ময়মনসিংহ: একজন নারী শিল্পীকে চরমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মুখে চুনকালি মেখে দিয়ে যা ইচ্ছা তাই ভাবে অত্যাচার করা হয়েছে।

ময়মনসিংহে নৃত্যশিল্পী রূপার উপর বর্বরোচিত হামলা, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণের অপচেষ্টা ও তাঁকে রাস্তায় ফেলে হাত পা বেঁধে চুল কেটে, মুখে চুনকালি দিয়ে প্রকাশ্যে নির্যাতনের ঘটনায় জনগণ ধিক্কার দিচ্ছে।

এই এখন হয়েছে বাংলাদেশের সমাজ। চাঁদা না দেওয়ায় ও মামলা করায় ময়মনসিংহে নারী নৃত্যশিল্পীকে মারধর ও চুল কেটে মুখে কালি মেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

গত বুধবারের ওই পৈশাচিক ঘটনার পর ভুক্তভোগীর কালি মাখানো মুখের বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অদ্ভুত এই দুনিয়া।

বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে শিল্পীকে নির্যাতনের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) দোষীদের বিচার ও শাস্তি দাবি করেছে।

ভুক্তভোগী ঐ নারী বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেছেন। মামলার পর ওই দিন রাতে নগরীর জুবলীঘাট এলাকা থেকে শাহ আলম (৪০) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার শাহ আলম নগরীর চর কালীবাড়ি এলাকার মো. রাশেদের ছেলে। তিনি মামলার ৩ নম্বর আসামি।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানতে পারা গেছে, নগরীর বড় কালীবাড়ি লোকনাথ মন্দির এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের একটি বস্তিতে বাস্তুহারা সমবায় সমিতির কাছ থেকে মোটামুটি ১৫ বছর আগে ৩ লাখ টাকায় একটি জমি কিনেছিলেন ঐ নারী নৃত্যশিল্পী।

গত বছর সেখানে আধা পাকা ঘর করতে গেলে সমবায় সমিতির সদস্য শাহ আলম তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করে বসেন। অর্থাৎ চাঁদা না দিলে ঘর করতে পারবেন না।

এদিকে জানা যায়, ১ লাখ টাকা চাঁদা পাওয়ার পর আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। টাকা না পেয়ে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী নৃত্যশিল্পীর বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় তিনি আদালতে মামলা করেন।

নারীকে কম নির্যাতন করেনি ঐ অপরাধী। মামলা করায় প্রতিশোধে গত ৬ এপ্রিল নারীর স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে অপহরণ করেন আসামিরা।

এ ঘটনায় গত ৯ এপ্রিল মামলা করলে আসামি শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিনি জামিনে মুক্তিও পেয়ে যান।

এদিকে ফের ভুক্তভোগীর করা ভাঙচুরের মামলার তদন্ত করতে পুলিশ গত বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যায়।

পুলিশ এসেছে এই ক্ষোভে আসামিরা নারী নৃত্যশিল্পীকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে বেঁধে মারধর করা শুরু করেন, মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালান নারীর ওপর।

চুল কেটে ও মুখে কালি মেখে হেনস্তা করেন। এ সময় তাঁর সামনে মাদক ও টাকা রেখে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে নারীর স্বামী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *