গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের মায়েরা এত বেদনা কোথায় রাখবে?
ইউনূসের চকিদার সেনাবাহিনী যে ভূমিকা নিলো, তাতে ১৯৭১ এর পাকিস্তানী আর্মির ছাপ ভেসে উঠেছে।
এত নৃশংস, ভয়াবহ হতে পারে? জামাত শিবিরে ভরিয়ে ফেলেছে পুলিশ, সেনাবাহিনী। ফলে তাদের কাজ তারা নিশ্চিন্তে করে চলেছে।
বুটের নিচে ইমনের মাথা। ছবি দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন মা।
বলতে শুরু করলেন, “আমার ছেলেরে গুলি দিছে। গুলি দেওয়ার পর তারে পাছড়াইয়া পাড়ায়া পাড়ায়া মারছে। গলায় পাড়া দি তারে মাইরে ফালাইছে। মাইরে আবার তারে সরায় রাখছে। আমি কোথাও খুঁইজে পাই না। ক্যাম্পে যাই, থানায় যাই।
“তারপরে লাশটা সন্ধ্যার সময় অ্যাম্বুলেন্সে পাঠাই দিছে হাসপাতালের ধারে। আমি গিয়া দেখি হাসপাতালের ট্রলিতে কেবল উঠায় রাখছে অ্যাম্বুলেন্স থেকে। আমার ছাওয়ালডারে এমনে মাইরে ফেলল ক্যান।”
এই ক্যানের জবাব ইউনূস সরকার দেবে না গো মা!
গোপালগঞ্জ জেলার হরিদাসপুর ভ্যারার বাজারের বাসিন্দা, তরুণ ইমন তালুকদার—বয়স আনুমানিক ১৮ থেকে ১৯ বছর—তার পরিবারের ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে সামান্য হাড়ি পাতিলের দোকানে কাজ করত।
বিভৎস দিনে দুপুরের দিকে সেনাবাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হঠাৎ তাকে আটক করে।
আটক করার পরপরই ইমনের ওপর নেমে আসে বর্বরতা; তাঁর বুকে, মুখে, গলায় অনেকবার বুটের লাথি মারা হয় এবং তাঁকে রাস্তায় টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ছবি সেনা কীভাবে এইদিন মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে তার স্পষ্ট পরিচয় দিচ্ছে।
সন্ধ্যায় হাসপাতালের মর্গে অচেতন দেহের পাশে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ইমনের উরুতে গুলির দাগ স্পষ্ট ছিল—চরিত্রহীন নিষ্ঠুরতার নিদর্শন হয়ে।
দেশে সঠিক বিচার ও মানবিকতার অভাব আজ সাধারণ মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
ঘটনায় স্বজনেরা বিলাপ করছেন, প্রতিবেশীরা আফসোস করছেন।
ছেলের শোকে বাক্রুদ্ধ হয়ে বসে আছেন নিহত ইমন তালুকদারের (১৭) মা রোকসানা বেগম।
নিহত ইমন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার গ্রামের আজাদ তালুকদারের ছেলে।
ইমনের মায়ের মুখে একটি শব্দও নেই।
নিহত ইমনের মামাতো ভাই রানা ভূঁইয়া বলেন, আমার ভাইডারে প্রাণে মাইরে ফ্যালতে হলো। ও তো প্রাণভিক্ষা চাইছেল। তারপরেও কেন মারতে হলো? কীভাবে মারলো, আমরা তো ভিডিওতে দেখলাম। কীভাবে সহ্য করবো? গুলি করে ফেলে পাড়ায় ধরে মাইরা ফেললো।
ইমনের মা রোকসানা বেগম বলে ওঠেন, এখন আমার সংসার বাঁচাবার মতো আর কেউ নাই। ছাওয়াল মরসে শুইনা ওর বাপ পাগল হইয়া চইলা গেছে। আমার বাপে সংসারটা টানতো।
এখন আমার চারটে-পাঁচটা ছেলেমেয়ে নিয়ে থাকার কোনো পথ নাই, বাঁচার পথ নাই। আমার ছেলেরে যেমন পাড়ায় মারছে, গুলি করে মারছে, আমি এর বিচার চাই।
আহারে! এই বাংলাদেশে কে করবে বিচার?