ঢাকা: এক বাঙালি নক্ষত্রের আজ জন্মদিন। বাংলাদেশের মুক্তযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ-এর জন্মশতবার্ষিকী আজ।১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই যে শিশুটির জন্ম হয়েছিল, আজ তিনি শতবর্ষ পেরোলেন।
মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার পর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রথম ভাষণে তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন-
“বিদেশি বন্ধুরাষ্ট্রসমূহের কাছে যে অস্ত্র সাহায্য আমরা চাইছি তা আমরা চাইছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে—একটি স্বাধীন দেশের মানুষ আর একটি স্বাধীন দেশের মানুষের কাছে।
এই সাহায্য আমরা চাই শর্তহীনভাবে এবং আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রতি তাদের শুভেচ্ছা ও সহানুভূতির প্রতীক হিসেবে—হানাদারদের রুখে দাঁড়াবার এবং আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে, যে অধিকার মানবজাতির শাশ্বত অধিকার।
বহু বছরের সংগ্রাম, ত্যাগ ও তিতিক্ষার বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন বাংলাদেশের পত্তন করেছি। স্বাধীনতার জন্য যে মূল্য আমরা দিয়েছি, তা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের উপরাষ্ট্র হবার জন্য নয়।
পৃথিবীর বুকে স্বাধীন সার্বভৌম একটি শান্তিকামী দেশ হিসেবে রাষ্ট্র পরিবারগোষ্ঠীতে উপযুক্ত স্থান আমাদের প্রাপ্য। এ অধিকার বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্মগত অধিকার।”
উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাসের কথা এলে তাজউদ্দীন আহমদের নাম আসতেই হবে।
কোনো স্বজনপ্রীতি ছিলো না তাঁর।
আজ বাংলাদেশের জন্ম ইতিহাসের
কথা এলে বঙ্গবন্ধু যেমন অবধারিত, তেমনি তাজউদ্দীন আহমদ অনিবার্য।
পুরো ষাটের দশকজুড়ে আওয়ামী
লীগের যে রাজনৈতিক প্রস্তুতি তার
পুরোভাগের নির্বাহী মানুষটিকে,
পরিকল্পক মানুষটিকে আমরা ভুলি কী
করে?
অবশ্য আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে তাঁকে স্মরণ করার কথা না রাজাকার গোষ্ঠীর।
৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধটি পরিচালিত হয়েছে মূলত তাজউদ্দীনের নির্দেশনাতেই। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে তাজউদ্দীন ও ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম ভারতের যে হোটেলে ছিলেন, সেই রুমে বসেই লিখিত হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র।
যদিও দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে নানা কারণেই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয় (দূরত্ব সৃষ্টি করা হয়) এবং আমরা জানি পরবর্তী জীবনে তাজউদ্দীন কীভাবে একজন ট্র্যাজেডির নায়কে পরিণত হলেন।