রাজশাহী: চাঁদাবাজদের পুনর্মিলনীর আয়োজন।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারের বিরুদ্ধে অনুদানের নামে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানলে অনুদান, হাদিয়া, না জানলে চাঁদা।
চাঁদাবাজদের গডফাদার তো এখনো পদযাত্রা করে বেড়াচ্ছে, নাহিদ, হাসনাত, সালজিস! আরেকজন মাহফুজ তো কট খেয়েছে। নিজের বেড়াল বেরিয়ে যাওয়ার ভয়ে অন্যের বেড়ালও বের করে দিচ্ছে!
ন্যাশনাল চাঁদাবাজ এরা। দেশের পিঠে বসে চাবুক মেরে ঘোড়া চালিয়ে চাঁদা আদায় করা এই জঙ্গীদের কাজ। জনগণের কাছে এখন সব পরিষ্কার।
” সর্বদলীয় বৈষম্যহীন চাঁদাবাজ ” বলতে হবে এদেরকে। নর্দমার কিটগুলো সমাজ ধ্বংসের মূল!
এর আগে রিয়াদের চাঁদাবাজির উদাহরণ কেবলমাত্র গুলশানের ঘটনা না। বরং এটা টিপ অব দ্য আইসবার্গ। সিসিটিভি ফুটেজ থাকায় সে এই ঘটনায় ধরা খেয়েছে।
কিন্তু তার এমন চাঁদাবাজির উদাহরণ অসংখ্য। ICT মামলায় নাম ঢুকিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বা আরো হুমকি দিয়ে অনেক পুলিশ অফিসারের থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছে। এসপি ও ওসির বদলি বাণিজ্য করেও হাতিয়েছে কোটি টাকা। করেছে নিয়োগ বাণিজ্যও।
এসব কি এই ছেলে তার একার বুদ্ধিতে করেছে কিংবা চাঁদার ভাগ কি একাই নিয়েছে? মোটেও না। এই রিয়াদের গডফাদার হলো সাবেক উপদেষ্টা নাহিদের বাবা। সে যত চাঁদাবাজি করেছে সবই পার্টি ফান্ডের নামে। নাহিদের বাপই ছিলো মূল শেল্টারদাতা ও চাঁদাবাজি টাকার সিংহভাগ তিনিই পেতেন।
গণঅভ্যুত্থান নামক একটা পাঁয়তারায় এরা ক্যালেণ্ডারের তারিখ পর্যন্ত পাল্টে দিয়েছে। হয়ে গেছে নাকি ৩৬ জুলাই! জঙ্গীপনা কোন পর্যায়ে যেতে পারে!
চব্বিশের ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘৩৬ জুলাই: মুক্তির উৎসব’ কনসার্ট আয়োজনের জন্য ৭০টি প্রতিষ্ঠানের কাছে ৭৬ লাখ টাকা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন এক সাবেক সমন্বয়ক বর্তমানে জঙ্গী চাঁদাবা।
দেশের তো দায় পড়েনি তোমাদের কনসার্টের আয়োজন করার। নিজের দায় নিজেকেই মেটাতে হয়।
আগামী ৫ আগস্ট হওয়ার কথা এই কনসার্ট।ইতোমধ্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশন তাদের দুই লাখ টাকা দিয়েছে।
বিষয়টি সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারের বিরুদ্ধে অনুদানের নামে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সালাউদ্দিন আম্মার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন, অন্তত ৭০টি প্রতিষ্ঠানের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন।
সাধু ভাষায় এগুলো আর্থিক সহায়তা, হাদিয়া এগুলোই হয়।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের দেওয়া চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব সুপারিশ করেছেন।
অনুদান চেয়ে দেওয়া চিঠিতে সই করেছেন রাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার ও ‘ক্যাম্পাস বাউলিয়ানা’ নামের একটি দলের পরিচালক কে এস কে হৃদয়।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনকে (রাসিক) দেওয়া চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দুই লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়। তবে, অনুদান প্রদানের বিষয়ে জানতে রাসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক খোন্দকার আজিম আহমেদকে দুদিনে একাধিকবার কল করা হলেও পাওয়া যায়নি। রাসিক সচিব রুমানা আফরোজের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রশ্ন শুনে কোনো মন্তব্য করেননি।
তবে টাকা দেওয়ার ছাড়পত্রে সই থাকা রাসিকের বাজেট কাম হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘এই বিষয়গুলো প্রশাসক স্যার দেখেন, আমি দেখি না, তাই বলতে পারছি না। টাকার বিষয়ে দেখে আমি পরে আপনাকে জানাতে পারবো।’
