ঢাকা: বাংলাদেশ কন্যা শিশুর জন্য একেবারেই নিরাপদ নয়। প্রতিদিন ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির শিকার হচ্ছে মেয়েরা। কোথাও নিরাপত্তা নেই, বলতে দুঃখ হয় নিজের বাবা, ভাইদের কাছেও মেয়েরা আজ নিরাপদ নয়। তারা যাবে কোথায়?

সমাজের এই অবক্ষয় কেন? এগুলো অবশ্যই বিচার বিবেচনায় আনা উচিৎ সরকারের!

চলতি বছরের প্রথম আট মাসে (জানুয়ারি-আগস্ট) সারা দেশে ৩৯০ কন্যাশিশু ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২০২৪ সালের প্রথম আট মাসে শিকার হয়েছিল ২২৪ জন। এছাড়া নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫৪ কন্যাশিশু।

শিশু আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১০৪টি। এ সময়ে ৩৪ শিশু অপহরণ ও পাচারের শিকার হয়েছে, যা ২০২৪ সালের দ্বিগুণ।

সংখ্যাগুলো বেশি হতে পারে, কোথাও কোথাও ঘরে ঘরেই থেকে যায় এমন ঘটনাগুলো। বাইরে বের হয় না বিভিন্ন কারণে, চাপে।

তথ্যগুলো উঠে এসেছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের কন্যাশিশুর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতার চিত্র পর্যবেক্ষণ বিষয়ক এক প্রতিবেদনে। প্রেস ক্লাবে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছে এডুকো বাংলাদেশ।

বিভিন্ন সংবাদপত্র ও ফোরামের গবেষণা থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসে মোট ৫৪ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়, যা গত বছরের একই সময়ের দ্বিগুণ। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ২৮।

তবে ২০২৩ সালে ছিল আরো বেশি (১১৭ জন)। এসব যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে পথেঘাটে, যানবাহনে, বাজারে, পাবলিক প্লেসে, এমনকি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বাসাবাড়িতে।

চলতি বছরের এ সময়ে ৩৯০ জন কন্যাশিশু ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। তার মধ্যে ৪৩ জন গণধর্ষণ ও ২৯ জন প্রতিবন্ধী কন্যাশিশু। ধর্ষণ ও গণধর্ষণের পর ১৫ জন কন্যাশিশু খুন হয়েছে ও পাঁচজন আত্মহত্যা করেছে। ২০২৪ সালের একই সময়ে ২২৪ জন ও ২০২৩ সালে ৪৯৩ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়।

২০২৫-এর আট মাসে ৮৩ জন কন্যাশিশু খুন হয়েছে, গত বছর ছিল ৮১ জন। ধর্ষণের পর ১৫ জন, যৌতুকের জন্য ৪, পারিবারিক নির্যাতনে ৩১, পূর্বশত্রুতায় ৯, প্রেমের সম্পর্কের কারণে ৫ জন খুন হয়। ১৯ জন কন্যাশিশুর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যায়নি।

কন্যাশিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের অন্যতম কারণ হচ্ছে আইন বাস্তবায়নে শিথিলতা। আইন নেই, শাসন নেই, দোষীরা জানে দোষ করলেও শায়েস্তা হবে না, তাই দোষ করেই যায়।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *