ঢাকা: বাংলাদেশের অর্থনীতি এমনিতেই ভেঙে পড়েছে ১১ মাসে। এবার আমেরিকার শুল্কচাপে বাংলাদেশের বাজার আরো খারাপ হতে চলেছে।

ইউনূস সরকারের সব চাইতে বড় বাণিজ্য সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ ছিল এই ট্রাম্প শুল্ক যা এপ্রিল মাসে ঘোষণা করা হয়।

কিন্তু দেখা গেছে,বাংলাদেশ এপ্রিলে কোন শক্ত অবস্থান না নিয়ে বা ঘোষণা না দিয়ে, সময় ক্ষেপণের পলিসি নেয়। ৯০ দিন সময় চায়। যেটা অতিরিক্ত চালাকির ফল ভুগছে এখন দেশ।

ট্রাম্পের চিঠিতে এটা স্পষ্ট বাংলাদেশ কোন সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি আমেরিকান বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর। যেটা ছাড়া এই শুল্ক কমবে না।

আসলে অতিরিক্ত গা ঘেষানো ভাব বাংলাদেশকে ডুবিয়েছে। আমেরিকা বরাবর নিজের ব্যবসা বুঝে।

বাংলাদেশের উপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন যা আগামী পহেলা আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

এবং বাকি যেসব দেশে ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক আরোপ করেছিল সেসব দেশ কূটনৈতিকভাবে আলোচনা করে আরোপিত শুল্ক কমিয়েছে।

আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় সব জায়গাতেই ব্যর্থ।

দুঃখের বিষয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় মব কমান্ডার ইউনুসের ব্যর্থ কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য বাংলাদেশের উপর আরোপিত শুল্ক কামাতে ব্যর্থ হয়।

এবং শুল্কের বিরুদ্ধে যদি কোন ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাহলে আরো দ্বিগুন শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দেয়া হয়েছে আমেরিকার পক্ষ থেকে।

আর এই শুল্ক অর্থনীতিতে মারাত্মক ধাক্কা দেবে এটা নিশ্চিত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অনেকটাই নির্ভরশীল।

নতুন এই ৩৫% শুল্ক পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা হতে পারে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের দাম বাড়বে, ফলে ক্রেতার চাহিদা কমে যাবে।

বিজিএমইএ-র সাবেক পরিচালক মো. মহিউদ্দিন বলেন, “বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশে আসেন সস্তা শ্রম ও মূল্যের জন্য। শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়লে তারা বিকল্প খুঁজবে। কেনিয়া, মিশর বা হন্ডুরাস হতে পারে নতুন গন্তব্য। এসব দেশে শুল্ক কম এবং অবস্থানগত সুবিধা রয়েছে।”

সাংবাদিক ও বিশ্লেষক আনিস আলমগীর এক ফেসবুক পোস্টে লিখেন,

“ঘুম থেকে উঠে দেখলাম ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন—আগামী ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব পণ্যের ওপর ৩৫% শুল্ক। আগে ছিল ৩৭%, কমেছে ২%। এটাই ড. ইউনূসের চিঠির মূল্য।”

আনিস আলমগীর বলেন, “আমরা কী করব? পাল্টা শুল্ক বসাব? না চিঠির উত্তর লিখব? ড. ইউনূস শুধু চিঠি লিখেই দায়িত্ব শেষ করেছেন। মাঠে খেলেছেন ট্রাম্প, গোলও তিনিই দিয়েছেন। আমরা দর্শক।”

বলেন, “দেশের ভেতরে বিনিয়োগ নেই, অথচ বাইরের চিঠি চালাচালিতে খুব আগ্রহ। সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ড. ইউনূসের বিদেশ ভ্রমণে। অথচ শুল্ক বেড়ে গেলে সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হবে শ্রমজীবী মানুষ ও রপ্তানি খাত।”

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘ওয়ান টু ওয়ান নিগোসিয়েশনের মাধ্যমে এটা ঠিক হবে। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় ৮ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের বৈঠক হবে।’

বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের বাণিজ্য উপদেষ্টা আছেন। ইউএসটিআরের সঙ্গে আলাপ করবেন তিনি। ওই বৈঠকের পর আপনারা বুঝতে পারবেন।’

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *