ঢাকা: এই দুর্ঘটনা একটা হত্যাকাণ্ড! এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাকবিতণ্ডা চলছেই।
বিমান প্রশিক্ষণ এত ঘনবসতি অঞ্চলে কেন? এর কারণ কী? পুরাতন আনফিট বিমান প্রশিক্ষণের জন্যে কেন?
এতো গুলো প্রাণ ঝরে গেছে। যার যায় সে বুঝে। সারাদেশের মানুষ আজ শোকাভিভূত।
দেশে গত এক দশকে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকবার।
সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গত এক দশকে একের পর এক প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনার পরও মৌলিক পরিবর্তন আসেনি বিমান বাহিনীর বহরে কিংবা নীতিনির্ধারণে।
যুক্ত হয়নি কোনো আধুনিক যুদ্ধবিমান। পুরনো প্রযুক্তির এয়ারক্রাফট দিয়ে চলছে বাহিনীর কার্যক্রম। এমন তো হবেই।
উত্তরায় বিধ্বস্ত হওয়া এফ-৭ সিরিজের বিমানটি ছিল চীনের তৈরি জে-৭ তথা এফটি-৭ বিজিআই। এটি ১৯৬০-৯০ দশকের প্রযুক্তি। এখনো চলছে দেশে।
বর্তমানে এই ধরনের বিমানের দুর্ঘটনার হার অনেক বেশি।
নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের চেয়ে এর দুর্ঘটনার হার বেশি। এর কারণ পুরনো নকশার এয়ারফ্রেম, সীমিত নিরাপত্তা, আধুনিক ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অভাব।
ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর বলেছেন, ‘আমাদের যে ফাইটার জেটগুলো আছে তার বেশির ভাগই আউটডেটেড। যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে সেটার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে ২০১৩ সালেই। আমরা এগুলো আর কতদিন চালাব?
তার ওপর যথাযথ মেইনটেইন করা হয় কিনা সন্দেহ। শুনেছি এখানে অনেক অনিয়ম রয়েছে। যদি সত্যিই তাই হয় তাহলে এই এয়ারক্রাফটগুলো একেকটা ফ্লাইং কফিন। এটাই প্রমাণ করে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা কোন দশায় আছে, আমরা কতটা আনপ্রিপেয়ার্ড।’
তবে ২০১৩ সালের মে মাসে এফ-৭ এর উৎপাদন বন্ধ হলেও বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিশরসহ একাধিক দেশে এই যুদ্ধবিমান ব্যবহৃত হচ্ছে।আর দুর্ঘটনা ঘটছে।
উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে মোট ৪৪টি যুদ্ধবিমান আছে। এবং আশ্চর্য হলো এর মধ্যে ৩৬টিই চীনের তৈরি এফ-৭ সিরিজের। যেগুলোর উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে ২০১৩ সালে। বাকিগুলো সোভিয়েত আমলের মিগ-২৯।
দিনশেষে মানুষের প্রাণের মূল্যে আছে, তাই এগুলোর দিকে নজর দেয়া উচিৎ। তাছাড়া এই ঘটনা ঘটতেই থাকবে।