ঢাকা: সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এ আপত্তি কর্মচারীদের।

মাঝে ঈদের ছুটির পর আবার আন্দোলনে ফিরেছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ বাতিল না হলে মঙ্গলবার সচিবালয়ের বাদামতলায় বড় জমায়েতের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য ফোরাম।

সোমবার জনপ্রশাসন ও মন্ত্রিপরিষদের নতুন ভবনের নিচে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা করেন ঐক্য ফোরামের নেতারা।

মো. নুরুল ইসলাম বলেন, সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আমরা মাঠে ময়দানে ঘুরছি।

এই কালো অধ্যাদেশ গোপনে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পাস করানো হয়েছে। আমরা এর সঙ্গে জড়িতদের ধিক্কার জানাই এবং এটি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। সরকার আমাদের সঙ্গে সাপলুডু খেলা খেলছে।

ঐক্য ফোরামের নেতা বলেন, কারো সঙ্গে কথা না বলে এই কালো অধ্যাদেশ তারা গোপনে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পাস করিয়ে আনল। এই কাজের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল আমরা তাদের ধিক্কার জানাই।

একইসঙ্গে ঘৃণাভরে এই সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ প্রত্যাখান করেছি। সরকারকে এই সাপলুডু খেলা বন্ধ করতে হবে।

তিনি বলেন, ঈদের আগে এই অধ্যাদেশ নিয়ে যখন সম্মেলন করেছিলাম তখন সরকার আবার বিশেষ প্রণোদনা ভাতা দিয়েছেন। সেটা আসলে ফাঁকিবাজি ভাতা।

এর মাধ্যমে সরকার আবার প্রতারণা করেছে আমাদের সঙ্গে।

একটা শেষ না হতেই আরেকটা শুরু করে দেয়, এজন্যই অনেকেই বলেছে এগুলো বিশেষ সুবিধা নয় বিশেষ প্রতারণা। আমরা এ বিশেষ প্রণোদনা মেনে নেব না।

ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বলেন, আমরা শুধু দেখতে চাই এ অধ্যাদেশ বাতিল হয়েছে।

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ কেনো আপত্তি জানাচ্ছেন কর্মচারীরা?

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে ইউনুসের অন্তবর্তীকালীন সরকার।

অধ্যাদেশ জারির আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ -এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়।

একে কালাকানুন বলা হচ্ছে।সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫, সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ বিধান। চারটি অপরাধের কথা বলা হয়েছে।

(১) এই আইন বা এই আইনের অধীন প্রণীত বিধিমালায় যা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী—

(ক) এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের (insubordination) শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে, অথবা

(খ) অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে, ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া, নিজের কর্ম থেকে অনুপস্থিত বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন,

(গ) অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন

(ঘ) যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন,তাহলে এটি হবে একটি অসদাচরণ এবং সে জন্য তিনি উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত যেকোনো দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

তবে এই অপরাধের মধ্যে কোথাও একবারের জন্যেও বলা হয়নি যারা ঘুষ, দুর্নীতি, করবে তারা এই অপরাধে অপরাধি।

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আইনের মাধ্যমে এভাবে কুক্ষিগত করে রাখাকে সমর্থন করছেন না তাঁরা।

এই অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত ক্ষান্ত হবেন না কর্মচারীরা।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *