ঢাকা: এবার বইমেলা ডিসেম্বরে কেন? এই প্রশ্নের উত্তর সবাই জেনে গেছে। যুক্তি যতই খাঁড়া করেন, আপানারা ইউনূস ব্রিগেড কী চাইছেন তা জনগণ খুব ভালোমতো বুঝে ফেলেছে।
রোজা এবং নির্বাচনের খুবই যুক্তি দিলেন। ১৯৮৫ সালে রোজার মাসে, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের জাতীয় নির্বাচনের মাঝেও বইমেলা থেমে যায়নি, তারিখও পাল্টায়নি।
আপনাদের নির্বাচন কী এমন স্পেশাল হতে চলেছে?
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আপনাদের জটিলতা জাতি ইতিমধ্যে বুঝে গেছে। ভাষা নিয়েও আপনাদের সমস্যা এখন।বাংলা ভাষায় কথা না বলে এখন থেকে উর্দুতেই কথা বলুন।
পাকিস্তানবিরোধী কোনো কিছু করা যাবে না। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে—এ কিসের সংস্কার?
অমর একুশে গ্রন্থমেলা শুধু বই কেনাবেচার উৎসব নয়—এটি মহান ভাষা আন্দোলনের রক্তস্মৃতি, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ফেব্রুয়ারির অমোঘ ঐতিহ্য। যে ঐতিহ্যের ভিত্তিতে একুশে বইমেলা দাঁড়িয়ে আছে, তাকে সরিয়ে দেওয়া আরেকটি মেটিকুলাস ডিজাইন।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাস এলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হয়ে ওঠে বাঙালির সাহিত্য-সংস্কৃতির মিলনমেলা।
কিন্তু বৃহস্পতিবার ঘোষণা এসেছে, দেড় মাস এগিয়ে ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে মাসব্যাপী একুশে বইমেলা। এ সিদ্ধান্ত লেখক, প্রকাশক ও পাঠকমহলে তীব্র প্রশ্ন ও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে।
কারণ, এটি নিছক একটি সময়সূচির পরিবর্তন নয়, আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী আয়োজনকে অযৌক্তিকভাবে বিপন্ন করার প্রয়াস।
এতে প্রচুর সমস্যা সৃষ্টি হবে।বছরের শেষ প্রান্তেই লেখকরা তাদের নতুন বইয়ের কাজ শেষ করেন। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতেও অনেকে পাণ্ডুলিপি লেখেন, সম্পাদনা করে চলেন। হঠাৎ সময় এগিয়ে দিলে অধিকাংশ বই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। যারা কোনোভাবে শেষ করবেন, তাদের বইও তাড়াহুড়ো করে প্রকাশকের হাতে যাবে।
এর ফলে প্রুফরিডিং, সম্পাদনা, কভার ডিজাইন—সবই হবে অগোছালো ও মানহীন।
অবশ্য এগুলো বোঝার কথাও নয় ইউনূস জঙ্গীর।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে যে ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে তিনটি নির্বাচন হয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে।
দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি এবং ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি।
তার মানে বোঝাই যাচ্ছে, এর আগে তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হবার রেকর্ড আছে।
কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে অমর একুশে বইমেলা পিছিয়ে বা এগিয়ে দেবার রেকর্ড নাই।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাথে অমর একুশে বইমেলা সাংঘর্ষিক নয়। বরং নির্বাচনের দিন বইমেলা বেশি জমার কথা।
কিন্তু এই তালিবানি সরকার তা মানবে কেন? এরা তো পাকিস্তানি! পাকিস্তানের বিপক্ষে যায় এমন কোনো কাজ এরা করবে না।