ঢাকা: বাংলাদেশে বন্যা নাকি ভারতের জন্য হয়? এর আগে চিৎকার উঠেছিলো,ডম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় ফেনীতে বন্যা হয়েছে। আসলে কী তাই ছিলো ঘটনা?
ফেসবুকের জ্ঞানে নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখে শুধুমাত্র ভারত বিরোধিতা বাংলাদেশের রক্তে প্রবেশ করেছে। তবে আসল কাহিনী জানতে হবে।
না, ডম্বুর বাঁধের সাথে ফেনীর কোন সংযোগ নেই। তাই এরকম কোনো হয়নি।
ডম্বুর বাঁধ খুলে দেয়ার কারণে ফেনীর মুহুরী নদীতে বন্যা হয়নি আগেও না পরেও না।
কারণ, ডম্বুর বাঁধের অবস্থান ত্রিপুরার গোমতী নদীর উপরে। অর্থাৎ, বাঁধ খুলে দেয়ার ফলে ডম্বুর লেকের জল গোমতী নদী দিয়ে ত্রিপুরার ভিতর দিয়ে কুমিল্লায় প্রবেশ করে দেবীদ্বার, মুরাদনগর, দাউদকান্দি হয়ে মেঘনা নদীতে পড়বে।
ফেনী নদী বা মুহুরী নদীর সাথে এই গোমতী নদীর কোনো সংযোগ নাই। তাই ডম্বুর বাঁধ খোলার ফলে ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির উপর ভৌগলিকভাবেই কোনো প্রভাব পড়ছে না।
তাই অযথা ভারত বিরোধিতার কোনো মানে আছে?
ফেসবুকে সত্য প্রচার হচ্ছে না কেন? কারণ এই ধরনের কাজকর্মের জন্য ফেসবুক চালায় পরীক্ষা বাতিলের দাবীতে সচিবালয় ঘেরাও করা ভারতবিরোধী জেনারেশন।
বর্ষা মৌসুমে অতিবর্ষণে বন্যা দেখা দিতেই পারে। কিন্তু সেই বন্যার জন্য আমাদের দেশের একশ্রেণীর গণ্ডমূর্খ লোক পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতকে দোষারোপ করে থাকে।
গতবছরতো বন্যার জন্য বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়ে ” বদলা” নেয়ার হুমকিও দিয়েছিল টোকাইদের গ্রুপ ( বর্তমান এনসিপি)।
কোন কোন বিশেষজ্ঞ ( বিশেষ ভাবে অজ্ঞ) তো ভারতের জল যাতে বাংলাদেশে আসতে না পারে সেজন্য পর্বতসম বাঁধ দেয়ারও নানা বাগাড়ম্বর করেছিল।
কিন্তু পানি তার স্বাভাবিক গতিতেই প্রবাহিত হবে। এখন বর্ষাকাল। বাংলাদেশ ভারত উভয় প্রতিবেশি দেশেই বৃষ্টি- অতিবৃষ্টি হচ্ছে, হবে।
পানির স্রোতও নামবে ভাটির দিকে, মানে বাংলাদেশের দিকে। আর বাংলাদেশ যদি উজানে থাকতো, ভারত ভাটির দিকে থাকলে ভারতভূমি সয়লাব হতো বাংলাদেশের বন্যার পানিতে। এটাই স্বাভাবিক।
সাধারণ বুদ্ধিতেই তা বোঝা যায়। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের কিছু অকারণ ভারত-বিদ্বেষী লোক ভুল তথ্য দিয়ে, হিন্দু বিদ্বেষ ছড়িয়ে উত্তেজনা ছড়াতে ওস্তাদ।
এখন বর্ষাকাল। অতিবৃষ্টিতে বন্যা হতেই পারে। তবে বাংলাদেশ কতটা প্রস্তুত সেই বন্যা মোকাবিলায়?
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ বীরেন্দ্র খালটির দুই পাড় অবৈধ দখল ও দীর্ঘদিনের দূষণে আজ মৃতপ্রায় হয়ে পড়ে আছে।
এক সময়ের প্রাণবন্ত এই খালটি রূপ নিয়েছে ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে।
বর্ষা এলেই রামগঞ্জে দেখা দিতে পারে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা ও বন্যা। এর দোষ কী ভারতের?
খনন হয় না কেন নদী?
স্থানীয় সূত্রে ও এলাকাবাসীর তথ্যমতে ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় এই খালের পানিপ্রবাহ থেমে গিয়ে রামগঞ্জ উপজেলায় সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘমেয়াদী জলাবদ্ধতা।
বীরেন্দ্র খালসহ সংযোগ খালগুলো নিয়মিত খনন না করা হলে দুর্যোগ কমবে না ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রামগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ খাল খননের কোনো উদ্যোগ নেই।
প্রয়োজনীয় খনন ও সংস্কার না হলে খাল আবারও ভরে যাবে ময়লা আবর্জনায়। খনন প্রক্রিয়া দ্রুত গতিশীল না করলে ২০২৪ সালের মতো ভয়াবহ বন্যা আবার দেখা দিতে পারে।
সচেতন মহলের দাবি, রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ বীরেন্দ্র খালসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি খাল দখলমুক্ত করে নিয়মিত খনন ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
কিন্তু এগুলো হচ্ছে কোথায়?
এবারো ফেনীর অবস্থা খুব ভয়াবহ। বাঁধ ভেঙেছে কিন্তু সংস্কার কতুটুকু?
ফেনীতে যদি ২৪ এর মতো বন্যা দেখা দেয় তাহলে মারাত্মক পরিস্থিতি হবে।
স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে যারা গাফলতি করছে তারা দেশবিরোধী। বন্যা আসলেই ব্যবসা জমজমাট হয় তাই বাঁধ নির্মাণে এত অনীহা।
সাধারণ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে ব্যবসা করা বন্ধ হয় না কেন?
এই ১১ মাসেও তো কোনো প্রস্তুতি দেখা গেলো না। অথচ ১১ বার বিদেশ ভ্রমণ করে নিলেন ইউনূস।
একটা সাধারণ বেড়িবাঁধও বাস্তবায়ন নেই। ফেনী আর এসব চায়না, এখন স্থায়ী প্রকল্প চায়।
অনেকে বলে সাধারণ জনগণ চায় ইউনুস সরকার পাঁচ বছর থাকুক। কিন্তু ইউনূস থাকলে দেশের উন্নতি কতটা হবে?
এগারো মাসে যে ম্যাজিক দেখালেন পাঁচ বছরে বাংলাদেশের নাম নিশানা থাকবে না।
দুঃখের বিষয় হচ্ছে সমস্যা এই যায়গায় যেখানে সারা দেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত নেই। নদী গুলো ড্রেজিং নেই। ফেনী,নোয়াখালী , কুমিল্লা এবং লক্ষীপুর মানুষের মরণফাঁদ মুসাপুর ক্লোজার বন্যায় ধ্বসে গেলে ও সংস্কারের ব্যবস্হা নেই।
দিন দিন মানুষের বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে।পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ চিরঘুমে।