ঢাকা: এটি কি কেবল একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত, না কি আওয়ামী লীগের আদর্শবান ব্যক্তিদের দমন করার গভীর ষড়যন্ত্র?

যে প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো একাডেমিক অভিযোগ নেই, নেই শিক্ষাগত ত্রুটি বা দুর্নীতির ছায়া। তবে কেন বরখাস্ত?
কার নির্দেশে? কোন অপশক্তির চাপে?

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

বলা হচ্ছে সাময়িকভাবে, তবে এটি যে স্থায়ী বরখাস্ত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানোকে কেন্দ্র করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অর্থাৎ শিক্ষিকা কেন বঙ্গবন্ধুর ছবি রাখবেন? এটিই তাঁর একমাত্র অপরাধ!

প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিন দাবি করেন, বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো কোনো অন্যায় নয়, বরং এটি তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ।

তিনি বলেন, “আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোকে আমি গর্বের বিষয় মনে করি।”

শামীমা ইয়াছমিনের স্বামী মো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, বরখাস্তের বিষয়ে তাদের সরাসরি কিছু জানানো হয়নি, শুধু একটি চিঠি অফিসে এসে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ বলেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, তদন্ত চলমান আছে এবং দোষী সাব্যস্ত হলে বিভাগীয় মামলাসহ স্থায়ীভাবে বহিষ্কারও হতে পারে।

এখানে দোষী কিসের?

‘বাংলাদেশ’ নামটা যার দেয়া, স্বাধীনতার সেই মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানোর অপরাধে প্রধান শিক্ষিকা বরখাস্ত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ আগস্ট শামীমা ইয়াছমিন বিদ্যালয়ের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোর পর উপজেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনার প্রতিবাদ হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে হিসেবে তিনি এই ছবি সরাতে পারবেন না।

পরবর্তীতে জনগণের চাপের মুখে তাকে ছবিটি নামিয়ে ফেলতে হয়।

এটাই ৫ আগস্টের পরবর্তী বাংলাদেশ।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *