ঢাকা: শিক্ষার জায়গাটা কোথায় গেছে এই দেশে, তা কি দেখা হচ্ছে? শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ হাতে ধরে নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে।
কলমের জায়গায় তারা এখন বেশি রামদা চেনে! এটা একেবারেই মিথ্যা নয়। কারণ তাদের হাতে সুপরিকল্পিতভাবে অস্ত্র তুলে দেয়া হচ্ছে। ষড়যন্ত্রমূলক কাজে লাগানো হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।
তবে এইসব ভুলেও কেউ বলছেন না। বললেই চাকরি থাকবে না।
এবছর উচ্চ মাধ্যমিকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী পাশ করতে পারেনি। অবস্থা শোচনীয়।
বোর্ডভিত্তিক ফলাফলে দেখা যায়, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এ বছরের মোট পাসের হার সবচেয়ে বেশি ৬৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার সবচেয়ে কম, ৪৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
এছাড়া বরিশালে ৬২ দশমিক ৫৭, রাজশাহীতে ৫৯ দশমিক ৪০ শতাংশ, দিনাজপুরে ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৫২ দশমিক ৫৭, সিলেটে ৫১ দশমিক ৮৬, ময়মনসিংহে ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং যশোরে ৫০ দশমিক ২০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছেন।
এবং খুব অবাক করা বিষয়, এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় ২০২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষার্থীও পাশ করতে পারেনি।
উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যাও।
এর কারণ হিসেবে বারবার শিক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা এবং দক্ষ শিক্ষকের ঘাটতিকে দায়ী করেছেন কুমিল্লার হোমনা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক তবারক উল্লাহ।
তবে আরো অদ্ভুত কারণও উপস্থাপন করেছেন পঞ্চগড় বোদা পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নার্গিস পারভিন মৌসুমী।
অধিকাংশদের বিয়ে হয়ে যাবার জন্য নাকি পাশ করতে পারেনি তারা। কেন? বিয়ে করেও কী কেউ পড়াশোনা করে পাশ করে না?
এমন উদ্ভট যুক্তি তিনি পেলেন কোথায়?
উল্লেখযোগ্য যে, উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর পঞ্চগড়ে হতাশাজনক চিত্র দেখা গেছে-জেলার তিনটি কলেজ থেকে একজন শিক্ষার্থীও এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেনি।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) পঞ্চগড় বোদা পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নার্গিস পারভিন মৌসুমী বলেন, ‘ভর্তির পর সব শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়ে গেছে। তাই কেউ পাশ করতে পারেনি।’
সকালে ফল প্রকাশের পর জানা যায়, বোদা উপজেলার বোদা পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মাড়েয়া মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং তেঁতুলিয়া উপজেলার আলহাজ্ব তমিজ উদ্দীন কলেজ-এই তিন প্রতিষ্ঠানের সব পরীক্ষার্থী ফেল করেছে।
নার্গিস পারভিন মৌসুমী বলেন, ‘ভর্তি হওয়ার পর সব শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়ে গেছে। এজন্য তারা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারেনি। তাই কেউ পাস করতে পারেনি।’
অন্যদিকে, মাড়েয়া মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সপেন্দ্রনাথ বর্মন শিক্ষক সংকটের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘কলেজের এইচএসসি শাখা ১৪ বছর ধরে এমপিওভুক্ত নয়। চার-পাঁচ বছর ধরে কোনো শিক্ষকও নেই। শিক্ষক সংকটের কারণেই ফল এমন হয়েছে।’
