ঢাকা: বাংলাদেশ বর্তমানে এমন একটি দেশে পরিণত হয়েছে শেখ হাসিনা ছাড়া যেখানে প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকদের চাকরি হারাতে হচ্ছে।

অথচ অন্তর্বর্তী সরকার সেই কথা বেমালুম ভুলে গেলেন। মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর নিজের প্রশংসায় মেতে থাকেন। এবং দেশের বাইরে গেলে এট্রাকশন সিকনেসে ভোগেন।

তাঁর কথা বলার ভঙ্গি এতটাই চতুর থাকে। অথচ ইউনূসের ১১ মাসের কর্মকাণ্ডে দেশবাসীর নাভিঃশ্বাস উঠছে। জনগণের অবস্থা সঙ্গীন। চিকিৎসা, অর্থনীতি, শিক্ষা কোনদিক দিয়ে বাংলাদেশ ভালো আছে?

সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা একেবারেই নেই। অথচ ইউনূস মনে মনে সন্তুষ্ট!

চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস৷

‘মবের হুমকি’, ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’ ইত্যাদি নানা কারণে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ভয়ের সংস্কৃতি চলছে।

সেইদিকে নজর নেই ইউনূসের। তিনি ক্ষমতা দখলের জন্য মরিয়া।

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট, অর্থাৎ গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দু’দিন পর৷

তারপর থেকে বাংলাদেশে খুন ও খুনের চেষ্টার মামলায় আসামি করা হয়েছে ২৬৬ জন সাংবাদিককে৷

সংখ্যাটা এখন আরো বাড়তে পারে।

তাদের মধ্যে ১৩ জন আছেন কারাগারে৷

সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম এবং সাংবাদিকদের প্রসঙ্গ৷

সব সম্ভব এই দেশে।

লন্ডনের চ্যাথাম হাউজের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের ওপর দমন–পীড়নের অনেক খবর পাওয়ার কথা উল্লেখ করে এই ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার মতামত জানতে চান সঞ্চালক৷

জবাবে অধ্যাপক ইউনূস পরিষ্কার বলেন, ‘‘এটা সত্যি নয়৷ তাদের জীবনে এত স্বাধীনতা কখনো ছিল না৷ তারা যা খুশি বলতে পারছে৷”

কিন্তু কোথায়?

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টেলিভিশনের তিন সাংবাদিক- সাবেক সিইও মোজাম্মেল হক বাবু, সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদ ও সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ও উপস্থাপক ফারজানা রুপার অবস্থা দেখুন!

তাঁদের পরিবারের লোকজন বাইরে বেরোতে পারে না মবের ভয়ে।

আওয়ামী লীগ সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে ইউনুস বলেন, যদি একটি সংগঠন হত্যা, গুম এবং রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়, তবে সেটিকে রাজনৈতিক দল বলা যায় কি না, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

তিনি বলেন, “এটা কোনও চূড়ান্ত রায় নয়, বরং একটি বিতর্কের বিষয়।”

তার মতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর মনে হয়েছিল এই অধ্যায় শেষ—কিন্তু যারা দেশত্যাগ করেছিল, তারা এখনো দুঃখপ্রকাশ করেনি বরং জনগণকে উস্কানি দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, “জাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে—দেশ ও রাজনীতির নিরাপত্তার স্বার্থে বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগপর্যন্ত— আওয়ামী লীগের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখতে হবে।”

অথচ এই আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল। মাটির দল।

তখনই আলোচনার সময় বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে দাবি করেন, “গণমাধ্যম এত স্বাধীনতা আগে কখনো পায়নি।”

সাংবাদিক বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ভাঙচুর, সেক্ষেত্রে প্রশাসনের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন।

ইউনূস বলেন, সবকিছু সঠিকভাবে সামলানো সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, “এটা এমন এক ধরনের সময়কাল, যার মধ্য দিয়ে আমরা গিয়েছি। সবকিছুই একসাথে এসেছে। জাতীয় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করাই ছিল আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।”

৫ আগস্টের পর শত শত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া হয়েছে, অনেককে বিনা বিচারে আটক রাখা হয়েছে এবং অনেককে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের দায়িত্ব হলো অন্ধকার থেকে আলো বের করে আনা। পর্দার আড়ালের সত্যকে উন্মোচিত করা।

আর এজন্য তাদেরকে প্রশ্ন উত্থাপন করতে হয়।

কিন্তু এই অবৈধ সরকারের এক উপদেষ্টাকে যৌক্তিক প্রশ্ন করার অপরাধে ৩জন সাংবাদিককে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।

সংবাদ প্রচারের কার্যক্রম পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *