চট্টগ্রাম: গতবছর জুলাই-আগষ্টে সংঘটিত ‘জঙ্গী ক্যু’ এর ঘটনায় চট্টগ্রামের নিউমার্কেট এলাকায় গুলিতে আহত হওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদসহ ১৮২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
তাও আবার ঘটনার এক বছর পর সোমবার ( ১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে।
এই মামলাটি করেন এ কে এম নুরুল্লাহ (২২) নামে চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী।
এই বিশ্ববিদ্যালয়টি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী জামায়াতে ইসলামী ও তার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের নিয়ন্ত্রণে। মামলার বাদীর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার বগাদিয়া বিন্নাগাঁও গ্রামে।
প্রশ্ন হলো- এভাবে আর কত মিথ্যা মামলা দিয়ে আওয়ামীলীগসহ রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের হয়রানী করবে জঙ্গী ইউনুস সরকার?
মামলার ব্যাপারে জানা গেছে- আদালত বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নগর পুলিশের সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলাম, সাইফ পাওয়ার টেকের এমডি তরফদার রুহুল আমিন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক প্রবীন আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ, শেখ হাসিনার সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক এমপি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সাবেক এমপি মুজিবুর রহমান প্রমুখ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ৪ আগস্ট নগরের নিউমার্কেট সংলগ্ন রেলওয়ে জামে মসজিদের সামনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেন বাদী।
মামলার আসামিদের নির্দেশে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা ও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালান।
সেদিন বাদী গুলিবিদ্ধ হন। বাদীর দুই পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। বাদী চিকিৎসাধীন থাকায় ও জড়িত আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করতে সময় লাগে, যার কারণে মামলা করতে দেরি হয়।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গতবছর সেই ‘জঙ্গী ক্যু’ এর হতাহতের ঘটনায় চট্টগ্রামে দায়ের হওয়া ১৫১টি মামলার মধ্যে ৬৯টি হয়েছে নগর ও জেলার ৯টি থানায়।
বাকিগুলো আদালতে হওয়া নালিশি মামলা (সিআর)। এসব মামলায় নাম উল্লেখ থাকা আসামির সংখ্যা ১৩ হাজার ৪৫০। অজ্ঞাতপরিচয় আসামির সংখ্যা অন্তত: ৩০ হাজার।
আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর নাম যেমন রয়েছে, তেমনি আবার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন, এমন ব্যক্তি, ব্যবসায়ী , সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশার মানুষও রয়েছেন।
থানায় হওয়া ৬৯ মামলায় ১৫ জুলাই পর্যন্ত আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন ১ হাজার ২০১ জন। আসামির বিপরীতে গ্রেপ্তার ৫ শতাংশ। ৬৯টি মামলার মধ্যে ১৫টিই হত্যা-মামলা।
এর মধ্যে এ বছর ২৪ জুলাই চান্দগাঁও থানার শহীদুল ইসলাম নামের এক দোকান কর্মচারীকে গুলি করে খুনের মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ ২৩২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের ছোঁড়া গুলিতে শহীদুল নিহত হয়েছেন। তাঁর বুক, পেট ও পিঠে ১০টি গুলি লাগে।