ঢাকা: চলে যাচ্ছেন একে একে মেধাবী জনেরা! মেধাশূন্য হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কেউ প্রবাস জীবনযাপন করছেন, কেউ বা চিরতরে বিদায় নিয়েছেন।
অবশ্য দেশের জঙ্গী অবস্থা এই মানুষগুলো সহ্যও করতে পারতেন না।
দেশের খ্যাতিমান ভাস্কর ও অনন্য চিত্রশিল্পী হামিদুজ্জামান খান আজ চলে গেলেন পৃথিবীর মায়া ছেড়ে।
আজ রবিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ফর্ম, বিষয়ভিত্তিক ও নিরীক্ষাধর্মী ভাস্কর্যের জন্য তিনি সুপরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণায় নির্মিত একাত্তর স্মরণে শীর্ষক কাজের জন্য তিনি ভাস্কর হিসেবে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশে খ্যাতি লাভ করেন।
পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের রাজধানী সিউলে অলিম্পিক ভাস্কর্য পার্কে ভাস্কর্য স্থাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিসরে পরিচিতি অর্জন করেন।
কিশোরগঞ্জে তাঁর জন্ম। হামিদুজ্জামান খান ১৯৪৬ সালের ১৬ মার্চ কিশোরগঞ্জ জেলার সহশ্রাম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের আধুনিক ভাস্কর্যের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত।
১৯৬৭ সালে ঢাকা আর্ট কলেজ (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) থেকে চারুকলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৭৬ সালে ভারতের বরোদা মহারাজা সাহজিরাও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৭০ সালে তিনি ঢাকা আর্ট কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং দীর্ঘকাল শিক্ষকতা করেছেন।
তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সংশপ্তক’।
এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে ‘শান্তির পায়রা’, বঙ্গভবনের ‘পাখি পরিবার’, বাংলা একাডেমিতে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ এবং সিলেট ক্যান্টনমেন্টে ‘হামলা’ তাঁর উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম।
তিনি ডেঙ্গু এবং নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তিনি স্ত্রী ভাস্কর আইভি জামান, দুই পুত্র ও দেশ-বিদেশে অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।