ঐ চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘রাজশাহীর গৌরবময় ইতিহাসে ৩৬ জুলাই একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনটি আমরা ‘জুলাই আন্দোলন’ হিসেবে স্মরণ করি, যেখানে বহু তরুণ শহীদ হয়েছিলেন এবং অনেকে আহত হয়েছিলেন গণতান্ত্রিক অধিকারের সংগ্রামে।
এই ঐতিহাসিক ঘটনার একবছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি ‘৩৬ জুলাই: মুক্তির উৎসব’।
এই উৎসবে রাজশাহীর শহীদ পরিবার, আহতদের পরিবার, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং সম্মানিত সমন্বয়কবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য হলো শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও তরুণ প্রজন্মকে তাদের আত্মত্যাগের গল্প জানানো।
এই মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান কামনা করছি। আপনাদের সহযোগিতা পেলে এই আয়োজন আরও সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার
চিঠির কপি ছাড়াও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও ওয়ালটনে দেওয়া প্রস্তাবনা সমকালের হাতে এসেছে। এতে রাবি উপাচার্যের ‘জোরালো সুপারিশ’ রয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘৩৬শে জুলাই ‘মুক্তির উৎসব’ (স্বাধীনতার উৎসব) আয়োজনে আপনার সদয় সমর্থন এবং সহযোগিতা কামনা করছি, যা ৫ই আগস্ট, ২০২৫ তারিখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই অনুষ্ঠানে বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের আমন্ত্রিত অতিথিসহ প্রায় ৪০ হাজার অংশগ্রহণকারী অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এই অনুষ্ঠানে জুলাই মাসের তথ্যচিত্র, শহীদ পরিবারের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং ইন্টারেক্টিভ বিভাগ থাকবে যা জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সমৃদ্ধি তুলে ধরে এবং বৃহত্তর সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যকে উৎসাহিত করে। যেহেতু এটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের দ্বারা আয়োজিত একটি অলাভজনক উদ্যোগ, তাই এই অনুষ্ঠানটিকে একটি দুর্দান্ত সাফল্যের জন্য আমরা বিনীতভাবে আপনার সদয় সহযোগিতা এবং সমর্থন কামনা করছি।
এই চিঠির সাথে আপনার সদয় বিবেচনার জন্য বিস্তারিত অনুষ্ঠানের বাজেট এবং কর্মসূচির রূপরেখা সংযুক্ত করা হয়েছে।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ‘বিষয়টি তো চাঁদাবাজির মতোই হয়ে গেল। একটু ঘুরিয়ে ভিন্নভাবে চাঁদাবাজি করা আরকি!
একজন ছাত্রনেতা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকে এভাবে চিঠি দিয়ে চাঁদা দাবি করতে পারেন কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন তো থেকেই যায়!’
চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমাদের দেওয়া রাসিকের চিঠিটি নিয়ে নোংরামি করা হচ্ছে। অথচ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, ওয়ালটন, যমুনা ব্যাংক, সুলতানস ডাইনসহ প্রায় ৭০টি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে আমরা প্রপোজাল দিয়েছিলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যারের সুপারিশ নিয়ে, যথাযথ নিয়ম মেনেই প্রোপোজাল দেওয়া হয়েছে। আমাদের উপাচার্য স্যার প্রতিটি প্রপোজালে তার সিল, স্বাক্ষর দিয়েছেন। সিটি কর্পোরেশনে আমরা চিঠি দিয়ে বলেছিলাম আপনাদের পক্ষ থেকে যতটুকু করা যায় আপনারা করবেন। আমাদের ব্যানার হবে ৬৮ থেকে ৭২ পর্যন্ত সকল ব্যাচের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজন।
এর আগেও রাসিক বিভিন্ন সংগঠনকে অর্থায়ন করেছে। আয়োজনটা যেন না করতে পারি সেজন্য এটা নিয়ে এক পক্ষ নোংরামি শুরু করেছে। আমার পেছনে সব পক্ষ লেগে রয়েছে।’
তো অনেকে আবার চাঁদাবাজি বলতে লজ্জা পান, একে নাম দিয়েছেন স্পন্সর। ওরে বাবা, দেশবাসী চাঁদা আর স্পন্সর ও বোঝে না এখন।