করে চলা সরকার।

এই কাজ প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

শাহপরান মাজার কারা টার্গেট করেছিল, তা সবাই জানেন।

হেফাজতে ইসলামের বাল্কায়েদাপন্থী কয়েকজন নেতা, “দ্বীনে ফেরা” সেলিব্রেটি, এবং কওমি ঘরানার কয়েকজন সেলিব্রেটি আলেম এই কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন।

তাদের প্রথম চেষ্টাটা সফল হয় নাই, কারণ তখন মাজারের পাগল-ফকিররা এবং বাংলাদেশের সচেতন সিভিল সোসাইটি মেম্বাররা তাদেরকে ঠেকাতে পেরেছিলেন।

কিন্তু এরপর থেকে এরা ধীরে ধীরে চাপ প্রয়োগের লাইন বেছে নিয়েছিল। এবং তাতে সফল হয়েছে।

গত বছর ওদেরকে ঠেকিয়ে দিয়ে ওরশ করা গেছিল যথাযথভাবেই। এবছর আর ত্রাসের কারণে তা করা গেল না।

উল্লেখযোগ্য যে, সিলেটের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হযরত শাহপরান (রহ.) মাজার শরীফ। প্রায় সাত শতাব্দী ধরে এখানে ওরস মাহফিল হয়ে আসছে নিরবচ্ছিন্নভাবে।

তবে এই বছর প্রথমবারের মতো উগ্রবাদী মবের ভয়ে সেই শিরনি বিতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

মাজার কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রশাসনের নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ঐতিহ্য সংরক্ষণকর্মী ও নাগরিক সমাজ পরিষ্কার বলছে, প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত আসলে উগ্রবাদীদের কাছে আত্মসমর্পণ ছাড়া কিছু নয়।

উল্লেখযোগ্য যে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর সারাদেশে অন্তত দেড় হাজার মাজার, খানকা শরীফ, দরগা, আধ্যাত্মিক স্থাপনা, সমাধির ওপর যে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতা এবার শাহপরানের মাজারের ঐতিহ্যবাহী শিরনি বিতরণ বন্ধ করা। এটা উগ্রবাদী জঙ্গিদের পায়ে রাষ্ট্রের মাথানত করার শামিল।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *