ঢাকা: এ কোন বাংলাদেশকে আমরা দেখছি? আমরা কি এমন বাংলাদেশ আশা করেছিলাম?

যে মা বোনের সম্ভ্রমের, রক্তের বিনিময়ে দেশটা স্বাধীন হয়েছে সেই দেশে আজকের দিনে নারীকে লাথি মারার জন্য গলায় ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেয়া হচ্ছে ধর্ষকদের!

আজ কোথায় দাঁড়িয়ে দেশ? ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে যে সমস্ত নারকীয়, পৈশাচিক ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে এই দেশটাকে পূর্ব পাকিস্তান বলেই মনে হচ্ছে!

তফাত আছে কি কিছু?

একাত্তরে একদল কুলাঙ্গার মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল।

এরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হিসেবে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী গঠন করে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ মানবতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করেছিল।

৫ আগস্টের পর একাত্তরের ঘাতক-দালালদের অপরাধ শতগুণে মাফ হয়ে যাচ্ছে! তাদের অপরাধ মিথ্যে হয়ে যায় না।

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে পারে?

আগষ্টের ৬ তারিখ ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দোলা চৌধুরী’কে নরপশুরা সঙ্ঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে এবং তাঁর শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কুপিয়ে জখম করে!

বোন দোলা’র কান্না দেখে অঝোরে কেঁদেছেন শেখ হাসিনা! কেঁদেছি আমরা, কেঁদেছে বাংলাদেশ!

একের পর এক ১২ জন ধর্ষণ করে তাঁর শরীরের সব জায়গায় কুপিয়ে জখম করেছিল বিএনপি-জামাত।

ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস বিচারও চাইতে পারেনি। একদম ৭১’র মতো! যে একাত্তরে গর্ভবতী মায়েরা পর্যন্ত রেহাই পায়নি!

দোলা চৌধুরীকে নির্যাতন করে এবং শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কুপিয়ে জখম করে।

তারা এই পর্যন্তই ক্ষান্ত হয়নি। তারা দোলা চৌধুরীকে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসাও নিতে দেয়নি।

নির্যাতিত দোলার চোখের জল ভাগাভাগি করে নেন শেখ হাসিনা।

দোলা চৌধুরী তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন:

‘মাননীয় দেশরত্ন শেখ হাসিনার সাথে লাইভ টকশোতে আমার কথা বলার সময়।

৬ই আগস্ট আমার এই ঘটনার পর রাজনীতিতে কেউই আমার খবর নেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি।

কিন্তু সেই থেকে আমাদের অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্নভাবে আমার খবর নিচ্ছেন এবং যোগাযোগ করে যাচ্ছেন।

বাংলার মা প্রধানমন্ত্রী আবারো প্রমাণ করলেন,সন্তানের বিপদে কেউ ছুটে আসুক আর না আসুক মা ঠিকই ছুটে আসেন।

আমি টকশোতে আসার আগে আমার শরীর ও মন ভেঙ্গে পড়ছে সেজন্য উনি চিন্তিত।

অথচ নির্যাতিত মেয়ে দোলার চোখে তাকাতেই মায়ের পাক্কা ২৬ মিনিট চলে গেল।

আমার রাজনীতি জীবন ধন্য মা,
আমাকে আপনার সান্নিধ্যে নিয়েছেন বলে’।

কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন দোলা চৌধুরী। একটা মেয়ের উপর দিয়ে কী ঝড় বয়ে যাচ্ছে তা জানেন দোলা আর দোলার মতো ভুক্তভোগীরা।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি নারীদের যে ব্যাপক সংখ্যায় ও নির্বিচারভাবে ধর্ষণ করেছে তা বিশ্বের যুদ্ধের ইতিহাসে বীভৎসতম ঘটনাগুলোর একটি।

শিশু থেকে বৃদ্ধা, অন্তঃসত্ত্বা, প্রসূতি যাকে ধরতে পেরেছে কাউকেই তারা রেহাই দেয়নি।

দেশের নারীদের পরিস্থিতি দেখে মনে হয় সেই বিভৎস একাত্তর ফিরে এসেছে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *