ঢাকা: শত্রুদেশ পাকিস্তান প্রতিশোধ নিচ্ছে ১৯৭১ সালের পরাজয়ের। ঘৃণ্য পরাজয়ের ঘৃণ্য প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে বিভিন্নভাবে।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ভারত বাংলাদেশ সেনাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করায় এতো শক্তিশালী দেশ হয়েও বাংলাদেশের সাথে পেরে উঠেনি পাকিস্তান।

পাকিস্তান একটা এমন দেশ যাদের ক্ষোভ মেটে না। তারা হিন্দুদের শেষ করে দিতে চায়।

৭১ এ বাংলাদেশের এতো মানুষ হত্যা ও নির্যাতন করেও ক্ষোভ মেটেনি, এখন সেই জমিয়ে রাখা ক্ষোভে বাংলাদেশ, ভারতের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে পাকিস্তান ।

ভারত যদি বাংলাদেশকে সাহায্য না করতো বাংলাদেশকে পুরোদমে শেষ করে পাকিস্তানের গোলাম বানিয়ে রাখতো একটা অঙ্গ রাজ্য হিসেবে যেটা তারা এখনো চায়।

এবং বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণ এখন পাকিস্তানের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।

অথচ বাংলাদেশ জানেও না যে এরাও ডুবে যাচ্ছে অন্ধকারে।

তবে এই পরিমাণ মানুষ হত্যার পরও পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চায় নাই।

আজ পর্যন্ত পাকিস্তান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকারই করেনি। বরং গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেছেন,

”১৯৭১ সালে পাকিস্তান ভাঙার ষড়যন্ত্রের অপরাধে আজ ঢাকায় মানুষ শেখ মুজিবের প্রতি প্রতিশোধ নিচ্ছে, তার ভাস্কর্য ভাঙছে”।

এই পাকিস্তানের আই এস আই কাজে লাগাচ্ছে বিহারিদের খুব সূক্ষ্মভাবে। এবং তাদের কাজে লাগাতে পারছে। বিহারিদের আর্থসামাজিক অবস্থা, জীবনধারণের মান ভালো নয়।

পাকিস্তানে লোভ দেখিয়ে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে উৎসাহ দিচ্ছে ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।

২০২৪ সালের মাঝামাঝি থেকে, পাকিস্তানের আইএসআই বিহারি সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে তাদের মৌলবাদী, জঙ্গী তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে বলে জানা গেছে।

বিহারিরা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী। ফলে এই সফট জায়গাটায় তাদের ঘা দিতে খুব সুবিধা হয়েছে।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ কেবল পাকিস্তানের জন্য একটি বিপর্যয়ই ছিল না, বরং একটি বিরাট লজ্জাও ছিল। বাংলাদেশ যে একটি পরাজিত দেশ, তা পুরোপুরি বুঝতে পেরে, পাকিস্তান বাংলাদেশে ইসলামী উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

দেশে ভারত-বিরোধী এজেন্ডা পুনরায় সক্রিয় করার জন্য আইএসআই বেছে নেয় বিহারিদের।

গোয়েন্দা সূত্র এবং তদন্ত প্রতিবেদনগুলি ইঙ্গিত দেয় যে এই শিবিরগুলি মাদক ও অস্ত্র পাচার থেকে শুরু করে মানব পাচার পর্যন্ত অবৈধ কার্যকলাপের আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে।

উদ্বেগজনকভাবে, বিহারিরা এখন জিহাদি মতাদর্শ এবং ভারতবিরোধী জঙ্গিবাদের প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

বিহারিদের রীতিমতো প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে পাকিস্তানে।

আইএসআই-এর নির্দেশনায়, ২০২২ সালের গোড়ার দিকে নির্বাচিত বিহারীদের পাকিস্তানে পাঠানো হয়েছিল, যেখানে তারা গেরিলা যুদ্ধ এবং উগ্র ইসলামপন্থী মতবাদ প্রচারের প্রশিক্ষণ পায়।

তাদের ফিরে আসার পর, আইএসআই-সমর্থিত কর্মীরা খাদ্য এবং সাহায্য বিতরণ শুরু করে, নির্ভরতা এবং আনুগত্য তৈরি করে। বিহারীরা তাতে মজে যায়।

জিহাদকে আরো তরান্বিত করা হয়েছিল। এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে আরও গভীর করে তোলে।

২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে, ৫,০০০-এরও বেশি বিহারী তাদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে।

জুলাইয়ের শেষের দিকে, এই সংখ্যা প্রায় ৫০,০০০-এ পৌঁছায়। আগ্নেয়াস্ত্র, গ্রেনেড এবং বিস্ফোরক দিয়ে সজ্জিত এই সন্ত্রাসীরা থানায় সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে, জেল ভাঙে, অস্ত্রাগার লুট করে এবং হত্যাকাণ্ড চালায়।

৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে, অস্থিতিশীল অস্থিরতার মধ্যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।

আইএসআই মনে করেছে এটাই মোক্ষম সময়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আইএসআইয়ের হ্যান্ডলাররা প্রশিক্ষিত বিহারিদের নগদ অর্থ এবং অস্ত্র বিতরণ করে, যার ফলে সহিংসতার ঢেউ শুরু হয় দেশজুড়ে।

আওয়ামী লীগ সমর্থক, হিন্দু সংখ্যালঘু এবং মন্দিরগুলিকে টার্গেট করা হচ্ছে । দাঙ্গার পরিচয় আর নতুন করে দিতে হবে না।

এবং আশ্চর্যজনকভাবে, রাস্তায় প্রকাশ্যে আল-কায়েদা এবং আইসিসের উগ্র ইসলামপন্থী পতাকা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

হিযবুত-তাহরির এবং হেফাজতে ইসলামের মতো গোষ্ঠীগুলি সন্ত্রাসবাদ কার্যে যোগ দিয়েছিল।

শেখ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের উপর পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ আরও গভীর হওয়ার সাথে সাথে, আইএসআই তার কৌশলের পরবর্তী ধাপ শুরু করে।

ভারতের উপর চাপ।

প্রশিক্ষিত বিহারি অপারেটিভদের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ছোট ছোট দলে পাঠানো হয়েছিল।

ভারতে প্রবেশের পর, এই অবৈধরা ‘আধার কার্ড’ নেয়। তারপর সমাজে মিশে যায়, রাঁধুনি, নাপিত, গৃহকর্মী, নির্মাণ শ্রমিক এবং দিনমজুরের মতো কাজ করে।

তাছাড়া হিন্দি এবং উর্দুতে তাদের সাবলীলতার জন্য ভারতীয় নাগরিক হিসেবে চলাচল করা সহজ হয়ে যায়।

তবে, উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে যা অজানা তা হল এই ব্যক্তিদের অনেকেই প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী ছিল যাদের দেশকে ভেতর থেকে অস্থিতিশীল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল আইএসআই এর তরফ থেকে।

আরেকটি জৈবিক ধ্বংসের প্রক্রিয়া কাজে লাগানোর চেষ্টা করে আইএসআই। যা ভারতীয় হিন্দুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।

এই আইএসআই অভিযানের সবচেয়ে ভয়াবহ দিকগুলির মধ্যে একটি হল সংক্রামিত মহিলা কর্মীদের ব্যবহার।

অর্থাৎ, গোয়েন্দা সূত্র অনুসারে, আইএসআই-এর নির্দেশে বেশ কয়েকজন তরুণী বিহারি মহিলাকে ইচ্ছাকৃতভাবে এইচআইভিতে সংক্রামিত করা হয়েছিল।

আর এইডস কী ভয়াবহ মারণ রোগ, তা তো আর বলতে হয় না।

এই মহিলাদের, যাদের মোটা অঙ্কের অর্থ দেয়া হয়েছিল, ভারতে কাজ করার জন্য পাঠানো হয়েছিল, যেখানে তারা ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে পারে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে ধনী হিন্দু ব্যক্তিদের টার্গেট করতে পারে।

যাতে হিন্দুদের মধ্যে এইচআইভি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে এবং সারা দেশ আক্রান্ত হয়।

ভয়াবহ অবস্থার ইঙ্গিত করছে এটি।

তবে ভারত সরকার বাংলাদেশ এবং মায়ানমার থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের (প্রধানত রোহিঙ্গাদের) সনাক্ত এবং বিতাড়িত করার প্রচেষ্টা জোরদার করছে, বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রতিদিন অবৈধ বাংলাদেশী ধরা পড়ছে তবুও এই আইএসআই-প্রশিক্ষিত বিহারিদের দ্বারা সৃষ্ট হুমকিকে সেভাবে দেখা হচ্ছে না।

এই স্লিপার এজেন্টরা যেকোনো সময় ভারতীয় মাটিতে অত্যাধুনিক সন্ত্রাসী অভিযান চালাতেও সক্ষম।

বাংলাদেশের বিহারি সম্প্রদায়কে হিন্দু ও ভারতবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত করার জন্য আইএসআই যে কৌশল অবলম্বন করছে, তা কেবল ভারত বা বাংলাদেশের জন্যই জাতীয় হুমকি নয় – এটি বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তার কথাও উঠে আসছে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *